লুকাকু। ছবি- এ এফ পি
রোমেলু লুকাকু মনে করেন, তাঁর ফুটবল মানে শুধুই গোল করা নয়। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে অসাধারণ ফুটবল খেলে উঠে বেলজিয়ামের মহাতারকা ফুটবলার বলে গেলেন, ‘‘আমি চাই লোকে আমাকে অলরাউন্ডার হিসেবেই দেখুক।’’
কাজ়ানে শুক্রবার রাতে লুকাকুর অবিশ্বাস্য একক প্রচেষ্টায় গোল করার বল সাজানো অবস্থায় পেয়ে যান কেভিন দে ব্রুইন। বেলজিয়ামও এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। যা নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তারকার মন্তব্য, ‘‘সবাই মনে করেন রোমেলু লুকাকু মানেই শুধু গোল, গোল আর গোল। সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। তাই কেভিন আমার পাস থেকে গোল করায় ঠিক ততটাই আনন্দ পেয়েছি, যতটা নিজে গোল করলে পাই।’’
এখানেই থামেননি লুকাকু।
নিজের খেলা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দলের জন্য যতটা পরিশ্রম করা সম্ভব ঠিক ততটাই আমি করি। তা ছাড়া আমার যে গোল করার ক্ষমতা আছে তা নতুন করে প্রমাণ করার আর কিছু নেই। পেনাল্টি বক্সে আমাকে যে সুযোগ করে দেওয়া হয় তা কাজে লাগানোই আমার লক্ষ্য থাকে। কিন্তু ফুটবলে সব সময় ব্যক্তিই শেষ কথা নয়। আসল হচ্ছে দল আর দলের জন্য খেলা।’’
এ দিকে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির আর এক তারকা, বেলজিয়াম দলে লুকাকুর সতীর্থ কেভিন দে ব্রুইন মনে করেন, ব্রাজিলকে হারালেও এই বিশ্বকাপে এখনও তাঁদের কাজ শেষ হয়ে যায়নি। এটা জানিয়ে তিনি তাঁর দলকে সতর্কও করেছেন। কেভিনের মন্তব্য, ‘‘ফুটবলে ট্রফি জেতাটাই শেষ কথা। যতক্ষণ না এখানে ট্রফি হাতে তুলছি ততক্ষণ বিশ্বকাপ ঘিরে উৎসব করার প্রশ্ন নেই। তাই ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল করাটা মোটেই আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত নয়।’’ ব্রাজিল ম্যাচে গোল করে নায়ক কেভিনের আরও কথা, ‘‘মনে রাখবেন আমরা এখনও বিশ্বকাপটা জিতিনি। আর তার জন্য আমাদের আরও দু’টো ম্যাচ জিততে হবে।’’ মঙ্গলবার সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের সামনে ফ্রান্স। কেভিনের কথা, ‘‘এখন বাকি দু’টো ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’’ কেভিনের সঙ্গে একমত লুকাকুও। তাঁর কথা, ‘‘আমরা ভাল খেলছি ঠিকই কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে হলে আরও অনেক উন্নতি করতে হবে দলকে।’’
লুকাকু বা কেভিন যাই বলুন, বেলজিয়াম কোচ রবের্তো মার্তিনেস কিন্তু ব্রাজিলের বিরুদ্ধে জয়ের পরে রীতিমতো উল্লসিত। আবেগে ভেসে এই কোচের কথা, ‘‘আমি এই মুহূর্তে বিশ্বের সব চেয়ে গর্বিত পুরুষ।’’ দলের ফুটবলারদের প্রশংসা করে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ফুটবলারদের যে ছক অনুযায়ী খেলতে বলেছিলাম তা বেশ জটিল আর কঠিন একটা ব্যাপার।’’ তাঁর আরও কথা, ‘‘ভাবিনি ছেলেরা এত সুন্দর ভাবে আমার নির্দেশ পালন করবে। আসলে মাঠে নেমে খেলতে হলে একটা রণনীতি তৈরি থাকা সব চেয়ে জরুরি। না হলে পদ্ধতিগত সুবিধাটা পাওয়া যায় না। ব্রাজিলের মতো দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামলাম আর জিতে গেলাম— সেটা হতে পারে না। তাই সাহস করে রণনীতি তৈরি করতে হয়। আর সেটা প্রয়োগের ব্যাপারে ফুটবলারদের আস্থা অর্জনটাও দরকার। আসল ব্যাপার হচ্ছে, আমি যা ভাবছি তার সঠিক প্রয়োগ।’’
সারা প্রতিযোগিতায় ৩-৪-২-১ ছকে খেললেও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে কিন্তু মার্তিনেস তাঁর দলকে সাজান ৪-৩-৩ ছকে। কেভিন দে ব্রুইনকে ব্যবহার করেন ‘ফলস নাইন’ হিসেবে। অনেক নীচ থেকে খেলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির তারকাই বার বার প্রতিআক্রমণে দলকে নেতৃত্ব দেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনিই। মার্তিনেস স্বীকার করেছেন, দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোয় তাঁদের কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy