কাঠগড়ায়: দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়। দেশে ফিরতেই এ ভাবে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরলেন জার্মানির কোচ ওয়াকিম লো-কে। বৃহস্পতিবার। ছবি: গেটি ইমেজেস
আট দশকে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে প্রথম বার লজ্জাজনক ভাবে বিদায় নেওয়ার পরে জার্মান দলে বড় পরিবর্তন চাই। স্বীকার করে নিচ্ছেন কোচ ওয়াকিম লো।
‘‘জার্মান দল যে জন্য ফুটবল বিশ্বে পরিচিত, সেই খেলাটা আমরা দেখাতে পারিনি,’’ জার্মান দল বৃহস্পতিবার ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে বলেন তিনি। দলের ব্যর্থতার দায় নিয়ে আরও বলেছেন, ‘‘কোচ হিসেবে সব দায় আমার। নিজেকেই প্রশ্ন করতে হবে, কেন আমরা সফল হলাম না বিশ্বকাপে? তার জন্য কিছুটা সময় চাই আমাদের। নিশ্চয়ই আমরা এই নিয়ে আলোচনায় বসব।’’
জার্মান কোচের কথাতেই পরিষ্কার, তিনি বড়সড় পরিবর্তন চান দলে। ‘‘এ ভাবে ছিটকে যাওয়ার পরে, এ রকম হতশ্রী পারফরম্যান্সের পরে আমাদের ভাবতে হবে এখন সমাধানের পথ কী? তার জন্য কী কী করতে হবে? সে জন্য আলোচনা প্রয়োজন,’’ বলেছেন লো।
এক যুগ ধরে জার্মান দলে সোনার সময় কাটিয়েছেন লো। ২০১৪ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করেছেন দলকে। এত সাফল্যের পরেও যে বিশ্বসেরা দলকে এ রকম একটা পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে, ভাবতে পারেননি তিনি। ঘরে-বাইরে তাঁকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তিনি জার্মান দলে এমন ফুটবলারদের উপরে ভরসা রেখেছিলেন, যাঁদের সেরা সময় চলে গিয়েছে।
জার্মান মিডিয়ায় লো-কে সরানোর দাবিও উঠেছে। বলা হয়েছে, লো-কে সরালেই জার্মানি নতুন ভাবে সব শুরু করতে পারবে। জার্মান ফুটবল সংস্থার প্রধান রেইনহার্ড গ্রিন্ডল বলেছেন, কেন এই বিপর্যয় হল তাঁর রিপোর্ট খুব শিগগিরিই পেশ করা হবে। তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘রিপোর্ট পেশ হওয়ার পরে আশা করছি কোচও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাবেন।’’ বিশ্বকাপের ঠিক আগেই কোচ হিসেবে লো-র চুক্তি ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গ্রিন্ডল আরও জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপে যাই হোক না কেন লো-র কোচের পদ সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি জার্মান অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যারও স্বীকার করে নিলেন, বিশ্বকাপে দলগত ভাবে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘অবশ্যই এ ভাবে ছিটকে যাওয়াটা প্রচণ্ড হতাশাজনক। আমাদের সামনে সুযোগ ছিল। কিন্তু তার সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। কোনও ম্যাচেই আমরা ভাল খেলতে পারিনি। এই ফলটাই প্রত্যাশিত ছিল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘জার্মান দল যে রকম ফুটবল খেলার জন্য পরিচিত, বিশ্বকাপে তিনটে ম্যাচে সেটা আমরা খেলতে পারিনি। আমাদের এই ফল বিশ্লেষণ করতে হবে। দেখতে হবে এর পরে কী করা দরকার।’’
বিশ্বকাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে জিতলে নক-আউট পর্বে যাওয়ার তবু একটা আশা থাকত। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে অবিশ্বাস্য ভেবে হেরে বিদায় নেয় জার্মানি। নয়্যার অবশ্য মনে করেন, শেষ ষোলোয় উঠলেও তাতে লাভ হয়তো হত না। ‘‘আমরা শেষ ষোলোয় উঠলেও সব দলই বোধহয় আমাদের বিরুদ্ধে খেলতে চাইত। এ রকম পারফরম্যান্স দেখিয়ে বিপক্ষের কাছে কী ভাবে সমীহ আদায় করব আমরা? আমি সব সময়ই মাঠে দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছি। দলের সঙ্গে কথা বলেছি। এই ব্যর্থতার দায় আমারও,’’ বলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy