Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রুপো পেয়েও হতাশ নন মঞ্জু

চারমূর্তি: বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জয়ী চার ভারতীয় বক্সার । (বাঁ দিক থেকে) যমুনা, মঞ্জু (রুপো), মেরি কম এবং লভলিনা।  নিজস্ব চিত্র

চারমূর্তি: বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জয়ী চার ভারতীয় বক্সার । (বাঁ দিক থেকে) যমুনা, মঞ্জু (রুপো), মেরি কম এবং লভলিনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

অবিশ্বাস্য এক স্বপ্নকে সত্যি করার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। জীবনের প্রথম বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে নেমেই সোনা জয়। কিন্তু ফাইনালে এসে থেমে যেতে হল ভারতীয় তরুণীকে। রবিবার মেয়েদের লাইট ফ্লাইওয়েট (৪৮ কেজি) বিভাগের ফাইনালে মঞ্জু রানি ১-৪ ফলে হেরে গেলেন দ্বিতীয় বাছাই, রাশিয়ার একাতেরিনা পালতসেভার কাছে। ফলে এ বারের মতো রুপো পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাঁকে।

আগামী শনিবার কুড়ি বছরে পা দেবেন মঞ্জু। ফাইনালে রুপো পাওয়ার পরে সংবাদসংস্থাকে রাশিয়া থেকে ফোনে মঞ্জু বলেছেন, ‘‘জন্মদিনের আগাম উপহার পেলাম। শনিবার কুড়ি বছর হচ্ছে আমার।’’

রোহতকের অখ্যাত এক গ্রাম, রিথালে বেড়ে ওঠা মঞ্জুর। ২০১০ সালে বাবাকে হারিয়েছিলেন। মঞ্জু বলছিলেন, ‘‘আমি প্রথমে কবাডি খেলতাম। কিন্তু ওখানে চ্যাম্পিয়ন হলেও ট্রফি দলের সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হত। তাই বক্সিং আমাকে আকৃষ্ট করে। জানতাম, এখানে ভাল কিছু করতে পারলে পুরো কৃতিত্বটাই আমার হবে। পদক, সম্মান, যা কিছু অর্জন করব, কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে না।’’

মেয়েদের বিশ্ব বক্সিংয়ে ভারতীয়দের মধ্যে ফাইনালে উঠেছিলেন একমাত্র মঞ্জু। মেরি কম (৫১ কেজি), যমুনা বোড়ো (৫৪ কেজি) এবং লভলিনা বর্গোহাইঁ, (৬৯ কেজি), তিন জনই ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। ফাইনালে মঞ্জু এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে বিশেষ ফারাক ছিল না। প্রথম রাউন্ডে দু’জনেই আগ্রাসী ছিলেন। কিন্তু রুশ প্রতিদ্বন্দ্বীর লেফট হুক কিছুটা সমস্যায় ফেলে দেয় মঞ্জুকে। দ্বিতীয় রাউন্ডে অবশ্য ভারতীয় বক্সার ফিরে আসেন বেশ কয়েকটা নিখুঁত ঘুসি মেরে। তৃতীয় রাউন্ডে দুই বক্সারই সতর্ক ছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিচারকদের রায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যান একাতেরিনা। যদিও এই রায়ে খুব খুশি দেখায়নি ভারতীয় দলকে।

চলতি বছরেই জাতীয় শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে চমকপ্রদ উত্থান হয়েছে মঞ্জুর। নিজের এই সাফল্যের জন্য মাকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন এই বক্সার। বলেছেন, ‘‘মা সব সময় আমার পাশে ছিলেন। আমি বক্সিংকে বেছে নেওয়ার পরে সব রকম সাহায্য পেয়েছি মায়ের কাছ থেকে।’’ বিজেন্দ্র সিংহ এবং মেরি কম যে তাঁর আদর্শ, সেটা আগেও বলেছিলেন মঞ্জু। ফাইনালের পরে আবার সে প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘‘বিজেন্দ্র ভাইয়া এবং মেরি দিদি অনেকের কাছে প্রেরণা। আমিও সেই দলে পড়ি। ওরা কোন উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা দেখার পরে পরিশ্রম করার ইচ্ছে আরও বেড়ে যায়।’’

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অবশ্য তাঁর আদর্শ মেরি কমকে এক ধাপ পিছনে ফেলে দিয়েছেন মঞ্জু। হরিয়ানার এই তরুণী মনে করেন, তাঁর বক্সার হয়ে ওঠার পিছনে কাকা সাহাব সিংহেরও প্রচুর অবদান রয়েছে। মঞ্জুর মন্তব্য, ‘‘মজার ব্যাপার হল, আমার কাকা বক্সিংয়ের ব্যাপারে সে রকম কিছু জানত না। আমাকে শেখানোর জন্য কাকা নিজে অনেক কিছু শিখেছে। তার পর এসে আমাকে শিখিয়েছে।’’

কয়েক মাস আগে ইউরোপের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় রুপো জেতার পরে আসে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনের সেরা সম্মান। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো। মঞ্জু অবশ্য এখানেই থেমে যেতে চান না। তাঁর লক্ষ্য আরও দূরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women's World Boxing Championship Boxing Manju Rani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE