দীর্ঘ একটা প্রতীক্ষা। কিন্তু তার শেষও সামনে। ট্রফি ক্যাবিনেটটা যে বেশ কয়েক বছর ধরে খাঁ খাঁ করছে সেটা আমাদের কারও অজানা নয়।
গত কয়েক দিনে একটা প্রশ্ন বার বার শুনতে হয়েছে— আই লিগের প্রথম পর্বে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ৪-১ জয় আমাদের মানসিক ভাবে কোনও সুবিধা দিচ্ছে কি না প্রশ্নটা আমার কাছে ভিত্তিহীন। আমার ফুটবলে অতীত সব সময়ই মূল্যহীন। এখানে গুরুত্ব পায় বর্তমান। বা আরও ভাল করে বললে, ম্যাচের দিন কারা মাঠে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটা দিতে পারছে। আরও একটা কথা মনে রাখা দরকার, বেঙ্গালুরুকে হারিয়েছিলাম নিজেদের ঘরের মাঠে। এ বার ম্যাচ ওদের মাঠে। তা-ও কাপ ফাইনালের মতো আবহে।
ম্যাচটা আমাদের কাছে কঠিন, কারণ বিপক্ষ খেলতে নামবে হোম অ্যাডভান্টেজ নিয়ে। হিরো আই লিগ টেবলে বেঙ্গালুরু যেখানেই থাকুক না কেন, জেতার জন্য ওরা মরিয়া ভাবে ঝাঁপাবেই। আমরাও ড্রয়ের খেলা খেলব না। মাঠে নেমে আমাদের এক দিকে যেমন সতর্ক থাকতে হবে, তেমনই সামান্যতম সুযোগও ছাড়া চলবে না। বুঝতে পারছেন তো, শেষ ম্যাচটার জন্য কী কঠোর মনঃসংযোগ করতে হচ্ছে!
বেঙ্গালুরু ভারতের অন্যতম সেরা টিম। ওদের তিন বিভাগেই যে দক্ষ প্লেয়ার আছে, এ বারের ফেডারেশন কাপেই দেখেছি। ওদের কোচও এক জন বিশেষজ্ঞ। তাই জানি, ওদের কাছ থেকে কঠিন লড়াই পাব।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের ভরসা, অনুপ্রেরণা, সব আমাদের সমর্থকরা। ওঁরা স্পেশ্যাল, ওঁরাই আমাদের ভাল খেলার মোটিভেশন। ওঁদের দুঃখটা বুঝি কারণ আমরাও সেই দুঃখের অংশীদার। লিগ জেতার সেরা সুযোগ আমাদের সামনে, যে লিগ না জেতার কোনও কারণ নেই। গোটা মরসুম আমরা যে ব্র্যান্ডের ফুটবল খেলেছি, তা সত্ত্বেও ট্রফি জেতা এখনও বাকি।
শুনছি কলকাতার মোহনবাগান সমর্থকদের অনেকেই বেঙ্গালুরুতে আমাদের জন্য গলা ফাটাতে হাজির থাকবেন। এর সঙ্গে জুড়বে বেঙ্গালুরুর বাগান সমর্থকরা। এটা অবশ্যই আমাদের একটা অ্যাডভান্টেজ।
এ ধরনের ম্যাচে একশো শতাংশ না দিতে পারলে জেতা যায় না। আর আমরা শেষ ম্যাচটার জন্য নিজেদের দুশো শতাংশ দেওয়ার জন্য তৈরি। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যাশার চাপ থাকবে। রয়েছেও। তবে সেই চাপ সরিয়ে মহা-ম্যাচের আগে নিজেদের মোটিভেটেড এবং ফোকাসড রাখছি। কোচের স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছি।
মোহনবাগান ওয়ান-ম্যান টিম নয়। ভারতীয় ও বিদেশি মিলিয়ে দলের একতা চমৎকার। ভারতীয়দের মধ্যে জেজে, প্রীতম, বলবন্তের খেলা আমার নজর কেড়েছে। আমাদের টিম একটা পরিবারের মতো। সেটাও আমাদের অন্যতম বড় শক্তি।
বাগানের অত্যুৎসাহী ফ্যান ক্লাব ইতিমধ্যেই ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা টি-শার্ট অর্ডার দিয়ে বসে আছে। তবে আমি এত আগে কিছু বলতে চাই না। শেষ পর্যন্ত আমাদের ভাগ্যে কী হবে, তা ঠিক করবেন সর্বশক্তিমান। আমাদের স্বপ্ন সফল হতে গেলে তাঁর আশিস যে সবার উপরে থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy