Advertisement
E-Paper

ইভেন্টের আগে মেয়েকে ফোনে আমরা টেনশনটা বুঝতে দিইনি

গোটা ভারত যখন রবিবার রাতে টিভির সামনে তাঁর মেয়ের ফাইনালে যাওয়ার যুদ্ধ দেখতে ব্যস্ত, তখন আগরতলার কর্মকার বাড়িতে গৃহকর্তা ‘‘ঘুম পাচ্ছে’’ বলে টিভি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রিওতে ভল্ট ইভেন্টে মেয়ের ফাইনালে ওঠা দেখাই হয়নি দীপা কর্মকারের বাবা দুলাল কর্মকারের!

বাপি রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১৪
আগরতলার বাড়িতে দীপার বাবা-মা। সোমবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

আগরতলার বাড়িতে দীপার বাবা-মা। সোমবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

গোটা ভারত যখন রবিবার রাতে টিভির সামনে তাঁর মেয়ের ফাইনালে যাওয়ার যুদ্ধ দেখতে ব্যস্ত, তখন আগরতলার কর্মকার বাড়িতে গৃহকর্তা ‘‘ঘুম পাচ্ছে’’ বলে টিভি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রিওতে ভল্ট ইভেন্টে মেয়ের ফাইনালে ওঠা দেখাই হয়নি দীপা কর্মকারের বাবা দুলাল কর্মকারের!

মেয়ের ফোনটা বাবা-মা ধরলেন সন্ধে নাগাদ। রিও থেকে দীপা জানতে চাইলেন, রবিবার তাঁর ফাইনালে ওঠা বাবা-মা দেখেছে কি না। দুলালবাবুর উত্তর, ‘‘পদক নিয়ে আসার চেষ্টা কর। ১৪ তারিখ ভল্ট ফাইনাল যখন হবে তখন এখানে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে। সে দিন পদক পেলে তার চেয়ে বড় কিছু হয় না।’’

মেয়ে ভল্ট ফাইনালে গিয়েছে, উজান অভয়নগরের বাসিন্দা দুলালবাবু তা জানেন সোমবার সকাল ছ’টায়। টিভি চ্যানেলের ফোনে। আজ, মঙ্গলবার দীপার ২৩তম জন্মদিন। তার আগের সকালে সুখবর পেয়ে প্রথমে আবেগে ভেসে যান সাইয়ের প্রাক্তন কোচ দুলাল। টিভি চ্যানেলের ফোন রেখেই তড়িঘড়ি স্ত্রী গৌরীদেবীকে খবরটা দেন। তার পর থেকে সোমবার সারা দিন গোটা দেশ থেকেই পরপর ফোন। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের ফোনও। বাড়িতে ভিড়। গোটা এলাকায় যেন অকাল দীপাবলী বা হোলি। হাসিমুখে সব সামলাচ্ছিলেন কর্মকার দম্পতি। সকাল থেকে খাওয়াদাওয়া হয়নি। দুলালবাবু অফিস গেলেন দুপুরবেলা।

তার আগে বলছিলেন রবিবার সারা দিনের টেনশনে ভরা অভিজ্ঞতা। ‘‘ইভেন্টের আগে যখন ফোন করল, তখন কথা বলতে গিয়ে টেনশনে আমাদের গলা কাঁপছিল। কিন্তু আমরা মেয়েকে সেটা বুঝতে দিইনি। মেয়েকে বলেছিলাম, কোচ যা শিখিয়েছেন ঠিক সেটাই ভল্ট ইভেন্টে করে দেখা। আর কিছুই মাথায় রাখতে হবে না।’’

চোখের কোণে আনন্দাশ্রু। দীপার বাবা বলে যাচ্ছেন, ‘‘এত দিন বাড়িতে বসে ভাবতাম আমার মেয়ে এক দিন অলিম্পিক্সে যাবে। এখন আশায় থাকব পদকের জন্য।’’ চোখের জল মুছে মুখে হাসি এনে সঙ্গে এটাও বলতে ভুললেন না, ‘‘আমার মেয়ে একটু জেদি। যেটা করবে বলে সেটা করে দেখায়।’’ দীপার মা গৌরীদেবী তখন বলছিলেন, ‘‘মঙ্গলবার দীপার জন্মদিন। আগরতলার সব মন্দিরে ওর জন্য পুজো দেব।’’ বলতে ভোলেননি কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর কথা। দীপার পরিবারের সাফ কথা, গত ষোলো বছর ধরে বিশ্বেশ্বরবাবুর কোচিংয়ে দীপা যে পরিশ্রম করেছেন, রিওতে তারই সুফল পেয়েছেন।

Dipa Karmakar Rio Olympics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy