মধ্যমণি: বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে ব্রাজিল। টটেনহ্যামের শিবিরে নেমার। ছবি: এপি ।
রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর দিন সাতেক আগে তিতের ব্রাজিল নিয়ে নিজের হতাশা স্পষ্ট করে ফেললেন ফুটবল সম্রাট পেলে।
হলই বা পাঁচ বারের বিশ্বকাপজয়ী। রাশিয়াতে নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোসদের খেতাবের অন্যতম দাবিদার বলা হলেও পেলে কিন্তু মনে করছেন, এখনই দারুণ আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।
তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরে ব্রাজিল ২০ ম্যাচে নেমে মাত্র একবার হেরেছে। তা হলেও বিশ্বকাপ শুরুর মুখে তাঁকে ভোগাচ্ছে, ফুটবলারদের চোট। ফলে প্রস্তুতি ম্যাচেই চূড়ান্ত এগারো বাছতে তিনি রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।
ব্যাপার-স্যাপার দেখে চুপচাপ থাকতে পারেননি পেলে। সাও পাওলোয় বসে তিনি বলেছেন, ‘‘তিতের ক্ষমতা আর যোগ্যতার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমার উদ্বেগ একটা জায়গাতেই। বিশ্বকাপ শুরুর আগে হাতে মাত্র কয়েকটা দিন রয়েছে। কিন্তু এখনও সেরা দলটাই তৈরি করা যাচ্ছে না। ব্যক্তিগত ভাবে বলতেই হবে যে আমাদের দলের প্রত্যেকেই দারুণ ফুটবলার। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, আমরা এখনও একটা দল হয়ে উঠতে পারিনি।’’
পেলের কথার সূত্র ধরে বলা যায়, দল হিসেবে ব্রাজিলের এখনও দারুণ জায়গায় পৌঁছতে না পারার একটা কারণ, নেমারের চোট। হাঁটুর সমস্যার জন্য বাদ দিতে হয়েছে দানি আলভেসকে। ব্রাজিলের ২-০ জেতা ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে শিরায় টান ধরে রেনাতো অগাস্তো এবং ডগলাস কোস্তার। নেমার অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে নেমেছিলেন ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে। দুরন্ত একটা গোলও করেন। তবু কিছুটা হলেও প্যারিস সাঁ জারমাঁর ব্রাজিলীয় মহাতারকা ফুটবলারই আশান্বিত করেছেন পেলেকে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার চোখে নেমার এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। এখন ও অনেক বেশি পরিণত। অভিজ্ঞতাও বেড়েছে। ওর উপর ভরসা রাখাই যায়।’’ নেমার নিয়ে এমন উচ্ছ্বাসের পরেও তিনি বলে ফেলেন, ‘‘একা নেমারের কিন্তু ক্ষমতা নেই ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার। তাঁর কথা, ‘‘নেমারের একার ক্ষমতা নেই ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার। সেটা সম্ভবও নয়। বিশ্বকাপ জেতে একটা দল। কোনও ব্যক্তি নয়।’’
কেন তিতের ব্রাজিল একটা দল হয়ে উঠতে পারেনি সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘মনে রাখবেন আমাদের সর্বকালের সেরা দল সত্তরের ব্রাজিল। টোস্টাও, রিভেলিনো, গার্সন, আমি— আমরা সবাই কিন্তু যে যার ক্লাবে আলাদা আলাদা দশ নম্বর জার্সি পরতাম। তবু আমরা দল হিসেবে অত ভাল হয়ে উঠতে পেরেছিলাম, কারণ বিশ্বকাপ শুরুর আগে ছ’মাস সবাই একসঙ্গে অনুশীলন করেছিলাম। সে বার কিন্তু এই একটা কারণেই আমরা সফল হয়েছিলাম।’’
বোঝাই যাচ্ছে, পেলে বোঝাতে চান, বিভিন্ন ক্লাব থেকে এসে সামান্য ক’দিন একসঙ্গে অনুশীলন করে বিশ্বকাপের মতো ম়ঞ্চে সফল হওয়া খুবই কঠিন। যদিও আধুনিক সময়ে, ক্লাব ফুটবলের রমরমার দিনে, নেমাররা ছ’মাস টানা জাতীয় শিবির করবেন ভাবনাটাও অলীক। তাই পেলের কথা নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। এমনিতে ব্রাজিল অবশ্য বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করার পরে এ বছর মাত্র তিনটি ফ্রেন্ডলি খেলেছে। রাশিয়া রওনা হওয়ার আগে রবিবার তাদের শেষ ম্যাচ অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ভিয়েনায়। আর বিশ্বকাপে নেমারদের প্রথম খেলা ১৭ জুন। প্রতিপক্ষ সুইৎজারল্যান্ড। ব্রাজিলের গ্রুপে অন্য দু’টি দেশ যথাক্রমে কোস্তা রিকা ও সার্বিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy