Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বিরাট আত্মবিশ্বাস আর ফিনিশার হার্দিকও প্রাপ্তি

প্রথম ম্যাচেই কোহালিরা টুর্নামেন্টের সেরা আবিষ্কারটা করে ফেলল হার্দিক পাণ্ড্যর মধ্যে। এমএস ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার দিকে এগোচ্ছে ছেলেটা। সেই জন্যই রবিবার ধোনির আগেই ওকে নামিয়ে দেওয়া হল বোধহয়।

ভয়ঙ্কর: শুরুতে দেখে খেলছিলেন। তার পরেই বিধ্বংসী কোহালি। করলেন ৬৮ বলে ৮১ অপরাজিত। ছবি: গেটি ইমেজেস।

ভয়ঙ্কর: শুরুতে দেখে খেলছিলেন। তার পরেই বিধ্বংসী কোহালি। করলেন ৬৮ বলে ৮১ অপরাজিত। ছবি: গেটি ইমেজেস।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান মানেই হাই-ভোল্টেজ লড়াই, হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ— বরাবরই এ রকম বলা হয়ে থাকে। কিন্তু রবিবার এজবাস্টনের মাঠে যা হল, তার সঙ্গে এর কোনও মিল খুঁজতে যাওয়া উচিত নয়। বরং মনে হচ্ছে এত একপেশে লড়াই আর বোধহয় হয় না। আর এটা গত কয়েক বছর ধরেই হয়ে আসছে।

প্রথম ওভারে মহম্মদ আমিরের বল যখন ঠিকমতো ব্যাটে বলে করতে পারছিল না রোহিত শর্মা, তখন অবশ্য মনে হয়নি এতটা একপেশে হতে চলেছে লড়াইটা। কিন্তু ব্যাপারটা চরমে উঠল শেষ চার ওভারে ভারত ৭২ রান তোলায়। কোথায় লড়াই? মনে হচ্ছিল যেন সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা কোনও দেশের বিরুদ্ধে নেমে ভারত তাদের ১২৪ রানে হারাল। ভারতের ৩১৯-এর জবাবে ডিএল পদ্ধতিতে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৪১ ওভারে ২৮৯।

এজবাস্টনের আবহাওয়ায় যদি দ্বিতীয় ওভারেই কোনও বাঁ-হাতি স্পিনারের হাতে বল তুলে দেওয়া হয়, সেটা বিস্ময়কর ছাড়া আর কী? স্লগ ওভারেও হার্দিক পাণ্ড্যর সামনে ফেলা হল স্পিনারকে! হাফিজরা বোধহয় কেউ আইপিএল দেখেনি। শেষে না হয় দুই পেসার চোট পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শুরুতে স্পিন কেন!

প্রথম ম্যাচেই কোহালিরা টুর্নামেন্টের সেরা আবিষ্কারটা করে ফেলল হার্দিক পাণ্ড্যর মধ্যে। এমএস ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার দিকে এগোচ্ছে ছেলেটা। সেই জন্যই রবিবার ধোনির আগেই ওকে নামিয়ে দেওয়া হল বোধহয়। সাতটা বল খেলেই বুঝিয়ে দিল ভারতীয় দলে ওর বাছাইটা একেবারে সঠিক। যেমন ব্যাটিংয়ে, তেমন বোলিংয়েও। ইদানীং ওর বলে গতি আরও বেড়েছে। আর গতি বাড়িয়েও স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে গেল সমানে। স্নায়ুর কী জোর ছেলেটার! সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এ রকমই অলরাউন্ডার দরকার।

আরও পড়ুন: সাত মাস পর প্রত্যাবর্তনেই বড় রান রোহিতের

ভারতীয় পেসারদের বলে যখন সুইং, মুভমেন্ট দু’টোই দেখা গেল, তখন পাক পেসাররা শুধু ইয়র্কার ও লেংথ বলই দিয়ে গেল। এমন নির্বিষ বোলিংয়ের যে দফারফা করবেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা, তা তো জানা কথাই। যুবরাজ সিংহ, যে গত কয়েক দিন ধরে ঠিকমতো নেট প্র্যাকটিসই করতে পারেনি, প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা তো দূরের কথা, সে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার জোরে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে গেল। ৮ রানে যুবরাজের ক্যাচ ফেলেই ম্যাচ হাতছাড়া করে ফেলে পাকিস্তান।

রোহিতের সন্দেহজনক রান আউটের পর বিরাট ক্রিজে নেমে শুরুর দিকে তেমন টাইমিং করতে পারছিল না। পছন্দের উইকেট এবং সাদামাটা বোলিং পেয়ে তখন চালিয়ে খেলছিল যুবরাজ। তাই প্রথমে ওকেই বেশিরভাগ স্ট্রাইক দিচ্ছিল বিরাট। ক্রিজে থেকে কয়েকটা পছন্দের শট নিয়ে ক্রমশ বিরাটের রানে ফিরে আসার প্রক্রিয়াটাই ছিল শেখার মতো। ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ম্যাচেই বিরাটের এ রকম একটা ইনিংস কিন্তু ওর আত্মবিশ্বাসটা অনেক বাড়িয়ে দেবে। যেটা পাকিস্তানকে হারানোর মতোই ভারতের আর একটা প্রাপ্তি।

রবীন্দ্র জাডেজার কথাও না বললে নয়। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অশ্বিন এবং জাডেজার মধ্যে পরের জনকেই এখন থেকে বেছে নেওয়া হবে মনে হচ্ছে। একে ও বাঁ-হাতি স্পিনার। রানটাকে বেঁধে রাখার পক্ষে আদর্শ। পাশাপাশি রয়েছে জাডেজার ফিল্ডিং এবং ব্যাটিংও। পাণ্ড্য আর জাডেজা এই দুই ঘোড়া নিয়েই এখন এগিয়ে যাবে ভারতের জয়রথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE