Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দাড়ি পাকলেও কাতারে খেলতে চান র‌্যামোস

রবিবার টাইব্রেকারের সময় নিজে গোল করে র‌্যামোস বল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন চেরিশেভের জন্য। এবং বলটা দেওয়ার সময় খুব বিশ্রী ভঙ্গিতে তাঁকে কিছু বলেছিলেন।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:২৯
Share: Save:

রাশিয়ার দিনিস চেরিশেভ এক সময় রিয়াল মাদ্রিদে খেলতেন। সের্খিয়ো র‌্যামোসের বন্ধু। স্প্যানিশ বলতে পারতেন অনর্গল। রবিবার টাইব্রেকারের সময় নিজে গোল করে র‌্যামোস বল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন চেরিশেভের জন্য। এবং বলটা দেওয়ার সময় খুব বিশ্রী ভঙ্গিতে তাঁকে কিছু বলেছিলেন। কিন্তু তাতে চেরিশেভের গোল করা আটকায়নি। উল্টে দেখা যায় স্পেন বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলে সেই চেরিশেভই এগিয়ে র‌্যামোসকে সান্ত্বনা জানাচ্ছেন।

কিন্তু স্পেনের মহাতারকা ডিফেন্ডার তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। স্পেনের কোচ ফের্নান্দো ইয়েরোও তাঁর কান্না থামাতে পারছিলেন না। ব্যাপার-স্যাপার দেখে মনে হচ্ছিল আন্দ্রে ইনিয়েস্তার মতো তিনিও রাশিয়ায় শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেললেন। কিন্তু ভুল মনে হচ্ছিল। কারণ নিজেকে সামলে নিয়ে পরে তিনি বলে গেলেন, ‘‘স্পেনের হয়ে আরও অনেক অনেক বছর খেলতে চাই। অবসরের প্রশ্নই নেই। দাড়ি পেকে গেলেও না। হয়তো ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপেও আমাকে দেখতে পাবেন।’’

কিন্তু ব্যাপারটা কি এতই সহজ? র‌্যামোস অবশ্য স্বীকার করেছেন, ‘‘জানি সেটা কঠিন। এখনও অনেক অনেক ঘণ্টার ব্যাপার। প্রচুর কষ্ট করতে হবে। অনেক ত্যাগও। তবু আমি খেলে যেতে চাই। যদিও ভয়ঙ্কর চাপা একটা কষ্ট নিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছি। আরও কষ্ট হচ্ছে এই জন্য যে নির্ধারিত সময়ে একটাও ম্যাচ না হেরে আমাদের চলে যেতে হচ্ছে।’’

র‌্যামোস জানেন বিশ্বকাপে বিপর্যয়কে আরও বিষণ্ণ করে আন্দ্রে ইনিয়েস্তা ও জেরার পিকে জানিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় দলের হয়ে তাঁরা শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। ইনিয়েস্তার বয়স এখন ৩৪ বছর। পিকে ৩১। সেখানে র‌্যামোস আরও খেলে যাওয়ার কথা বলছেন। এমনকি কাতারেও খেলতে চান। তিনি অবশ্য মনে করছেন, এই সব মহারথিরা বিদায় নিলে স্পেনের ফুটবলে ঘোর দুর্দিন নেমে আসবে না। র‌্যামোস বলেছেন, ‘‘ওরা চলে গেলে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে না। অন্য অনেকে আসছে। নতুনরাও ভাল। আমাদের যুব দলটাও দারুণ। ভেঙে পড়ার কিছু হয়নি।’’

র‌্যামোস যাই বলুন, স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে র‌্যামোসদের যথেচ্ছ সমালোচনা করা হচ্ছে। এই দলটা সম্পর্কে লেখা হচ্ছে, ‘পেনা’। যার অনেক মানের একটা হচ্ছে, ‘‘ইনিয়েস্তাদের দেখে করুণা হচ্ছে’’। নিবোর্ধ থেকে বেখেয়ালি। লেখা হয়েছে আরও অনেক কিছু। মার্সার ভাষ্যে, ‘‘এই স্পেনের না আছে কোনও গতি, না আছে প্রাণ।’’ কম যায়নি মুন্দো দে পোর্তিভোও। তাদের কথা, ‘‘১২০ মিনিট ওরা মাঠে ছিল। কিন্তু ফুটবলটা খেলেছে সামান্য কয়েক মিনিট। রাশিয়ার মতো দুর্বল দেশের বিরুদ্ধেও গোল করতে পারেনি।। তার উপর কোকে ও আসপাস পেনাল্টি নষ্ট করে এল। সবার উপরে যাবে দাভিদ দা হিয়া। ও কিন্তু একটা পেনাল্টিও আটকাতে পারেনি।’’

এমনই তীব্র কটাক্ষে মোড়া আবহেই নতুন আলো খুঁজছেন অনেকে। র‌্যামোস তো আছেনই। দা হিয়া, ইয়েরোও শুনিয়েছেন আশার কথা। দা হিয়ার মন্তব্য, ‘‘আমরা ঘুরে দাঁড়াবোই। কোনওদিন লড়াই ছাড়ব না।’’ ইয়েরোর মন্তব্য, ‘‘অনেক স্বপ্ন ছিল। সবই ভেঙে চুরমার। লক্ষ লক্ষ স্পেনীয়দের মতো আমরাও মারাত্মক হতাশ। কিন্তু ফুটবলারদের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না। প্রত্যেকে প্রাণপাত করেছে। তাই কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।’’ কিন্তু সামনের দিকে তাকিয়ে কী বলবেন কোচ? য়ুলেন লোপেতেগির জায়গায় রাতারাতি স্পেনের কোচ হয়ে যাওয়া ইয়েরোর জবাব, ‘‘মোটেই সামনের দিকে অন্ধকার দেখছি না। আমরা ফিরে আসবই।’’ কিন্তু তিনি কি কোচ থাকবেন? ইয়েরো বলেছেন, ‘‘সে আমি জানি না। দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছি। আগামী দিনেও নিজের জন্য তদ্বির করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE