Advertisement
E-Paper

গোল করবে কে, উদ্বেগ লাল-হলুদ শিবিরে

কাশিম আইদারার কাছে আবেদন, সবুজ-মেরুনের আর এক বিদেশি হেনরি কিসেক্কাকে খেলতে না দেওয়ার। এমনকি, মোহনবাগান ছেড়ে এই মরসুমে লাল-হলুদে সই করা কিংশুক দেবনাথ, মেহতাব সিংহকে ঘিরেও একই অনুরোধ জানালেন সমর্থকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৭
পরামর্শ: অনুশীলনে কাশিমের সঙ্গে আকোস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

পরামর্শ: অনুশীলনে কাশিমের সঙ্গে আকোস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

শনিবার সকালে যুবভারতীতে অনুশীলন শেষ করে জনি আকোস্টা মাঠ ছেড়ে বেরোতেই ঘিরে ধরলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা। শুরু হয়ে গেল রবিবাসরীয় ডার্বিতে মোহনবাগান স্ট্রাইকার দিপান্দা ডিকাকে আটকানোর আর্তি।

কাশিম আইদারার কাছে আবেদন, সবুজ-মেরুনের আর এক বিদেশি হেনরি কিসেক্কাকে খেলতে না দেওয়ার। এমনকি, মোহনবাগান ছেড়ে এই মরসুমে লাল-হলুদে সই করা কিংশুক দেবনাথ, মেহতাব সিংহকে ঘিরেও একই অনুরোধ জানালেন সমর্থকেরা। অথচ প্রধান স্ট্রাইকার জবি জাস্টিনকে নিয়ে কোনও উচ্ছ্বাস নেই! ধুন্ধুমার ডার্বির আবহে ব্যতিক্রমী দৃশ্য।

আই এম বিজয়ন, ভাইচুং ভুটিয়া থেকে চিমা ওকোরি, শিশির ঘোষ— ডার্বির আগের দিন অনুশীলনের পরে ক্লাব ছেড়ে বেরোচ্ছেন, অথচ ভক্তেরা তাঁদের ঘিরে ধরেননি, এটা যেন কল্পনারও অতীত। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে হাসতে হাসতে বিজয়ন বলছিলেন, ‘‘ডার্বির আগের দিন সমর্থকেরাও যেন তেতে থাকতেন। বলতেন, যে ভাবে হোক গোল করতেই হবে। আর ছিল টিকিটের আবদার। ওদের ভয়ে তো ক্লাব তাঁবুতে লুকিয়ে থাকতাম।’’ শিশির অবশ্য সমর্থকদের এই উন্মাদনা থেকেই প্রেরণা পেতেন। বললেন, ‘‘একদল সমর্থক যখন ঘিরে ধরে বলতেন গোল করতেই হবে, তখন ভাল খেলার তাগিদ আরও বেড়ে যেত। তাই আমি কখনও ক্লাব তাঁবুতে লুকিয়ে থাকিনি। ওঁদের মধ্য দিয়েই ক্লাব ছেড়েছি সব সময়।’’

যুবভারতীতে সতীর্থদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল তারকা মহম্মদ আল আমনা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

কলকাতা ফুটবলের ছবিটা কি তা হলে বদলে যাচ্ছে? দুই প্রধানের দুই প্রাক্তন তারকা বিজয়ন ও শিশিরের মতে, ‘‘সমর্থকদের আবেগ একই রকম আছে। এ বার যে হেতু ইস্টবেঙ্গলে কোনও বিদেশি স্ট্রাইকার নেই, তাই আকোস্তো, কাশিমরাই সমর্থকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে।’’ বিজয়ন যদিও মনে করেন, ডার্বিতে গোল করবেন তাঁর রাজ্য কেরলের স্ট্রাইকার জবিই।

লাল-হলুদ সমর্থকেরা অবশ্য খুব একটা আশাবাদী নন জবিকে নিয়ে। কেউ কেউ তো বলেই ফেললেন, ‘‘মোহনবাগানের আক্রমণ ভাগে ডিকা ও হেনরির মতো দুর্দান্ত ফুটবলার রয়েছে। অথচ, আমাদের গোল করার কেউ নেই। বুঝতে পারলাম না, ক্লাব কর্তারা কেন এত দিনেও এক জন স্ট্রাইকারকে সই করালেন না। মেক্সিকোর এক স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুইদে সই করেছেন। কিন্তু তিনি আসবেন ডার্বির পরে। কী লাভ হল ওঁকে নিয়ে?’’ যোগ করেন, ‘‘শেষ ছ’টা ডার্বিতে আমরা জিততে পারিনি। এ বারও মনে হচ্ছে মাথা নিচু করেই যুবভারতী থেকে ফিরতে হবে।’’ ক্ষুব্ধ সমর্থকদের প্রশ্ন, ইস্টবেঙ্গলে এখন আর আর্থিক সঙ্কট নেই। তা হলে কেন বিদেশি স্ট্রাইকার নেওয়া হল না? লাল-হলুদের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের নতুন কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়াকেই বিদেশি স্ট্রাইকার নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলকাতার ফুটবল সম্পর্কে ধারণা নেই বলে ওঁর কাছে হয়তো ঘরোয়া লিগের গুরুত্ব কম। আই লিগই ভাবনায় রয়েছে। তাই বিদেশি স্ট্রাইকার ছাড়াই ডার্বি খেলতে হচ্ছে।’’ আজ, রবিবারই কলকাতায় চলে আসছেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ। যুবভারতীতে ডার্বি দেখতেও যাওয়ার কথা তাঁর।

এই পরিস্থিতিতে যে রক্ষণই ভরসা, তা শনিবার সকালে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিকের অনুশীলন থেকেই স্পষ্ট। ম্যাচ প্র্যাক্টিস শেষ হওয়ার পরে দুই সহকারী রঞ্জন চৌধুরী ও বাস্তব রায়কে দায়িত্ব দিলেন ডিফেন্ডার নিয়ে আলাদা অনুশীলন করানোর। দেখা গেল, দুই প্রান্ত থেকে উড়ে আসা বল হেড করে বিপন্মুক্ত করছেন আকোস্তা ও মেহতাব। অঙ্কটা পরিষ্কার, পেনাল্টি বক্সের মধ্যে কোনও মতেই যাতে বল না পান ডিকা, হেনরিরা।

অনুশীলন শেষ করে সুভাষ খোলাখুলি বলেই দিলেন, ‘‘আক্রমণভাগই মোহনবাগানের শক্তি। তা ছাড়া ওদের মাঝমাঠ খুব ভাল।’’ কিন্তু লাল-হলুদ জার্সি গায়ে তো মাঠে নামবেন কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার। রাশিয়ায় কয়েক মাস আগেই যিনি খেলেছেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর মতো মহাতারকার বিরুদ্ধে। সতর্ক লাল-হলুদ টিডি বললেন, ‘‘আকোস্তো-ই হয়তো প্রধান সমস্যা হতে পারে।’’ কেন? আসিয়ান কাপ জয়ী কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রথম ম্যাচ খেলবে জনি। ডার্বির আগে একটা ম্যাচ খেলে নিতে পারলে ভাল হত।’’ তা হলে ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল টিডি? সুভাষের হুঙ্কার, ‘‘ডার্বিতে আমরা ছ’টা ম্যাচ হেরে রয়েছি। এ বার সেই ছবিটা বদলাতে হবে। কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।’’

Football East Bangal Mohun Bagan Kolkata Derby ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy