Advertisement
E-Paper

‘বাদ পড়লে ঋষভের মতো হতাশই হতাম’

‘‘ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আবার অনেক কিছু দেয়ওনি। এই না পাওয়া কিছুর জন্য আমি বারবার লড়ে গিয়েছি।’’

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫১
আলোচনা: মঙ্গলবার বিকেলে অনুশীলনের ফাঁকে কোচ কালিসের সঙ্গে অধিনায়ক কার্তিক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আলোচনা: মঙ্গলবার বিকেলে অনুশীলনের ফাঁকে কোচ কালিসের সঙ্গে অধিনায়ক কার্তিক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বিশ্বকাপ দলে তাঁর সুযোগ পাওয়া নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। কেন ঋষভ পন্থের বদলে তাঁকে দলে রাখা হয়েছে, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। তিনি নিজে কী বলছেন? মঙ্গলবার দুপুরে টিম হোটেলে খোলামেলা ক্রিকেট আড্ডায় পাওয়া গেল কেকেআর অধিনায়ক এবং বিশ্বকাপে ভারতের দ্বিতীয় উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিক-কে।

প্রশ্ন: কখন খবর পেলেন বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছেন?

কার্তিক: আমি, আমার স্ত্রী দীপিকা আর কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর মিলে গত কাল (সোমবার) লাঞ্চ করছিলাম। আমার শ্বশুর ফোন করে দীপিকাকে জানায় খবরটা।

প্র: বিশ্বকাপে সুযোগ পাবেন, এই বিশ্বাসটা কবে থেকে করতে শুরু করেছিলেন?

কার্তিক: বছর দু’য়েক আগে আমি ভারতীয় দলে ফিরে আসি। ভাল করার পরে নিজের মধ্যে বিশ্বাস জন্মায় আবার একটা বিশ্বকাপ খেলতে পারব। এই অসাধারণ ভারতীয় দলের অংশ হতে পারব।

প্র: কিন্তু আপনাকে তো বিশ্বকাপের আগে শেষ ওয়ান ডে সিরিজে দলে রাখা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঋষভ পন্থকে খেলানো হয়। তখন কি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন?

কার্তিক: না, না। অনেক আগেই নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান এমএসকে প্রসাদ আমাকে ফোন করে ওদের পরিকল্পনাটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল। বলেছিল, অস্ট্রেলিয়া-নিউজ়িল্যান্ড সফরে আমাকে খেলানো হবে। কিন্তু সেখানে আমি যাই করি না কেন, ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলবে পন্থ। দু’জন উইকেটকিপারকেই ওরা ভাল করে দেখে নিতে চাইছিল।

প্র: আপনার ক্রিকেট জীবনে ওঠা-পড়া প্রচুর। প্রায় হারিয়ে গিয়ে ফিরে এসেছেন। এই হার না মানা মানসিকতার রসায়নটা কী?

কার্তিক: খেলাটার প্রতি ভালবাসা, হার না মানা নাছোড় মনোভাব। ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আবার অনেক কিছু দেয়ওনি। এই না পাওয়া কিছুর জন্য আমি বারবার লড়ে গিয়েছি। চেষ্টা করেছি কঠিন কোনও লক্ষ্যে পৌঁছতে। এই মনোভাবই আমাকে লড়াইয়ে রেখেছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্র: এমএসকে প্রসাদ বলেছেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চোট হলে আপনার খেলার সুযোগ মিলতে পারে বিশ্বকাপে।

কার্তিক: জানি, এই বিশ্বকাপে ধোনির জন্য একটা ছোট ফার্স্ট এড বাক্স হিসেবে যাচ্ছি। যে দিন ধোনির চোট লাগবে, সে দিনের জন্য ছোট ব্যান্ড-এড হিসেবে কাজ করব। তবে নিজেকে তৈরি রাখছি। চার নম্বরে যদি খেলার সুযোগ আসে তার জন্য তৈরি থাকব। ম্যাচ শেষ করে আসার দরকার হলে, তার জন্যও প্রস্তুত থাকব। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই ভারতীয় দলে খেলতে পারি, এই বিশ্বাসটা আমার আছে। আমি আগেও শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে সফল হয়েছি, বিশ্বকাপে সুযোগ পেলে আবারও হব, এই বিশ্বাসটা আছে।

প্র: বিশ্বকাপের দল বাছার আগে থেকে দল হয়ে যাওয়ার পরেও আপনার আর ঋষভ পন্থের তুলনা চলছে। সুনীল গাওস্কর থেকে সঞ্জয় মঞ্জরেকর— পন্থের জায়গায় আপনি সুযোগ পাওয়ায় অবাক। এত সব আলোচনা কি আপনাকে চাপে ফেলে দিচ্ছে?

কার্তিক: যেখানে যে দলই বাছা হোক না কেন, কেউ না কেউ বাদ পড়বেই। পরিষ্কার বলছি, কে বাদ পড়ল না পড়ল, সেটা ভাবা আমার আওতায় পড়ে না। আমার কাজ হল মাঠে নেমে ভাল কিছু করা। আর সেটা করতে পারব বলেই আমি বিশ্বাস করি।

প্র: ঋষভ নিয়ে এ ছাড়া কী বলবেন?

কার্তিক: পন্থ এক জন বিশেষ ক্রিকেটার। আমি নিশ্চিত, ভারতের হয়ে অনেক, অনেক দিন খেলবে ও। পন্থ, শুভমন গিল, পৃথ্বী শ, এরা সব প্রতিভাবান ক্রিকেটার। এরা এখন উঠে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, পন্থের এই লম্বা ক্রিকেট সফরে ওর সঙ্গে থাকতে পারব। পন্থ খুবই ভাল ছেলে, ওর সঙ্গটা খুবই উপভোগ করি। অতীতে ওর সঙ্গে খেলেছি, ভবিষ্যতেও খেলব। আমি আর ধোনি যেমন একসঙ্গে খেলেছি বা খেলছি, তেমন আমার আর ঋষভেরও একসঙ্গে না খেলার কোনও কারণ নেই। আমি নিশ্চিত, দু’জনে এক সঙ্গে দেশের হয়ে খেলতে পারব।

প্র: দল নির্বাচনের আগে আপনার সঙ্গে ঋষভের কি কোনও কথা হয়েছিল? দিল্লি ম্যাচে তো আপনারা মুখোমুখি হয়েছিলেন।

কার্তিক: না, না। আলোচনার প্রশ্নই নেই। আমি আর পন্থ— দু’জনেই জানতাম, আমাদের সুযোগ আছে বিশ্বকাপে যাওয়ার। আমি নিশ্চিত, সুযোগ না পাওয়ায় ও হতাশই হয়েছে। বিশ্বকাপে সুযোগ না পেলে আমিও হতাশ হতাম। কী আর করা যাবে। এটাই জীবন। ক্রিকেটীয় রাস্তার একটা অংশ।

প্র: আপনি খেলা শুরু করেছিলেন ১৫ বছর আগে। আপনার সঙ্গে খেলেছে, এমন অনেকে তো টিভি-তে বিশেষজ্ঞও হয়ে গিয়েছে!

কার্তিক: আমি খেলা শুরু করেছিলাম অনেক ছোট বয়সে। তখন সবার নজর আমার ওপর ছিল। তার পরে আমাকে দেখতে দেখতে আমার খুঁতগুলো খুঁজে বার করতে থাকে লোকে! এটা অনেকের ক্ষেত্রেই হয়েছে, বিশেষ করে যারা ছোট বয়সে খেলা শুরু করেছে। সবাই বলতে শুরু করে, আরে এ তো সেই কবে থেকে খেলছে, আর কেন! ঘটনা হল, আমি শেষ চার-পাঁচ বছর ধরে খেলাটা ভাল মতো বুঝেছি, সেরাটা দিতে পারছি।

প্র: আপনি ৫০ ওভারের একটা বিশ্বকাপ খেলেছেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে যেতে হয়েছিল। এখনও কি সেই স্মৃতি তাড়া করে?

কার্তিক (হেসে): বারো বছর হয়ে গিয়েছে। ও সব ভুলে গিয়েছি। আমাদের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। আমার বিশ্বাস, ভাল কিছু করতে পারব ইংল্যান্ডে।

প্র: বিশ্বকাপে আছেন আপনার রাজ্যেরই বিজয় শঙ্কর। কী বলবেন?

কার্তিক: আমি দারুণ খুশি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটা হল, দলে এক জন আছে যার সঙ্গে আমি তামিলে কথা বলতে পারব! আবার পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, ডিনারে গিয়ে দোসা-ইডলিও খেতে পারব। বিজয়কে অভিনন্দন। ওকে ক্রিকেটার হিসেবে বড় হয়ে উঠতে দেখেছি। শুধু এক রাজ্যেরই নয়, এক ক্লাবেরও ক্রিকেটার আমরা।

World Cup 2019 Cricket Dinesh Karthik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy