Advertisement
E-Paper

রায়ুডুর বাদ পড়া কি ভুল সিদ্ধান্ত? পরিসংখ্যান কিন্তু অন্য কথা বলছে

রায়ুডুর বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আইসিসি। ক্রিকেটমহলেও জোর চর্চা। নির্বাচকরা কি সঠিক সিদ্ধান্ত নিলেন? পরিসংখ্যান কিন্তু অন্য কথা বলছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:০২
দেশের ক্রিকেটমহলে রায়ুডুর বাদ পড়া নিয়েই চর্চা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

দেশের ক্রিকেটমহলে রায়ুডুর বাদ পড়া নিয়েই চর্চা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

সময় বড় নিষ্ঠুর। ৩ ফেব্রুয়ারি ওয়েলিংটনে ১১৩ বলে ৯০ রানের ইনিংস খেলে অম্বাতি রায়ুডু নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পঞ্চম ওয়ানডে ম্যাচে জয় এনে দেন। সেই ইনিংসের পরে সবাই ধরেই নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের দলে জায়গা হচ্ছেই রায়ুডুর।

১৫ এপ্রিল। বিশ্বকাপের কক্ষপথ থেকে ছিটকে গেলেন রায়ুডু। নির্বাচকরা দল ঘোষণার পরে জানিয়ে দেন, চার নম্বর পজিশনের জন্য বিজয় শঙ্করকেই ভাবা হচ্ছে, রায়ুডুকে নয়। তিনি দল থেকে ছিটকে যেতেই ভারতের ক্রিকেটমহলের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি ক্রিকেট কেরিয়ারই শেষের পথে রায়ুডুর? ক্রিকেটবিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তিনটি ইনিংসে ব্যর্থতা রায়ুডুকে ছিটকে দিল দৌড় থেকে। অজিদের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তিন ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ২, ১৮ এবং ১৩ করার জেরে রায়ুডুর পিঠে পড়ে গেল ব্যর্থতার ছাপ।

অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। রীতিমতো ঢক্কানিনাদ করেই ভারতীয় ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটেছিল রায়ুডুর। ২০০২ সালে ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দল ইংল্যান্ডে সফরে গিয়েছিল। রায়ুডুর প্রথম সফর। টেস্টে ওপেনার হিসেবে তিনটি ইনিংস থেকে ২৯১ রান করেছিলেন। সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। সেই সফরেরই তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ১৬৯ বলে ১৭৭ রান করে ভারতকে তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন ৩০৪ রানের মগডালে। তিনি যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তখন ভারতীয় দল ৬ উইকেটে ১৩৭ রান করে রীতিমতো ধুঁকছিল। ভারতীয় ইনিংসকে নির্ভরতা দিয়েছিলেন তিনিই। রায়ুডুর সেই ইনিংস দেখে প্রশংসা করেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন রায়ুডু। সেমিফাইনালে শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারতের দৌড়। তার পরে অন্য খাতে বইতে থাকে রায়ুডুর ক্রিকেট জীবন। বিদ্রোহী ক্রিকেট লিগ আইসিএল-এ যোগ দেন তিনি। রঞ্জি ট্রফিতেও রাজ্য পরিবর্তন করে বরোদার হয়ে খেলেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের দলে নেই রায়ুডু, ভারতের দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আইসিসি-র

আরও পড়ুন: ধোনিকে ব্যান করা উচিত ছিল, তীব্র আক্রমণ সহবাগের

ভারতে এখন আইপিএলের জগঝম্প। গত বছর চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএলে ১৬টি ম্যাচ থেকে ৬০২ রান করেন রায়ুডু। সেই ইনিংসগুলোর জন্য নির্বাচকরা ইংল্যান্ড সফরে ডেকে নেন রায়ুডুকে। কিন্তু ইয়ো ইয়ো টেস্টে ব্যর্থতার জন্য শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন রায়ুডু। রোহিত শর্মা পর্যন্ত বলেছিলেন চার নম্বরের জন্য আদর্শ তিনিই। কিন্তু সবারই সব ভবিষ্যদ্বাণী ব্যর্থ হয়।

রায়ুডুর ব্যাটিং গড় ৪৭.০৬। ভারতের বিশ্বকাপ দল ঘোষণার পরে আইসিসি সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঁচ ভারতীয় ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় তুলে ধরে প্রশ্ন তুলেছে, রায়ুডুর কি দলে জায়গা পাওয়া উচিত ছিল? রায়ুডুর এই গড়কে বড় করে দেখানো হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবোয়ে, আফগানিস্তান ও হংকংয়ের বিরুদ্ধে ২৬টি ম্যাচ থেকে ১০২৮ রান সংগ্রহ করেন রায়ুডু। সে ক্ষেত্রে তাঁর গড় প্রায় ৬৮.৫৩। স্ট্রাইক রেট ৮৪.২৬। এই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিনটি শতরান ও ছ’টি পঞ্চাশের উপরে ইনিংস রয়েছে রায়ুডুর। কিন্তু মুদ্রার অন্য পিঠও রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো দলের বিরুদ্ধে রায়ুডুর পারফরম্যান্স পড়তির দিকে। এই সব প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ২৯টি ম্যাচ থেকে মাত্র ৬৬৬ রান করেন রায়ুডু। গড় অনেক কম ৩১.৭১। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটিও ম্যাচ খেলেননি তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ প্রমাণ করে দিয়েছে, সাড়ে তিনশোর উপরে রানও এখন আর নিরাপদ নয়। বিশ্বকাপে বড় রান তাড়া করতে হতেই পারে ভারতকে। আবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বড় রানের পাহাড় না গড়লে চাপে পড়ে যেতে পারে ভারত। চার নম্বর যে কোনও দলের মেরুদণ্ড। রায়ুডুর স্ট্রাইক রেটও বেশ কম। এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটা পজিশনের জন্য নির্বাচকরা কী ভাবে রায়ুডুকে ভাবতে পারেন? প্রশ্ন তুলছে ক্রিকেটমহলের একটা বড় অংশ।

Ambati Rayudu World Cup 2019 World Cup
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy