চর্চা: ছত্রছায়ায় পুতিন। ভিজছেন ইনফান্তিনো ও কিতারোভিচ। ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করলেন, বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রতি ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সফল তাঁর দেশ। এবং সে জন্য তাঁরা গর্বিতও। অভিনন্দন জানালেন দেশবাসীকে। প্রশংসা করলেন সে দেশে বিশ্বকাপ দেখতে আসা হাজার হাজার পর্যটককে। জানালেন, তাঁদের ব্যবহারে তিনি মুগ্ধ। পর্যটকদের জন্য সুখবরও দিলেন। বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমথর্কদের এই বছরের পুরো সময়টাই ভিসা ছাড়া রাশিয়া ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়ার হবে। শুধু তাঁদের বিশ্বকাপের ফ্যান আইডি-টা দেখালেই চলবে।
পুতিন ঘুরিয়ে এক হাত নিলেন পশ্চিমী দেশগুলিকেও। তাঁর দাবি, রাশিয়া নিয়ে এত দিন নানা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বর্ণবিদ্বেষ, মেঠো ঝামেলা ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে অহেতুক ভয় দেখানো হয়েছে বিশ্ববাসীকে। অথচ বিশ্বকাপ চলাকালীন এই ধরনের একটা ঘটনাও ঘটেনি। হালফিল ইংল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভাল নয় রাশিয়ার। অথচ পুতিন বলেছেন, ‘‘কিছু মানুষ আমাদের ভয় পাইয়ে দিতে বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের সমর্থকেরা এ দেশে এসে গুন্ডামি করবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উল্টোটা। ইংরেজ সমর্থকেরা এ দেশে দৃষ্টান্তমূলক আচরণ করেছেন।’’ পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের নানা টানাপড়েন চলছেই। কিন্তু ফান্স থেকে ক্রোয়েশিয়া— রাশিয়ার বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সব দেশই।
এত প্রশংসার মধ্যেও রাশিয়ার সাফল্যে সামান্য হলেও কালির ছিটে লেগেছে, বিশ্বকাপের পুরস্কার দান অনুষ্ঠানে ফ্রান্স বা ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রনায়কদের জন্য আচ্ছাদন দূরের কথা, সামান্য একটা ছাতার ব্যবস্থাও না থাকায়। অথচ পুতিন নিজে ছাতা পেয়েছেন। পেয়েছেন ছাতা ধরার লোকও। আর তুমুল বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাকভেজা ভিজেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ এবং ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। এঁদের দু’জনের কেউই অবশ্য এটা নিয়ে রাশিয়ার সমালোচনার রাস্তায় হাঁটেননি। মাকরঁ শুধু হাল্কা মজা করেছেন একটুখানি। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটগুলোয় বিষয়টি নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছে পুতিনের। সঙ্গে ইন্সটাগ্রাম, ফেসবুক ইত্যাদি জায়গা নানা রকম বিদ্রুপাত্মক পোস্টে ভরে গিয়েছে।
মস্কোয় বিশ্বকাপ ফাইনাল চলাকালীন লুঝনিকি স্টেডিয়ামে দর্শক মাঠে নেমে পড়াতেও নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যাঁরা মাঠে নেমে পড়েছিলেন তাঁরা পুতিন বিরোধী একটি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। নাম ‘পুশি রায়ট’। রাজবন্দিদের মুক্তি-সহ নানা দাবিতে তাঁরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করছেন। পুতিন বিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার ‘অপরাধে’ এই গোষ্ঠীর কয়েক জন এখনও কারাবন্দি। রুশ প্রশাসনকে বিদ্রুপ করতেই তাঁরা মাঠে নেমে পড়েছিলেন পুলিশের নকল পোশাক পরে। মাঠে প্রবেশ করা সবাইকেই পুলিশ গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে।
কড়া নিরাপত্তা এড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো মঞ্চে তাঁরা কী ভাবে মাঠে ঢুকে গেলেন, তার সমালোচনাও হচ্ছে একই সঙ্গে। এই ঘটনার জন্য খেলা ২৫ সেকেন্ডের মতো বন্ধ ছিল। প্রবেশকারীদের মধ্যে এক মহিলা তো কিলিয়ান এমবাপের সামনে গিয়ে তাঁকে স্যালুট করে আসেন। আর একজন ক্রোয়েশীয় ফুটবলার দেয়ান লোভেনকে জড়িয়ে ধরেন। ঘটনার আকস্মিকতায় অত্যন্ত বিরক্ত হন ক্রোয়েশীয় ডিফেন্ডার। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘হঠাৎ করে বাইরের এক জন এসে মাঠের মধ্যে আমাকে জড়িয়ে ধরায় মাথা ঠান্ডা রাখতে পারিনি। তখন ইচ্ছে করছিল লোকটাকে ছুড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে ফেলে দিই।’’ প্রসঙ্গত ‘পুশি রায়ট’ গোষ্ঠী ঘটনার জন্য সমস্ত দায় স্বীকার করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy