মোহালিতে কোহালি-ধোনি। ছবি: পিটিআই।
বিরাট কোহালির নিজেরও কি তাঁর ভক্তদের মতোই অবস্থা দাঁড়াল? ব্যাট হাতে ধরলেই (বিশেষ করে ওয়ান ডে-তে) কোহালির সেঞ্চুরি দেখতে দেখতে তাঁর অগণিত ভক্ত তো বটেই, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদেরও যেন প্রশংসার ভাষা হারিয়ে ফেলার জোগাড়! কোহালি নিজেও কি তাঁর সাফল্যের উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করতে করতে একঘেয়েমির শিকার এই মুহূর্তে? অন্তত রবিবারের মোহালিতে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে কোহালির কথাবার্তা সে রকমই! নিজের আনন্দ-টানন্দকে সরিয়ে রেখে প্রথমেই বলে উঠলেন, ‘‘রসের (রস টেলর) জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে!’’
আসলে এ দিন ক্রিজে আসতে না আসতেই কোহালির ক্যাচ ছাড়েন টেলর। যার নিটফল, ১৩৪ বলে ১৫৪ নট আউট। এর পরে কোহালি তো বলবেনই, ‘‘ওই ক্যাচ পড়ার ফায়দা তুলেই তো ম্যাচটা বার করতে পারলাম।’’ এর পর যেন কিউয়িদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতে কোহালি যোগ করেন, ‘‘যে ব্যাটসম্যানের ক্যাচ পড়ল, সে-ই যদি শেষমেশ ম্যাচ বার করে নিয়ে যায়, সেটা প্রতিপক্ষের কাছে দেখাটা সত্যিই খুব কঠিন। আমিও ওয়েলিংটনে এ রকমই ক্যাচ ফেলেছিলাম ব্রেন্ডনের (ম্যাকালাম)। তার পরে সেই ইনিংসে ও ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিল!’’
নিউজিল্যান্ডের ২৮৫ তাড়া করতে নেমে প্রথম দশ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট চলে যাওয়ার পর তৃতীয় উইকেটে কোহালি-ধোনির সেই ২৭ ওভারে ১৫১-র ঝলমলে পার্টনারশিপ। যেখানে চার নম্বরে উঠে এসে অনেক দিন পরে ধোনির ধোনিচিতো ৮০ রান। স্বভাবতই ভারতের সীমিত ওভারের ক্যাপ্টেনের প্রশংসা করছেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। ‘‘ধোনির ব্যাটিং অর্ডারে উপরে উঠে আসাটা দলের পক্ষে ভাল হচ্ছে। আমাদের দুই অভিজ্ঞের পার্টনারশিপটা আস্কিং রেট ভাল ভাবে তাড়া করতে পেরেছে। যার পরে আমাদের তরুণ ব্রিগেডের সামনে ম্যাচ শেষ করার কাজটা কিছুটা সহজ হয়ে যাচ্ছে,’’ বলেন কোহালি।
মোহালিতে ধোনির ইনিংস দেখছেন ‘ধোনি’। ছবি: টুইটার।
কোহালির কাছে প্রশ্ন উড়ে আসে, এ দিন তো ধোনিকে বেশি ওভার বাউন্ডারি মারতে দেখা গেল? আর আপনাকে ধরে খেলতে! কোহালির সাফ উত্তর, ‘‘এ রকম স্ট্র্যাটেজি আমরা ক্রিজে নিজেদের মধ্যে কথা বলেই নিয়েছিলাম। ধোনির পাওয়ার বেশি। ওর তো মিস হিটও ছয় হয়! তাই ও-ই স্পিনারদের বিগ হিটগুলো নিচ্ছিল। আর আমি ফিল্ডিংয়ের ফাঁকফোকর দেখে বাউন্ডারি মারছিলাম।’’
ধোনি আবার তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে শুরু করেন। কোহালি, এমনকী নিজেকেও বাদ রেখে একেবারে অপ্রত্যাশিত ভাবে সম্পূর্ণ অন্য এক সতীর্থের প্রশংসা দিয়ে! বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের আশ্চর্য প্যাকেজের নাম কেদার যাদব। মাঝের ওভারে ও সব সময় আমাদের উইকেট এনে দিচ্ছে। ঠিক যখন আপনার প্রতিপক্ষের ইনিংসকে বেঁধে রাখার দরকার পড়ে।’’ তার পরে ঢোকেন নিজের ইনিংস প্রসঙ্গে। ধোনি বলেন, ‘‘আমি অনেক দিন নীচের দিকে ব্যাট করেছি। আমার তো মনে হয় সংখ্যাটা ২০০ ইনিংস হবে। ফলে মাঝের ওভারে কী করে স্ট্রাইক রোটেট করতে হয়, সেটাই প্রায় ভুলতে বসেছিলাম! সে জন্যই ঠিক করেছি, এখন থেকে উপরে ব্যাট করব। অন্যরা ফিনিশ করুক।’’ সঙ্গে অবশ্য তিনি যোগ করছেন, ‘‘তবে তাতেও যে আমাকে বিগ শট খেলতে হবে, সেটা জানি। তাই ১৫-২০ পেরোতেই গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। অন্য দিকে বিরাটের থাকাটা আমাকে আরও সাহায্য করেছে। আমরা জানতাম বাউন্ডারি আসা যদি আটকেও যায়, আমাদের ক্ষমতা আছে খুব জোরে দৌড়ে এককে দুই, দুইকে তিন বানানোর। আর বিরাট হল সেই লোক যে ওর আন্তর্জাতিক ৈজীবনের প্রথম দিন থেকে ভারতকে জেতানোর জন্য নিজেকে উন্নত করেই চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy