Advertisement
E-Paper

মিশন মস্কো: ২০১৮ বিশ্বকাপের গাইড, ‘ই’ গ্রুপে সেরা আকর্ষণ ব্রাজিল

যোগ্যতা অর্জন পর্ব শুরু হয়েছিল দুঙ্গার কোচিংয়ে। কিন্তু ভাল ফুটবল খেলতে না পারার জন্য দুঙ্গাকে বরখাস্ত করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৪:৫৯
অস্ত্র: বিশ্বকাপে নেমারের দিকেই তাকিয়ে ব্রাজিল ভক্তরা। ফাইল চিত্র

অস্ত্র: বিশ্বকাপে নেমারের দিকেই তাকিয়ে ব্রাজিল ভক্তরা। ফাইল চিত্র

গ্রুপ ই

• সেরা দল: ব্রাজিল

• ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ২

• ডাকনাম: কানারিনহো

বিশ্বকাপ ইতিহাস

• প্রথম পর্বে: ২০ বার

• সেমিফাইনালে: ১১ বার

• ফাইনালে: ৭ বার

• চ্যাম্পিয়ন: ৫ বার (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪, ২০০২)

কী ভাবে রাশিয়ায়

যোগ্যতা অর্জন পর্ব শুরু হয়েছিল দুঙ্গার কোচিংয়ে। কিন্তু ভাল ফুটবল খেলতে না পারার জন্য দুঙ্গাকে বরখাস্ত করা হয়। সেই সময়ে গ্রুপে ষষ্ঠ স্থানে ছিল ব্রাজিল এবং আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল রাশিয়ার টিকিট অর্জন নিয়েই। তিতের আগমনে পুরোপুরি ঘুরে যায় দুর্দশার ছবি। ফুটবলাররা তাঁদের ফর্ম ফিরে পেয়েছেন, ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করে দল এবং প্রতিপক্ষরা আবার হলুদ জার্সিকে ভয় পেতে শুরু করে। যাদের যোগ্যতা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল, তারাই প্রথম দল হিসেবে রাশিয়ার টিকিট জিতে নেয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে তারাই ছিল শীর্ষে।

কোচ

তিতে: আসল নাম আদেনর লিয়োনার্দো বাচ্চি। পরিচিত তিতে নামে। ২০১৬-র জুনে তিনি ব্রাজিলের দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাতারাতি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। ঘরোয়া ফুটবল লিগে দারুণ সাফল্য এর আগেও তাঁকে দু’বার জাতীয় দলের কোচের পদ পাওয়ার কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়া হয়নি। ব্রাজিলের ক্লাব দল করিন্থিয়াসের কোচ হিসেবে ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছিলেন ২০১২-তে। শুরুতে রক্ষণাত্মক মনস্ক ছিলেন তিনি। কিন্তু ফুটবল থেকে এক বছরের ছুটি নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ান ফুটবল জ্ঞান বাড়ানোর জন্য। তার পরেই আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শনের ছোঁয়াও আসে তাঁর কোচিংয়ে। রাশিয়ায় রক্ষণ ও আক্রমণের উপযুক্ত মিশেলে তিনি ব্রাজিলকে খেলাবেন বলে আশা অনেকের।

শক্তি

এ বারের ব্রাজিল দলে সব চেয়ে চোখে পড়ার মতো ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৪-র মতো তারা শুধুমাত্র নেমার-নির্ভর নয়। অবশ্যই নেমার থাকছেন তাদের সব চেয়ে বড় তারকা এবং প্রধান ফুটবলার হিসেবে কিন্তু তিনিই একমাত্র অস্ত্র নন। তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এই পরিবর্তন চোখে পড়ছে। নেমারকে স্বাধীনতা দেওয়ার পাশাপাশি তিতে দল হিসেবে খেলার সংস্কৃতি গড়ে তুলেছেন এবং সেটাই রাশিয়ায় সব চেয়ে বড় শক্তি হতে পারে ব্রাজিলের। কাজেমিরো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসের মতো নতুন মুখ রয়েছে। ফিলিপে কুটিনহো, উইলিয়ান আছেন। প্রত্যেকে ইউরোপের বিভিন্ন লিগে দারুণ খেলে নজর কেড়েছেন। সব মিলিয়ে এটা এমন একটা ব্রাজিল দল, যারা পাসিং ফুটবল খেলতে পারে, আক্রমণ করতে জানে আবার পাশাপাশি রক্ষণ সামলানোর দক্ষতাতেও পিছিয়ে নেই। তার সঙ্গে নেমারের মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারের উপস্থিতিও রয়েছে।

মরিয়া: বিশ্বসেরা হওয়ার স্বপ্ন তিতের। ফাইল চিত্র

দুর্বলতা

সাম্প্রতিককালের মধ্যে সম্ভবত এই প্রথম বার এমন একটা ব্রাজিল দল বিশ্বকাপে খেলতে আসছে, যাদের দুর্বলতা তুলনায় অনেক কম। এত ভারসাম্য এর মধ্যে আর দেখা যায়নি পেলে, গ্যারিঞ্চার দেশের কোনও দলে। দানি আলভেসের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়াটা ধাক্কা। রণনীতির দিক দিয়ে বলতে গেলে, উইং ধরে খেলার সময় ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। বিশ্বকাপের আগে খুব ভাল প্রতিপক্ষদের খেলার সুযোগ না পাওয়াটা প্রস্তুতির দিক থেকে চিন্তায় রাখতে পারে দলকে।

তারকা

সেরা আকর্ষণ অবশ্যই নেমার। নিজের দেশে গত বিশ্বকাপে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। দেখতে হয়েছিল জার্মানির কাছে সেই ১-৭ লজ্জার হার। সে দিন গোটা ব্রাজিল কেঁদেছিল সেই হার দেখে। চার বছর পরে এ বার নেমারের দিকেই ব্রাজিল ভক্তরা তাকিয়ে থাকবেন ১৬ বছর পরে ফের বিশ্বকাপ তাঁদের দেশে নিয়ে আসার জন্য। রিয়ো দে জেনেইরোতে তিনি ব্রাজিল অলিম্পিক্সে প্রথম বার সোনা জিতেছেন। সেই জয়ে নায়ক ছিলেন নেমারই। তবে এ বারেও নেমার রাশিয়ায় আসছেন নানা আশঙ্কা-অনিশ্চয়তা নিয়ে। পায়ের পাতায় চোট পাওয়ার পরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সবে মাঠে ফিরলেও ফেব্রুয়ারি থেকে ম্যাচ খেলেননি। বিশ্বকাপের জন্য তিনি কতটা ফিট হয়ে ওঠেন, সেটা দেখার।

গ্রুপের অন্যরা

• সুইৎজারল্যান্ড: ফিফা র‌্যাঙ্কিং বেশ উপরের দিকে, ৬। অনেকেই আশা করছেন রাশিয়ায় ভাল কিছু করে দেখাতে পারে তারা। ২০০৯-এ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বজয়ী দলের অনেক সদস্য রাশিয়ার দলে রয়েছেন বলে অনেকে স্বপ্নের প্রজন্ম বলছেন তাদের। একসঙ্গে অনেক প্রতিযোগিতা খেলার অভিজ্ঞতা তাদের পক্ষে যেতে পারে। যদিও ইতিহাস তাদের বিপক্ষে। সুইৎজারল্যান্ড শেষ বার বিশ্বকাপে কোনও নক-আউট ম্যাচ জিতেছে ১৯৫৪-তে। সেরা মুখ জার্দান শাকিরি ইউরো ২০১৬-তে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাইসাইকেল কিকে তাঁর দুরন্ত গোল কে ভুলতে পেরেছে! মাত্র ২৬ বছরেই বিশ্ব ফুটবলের পরিচিত নাম শাকিরি।

• কোস্তা রিকা: ফিফা র‌্যাঙ্কিং ২৫। চার বছর আগে ব্রাজিলে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিল। মাত্র ৫০ লক্ষ জনসং‌খ্যা নিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলা হয়ে যাচ্ছে কোস্তা রিকার। অধিনায়ক ব্রায়ান রুইজ আক্রমণ ভাগে সেরা ভরসা। কিন্তু কোস্তা রিকার এক নম্বর তারকা গোলকিপার কেলর নাভাস। রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপারই সব চেয়ে পরিচিত নাম এবং চার বছর আগে ব্রাজিলে দুর্দান্ত গোলকিপিংই তাঁকে রোনাল্ডোদের দলে নিয়ে গিয়েছিল। তবে ফ্রেন্ডলিতে স্পেনের কাছে পাঁচ গোলে হার চিন্তায় রাখছে।

• সার্বিয়া: ফিফা র‌্যাঙ্কিং ৩৫। আট বছর পরে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করল। উয়েফা গ্রুপ ‘ডি’-তে তারা শীর্ষে শেষ করেছে। যে গ্রুপে তারা ছাড়াও ছিল আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস এবং অস্ট্রিয়া। সব চেয়ে বেশি গোল করেছিল তারা— ২০টি। আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ করেছিলেন ৬টি গোল। প্রধান ভরসা রক্ষণের তারকা ব্রেনস্লাভ ইভানোভিচ। তবে কোচ নিয়োগ নিয়ে ডামাডোল দলের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

Neymar Brazil Football FIFA World Cup 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy