লুই গার্সিয়ার ফর্ম কেমন? সঞ্জু প্রধান-কেভিন লোবোদের কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে? অর্ণব-কিংশুকদের দুর্বলতা কোথায়?
পিটার রিডের নোটবুকে উঠে গেছে সবই। টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার আনেলকা এলেও এফএ-র ব্যান থাকায় খেলতে পারছেন না। আর এক তারকা ফ্রেডরিক লিউনবার্গও হাফ ফিট। তা সত্ত্বেও বিমানবন্দরে পা রেখেই মুম্বই সিটির কোচ বলে দিলেন, “কলকাতা দল সম্পর্কে আমি সব তথ্যই নিয়ে এসেছি। আমার সহকারী স্টিভ ডার্বি সাহায্য করেছে। ও তো ভারতে আগে কোচিং করিয়েছে। আমার ছেলেরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।”
রহিম নবিদের প্রথম ম্যাচই অ্যাওয়ে। তাও আটলেটিকো দে কলকাতার বিরুদ্ধে। কতটা চাপে থাকবে মুম্বই সিটি? পিটার রিডের সোজাসাপটা জবাব, “অ্যাওয়ে ম্যাচ নিয়ে কোনও সমস্যাই নেই। ”
আই এস এলের উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে আসা মুম্বইয়ের দলটির কথাবার্তা, বডি ল্যাঙ্গোয়েজসব কিছুর মধ্যেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ। কোচ থেকে ফুটবলার, প্রত্যেকেই যেন তেতে রয়েছেন। ১২ অক্টোবর যুবভারতীর পুরো সমর্থনই পাবেন লুই গার্সিয়ারা। তবু এই সব নিয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই মুম্বইয়ের। কারণ দলে এমন কয়েক জন আছেন যাঁরা এই আবহে অভ্যস্ত। সে জন্যই দলের অধিনায়ক রহিম নবি বললেন, “সব দলই তো ঘরের মাঠে খেলার সুবিধে পাবে। তাতে কী হয়েছে? প্রত্যেকেই পেশাদার। তাই আমরা সে রকম মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামব। প্রথম ম্যাচ থেকেই জয় পেতে চাই।”
লুই গার্সিয়ার মতো ফুটবলারের জন্য আলাদা কোনও ভাবনা রয়েছে রিডের? চাঁচাছোলা ব্রিটিশ কোচকে যেন কোনও কিছুতেই দমানো যায় না। “শুধু লুই গার্সিয়াকে নিয়ে আমাকে যদি ভাবতে বসতে হয়, তা হলে তো মুশকিল। শুধু ওকে নিয়ে ভাবব কেন? তা ছাড়া ওরাও তো আমাদের সব ফুটবলারকে নিয়ে ভাববে,” কিন্তু আনেলকার না থাকাটা বড় ক্ষতি নয় কি? দীপক-লালরিন্দিকাদের কোচ বলে দিলেন, “মনে হয় না। আনেলকার জায়গায় খেলার মতো ফুটবলার আমার টিমে আছে। দেখে নেবেন।”
মুম্বইয়ে কুপারেজের মাঠও কৃত্রিম ঘাসের। এত দিন ওখানেই অনুশীলন করেছেন লিউনবার্গরা। সে জন্যই রিড মনে করছেন যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসের মাঠে কোনও সমস্যা হবে না। কলকাতায় আসার আগে নবি, দীপকদের কাছ থেকে কলকাতার ফুটবল উন্মাদনার গল্প শুনেছেন দলের বিদেশি ফুটবলাররা। লিউনবার্গ তো আবার ২০১২-র ৯ ডিসেম্বরের সেই কলঙ্কিত ডার্বির গল্পও শুনে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। এমনকী ইটের আঘাতে নবির আহত হওয়ার ঘটনার কথাও জানেন তিনি। সব মিলিয়ে আর্সেনালে খেলা সুইডিশ তারকা কলকাতার ফুটবল নিয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। খেলতে চান রবিবারের ম্যাচে। লিউনবার্গের কলকাতা ফুটবল নিয়ে আগ্রহের কথা শোনা গেল নবির মুখে, “কলকাতার ফুটবল নিয়ে ওদের প্রচুর আগ্রহ। লিউনবার্গ তো আমার মাথায় চোট পাওয়ার গল্প শুনে বেশ অবাকই হয়েছিল।”
দলের মার্কি ফুটবলার আনেলকা অবশ্য একটু শান্ত প্রকৃতির। কম কথা বলেন। এ দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেননি। ক্লাব কর্তাদের নির্দেশে। তাঁকে দেখে মনে হল, একটু মনমরা হয়ে রয়েছেন। হয়তো উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে পারবেন না বলেই।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্লোজড ডোর অনুশীলন করবেন নবি-দীপকরা। সংবাদ মাধ্যমের জন্য বরাদ্দ প্রথম তিরিশ মিনিট। কলকাতায় এসে আটলেটিকো কোচ হাবাসের রাস্তায় কিন্তু হাঁটতে শুরু করলেন পিটার রিডও। বোঝাই যায়, অঙ্ক করে শহরে এলেও শঙ্কা রয়েই গিয়েছে মুম্বই কোচের।