Advertisement
E-Paper

আইপিএল নিয়ে ঋদ্ধি আত্মবিশ্বাসী

দেশের হয়েই হোক, অথবা বাংলার জার্সিতে। প্রত্যেক ম্যাচই সমান গুরুত্ব দিয়ে খেলতে দেখা যায় তাঁকে। দিন কয়েক আগেই স্থানীয় লিগে তাঁর ক্লাব মোহনবাগানের হয়ে ২০ বলে ১০২ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়েছেন ঋদ্ধি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৫:২০
জুটি: সাংবাদিক বৈঠকে সস্ত্রীক ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

জুটি: সাংবাদিক বৈঠকে সস্ত্রীক ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা। ম্যাচ শুরুর নির্ধারিত সময় ন’টা হলেও পি অ্যান্ড টি মাঠে গাড়ি নিয়ে তখনই প্রবেশ করলেন ময়দানের ‘পাপালি’। ক্লাব ক্রিকেটের কোনও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ নয়। অফিস লিগ খেলতে এক ঘণ্টা আগে মাঠে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সফল উইকেটরক্ষক। তিনি— ঋদ্ধিমান সাহা।

সামনেই আইপিএল। এ মরসুমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে তাঁকে। তবুও ম্যাচ থাকলে সকালে মাঠে প্রবেশ করার তাগিদটা কোনও অংশে কমে যায়নি ঋদ্ধির। ভারতীয় বোর্ডের ‘এ’ বিভাগে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের অন্যতম সদস্য হওয়া সত্ত্বেও অফিস লিগের প্রতি তাঁর টান সত্যি যেন এক বিরল দৃশ্য। তবে কি এখনও ঋদ্ধিমান বলতে সেই ‘ময়দানের ছেলে পাপালি’? ঋদ্ধিমানের জবাব, ‘‘ময়দানে পারফর্ম করেই ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। ময়দানের ক্রিকেটকে কখনওই অবহেলা করতে পারব না।’’

দেশের হয়েই হোক, অথবা বাংলার জার্সিতে। প্রত্যেক ম্যাচই সমান গুরুত্ব দিয়ে খেলতে দেখা যায় তাঁকে। দিন কয়েক আগেই স্থানীয় লিগে তাঁর ক্লাব মোহনবাগানের হয়ে ২০ বলে ১০২ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়েছেন ঋদ্ধি। মঙ্গলবার সকালে অফিস লিগ খেলার তাগিদেও কোনও খামতি দেখা যায়নি তাঁর মধ্যে। ভারতীয় দলের একজন প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার হয়েও কী ভাবে অফিস লিগ খেলায় সমান দায়বদ্ধতা তৈরি হয়? উত্তরে ঋদ্ধি বলেন, ‘‘যে অফিস আমাকে চাকরি দিয়েছে, তাদের হয়ে খেলা আমার কর্তব্য। প্রত্যেক ম্যাচের গুরুত্বও আমার কাছে সমান। দেশের জার্সিতেও যে মানসিকতার সঙ্গে মাঠে নামি, অফিসের হয়েও ঠিক একই ভাবে খেলি।’’

সিইএসসি-তে চাকরি করেন ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক। সেই অফিসের জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ সরকার। তাঁর মতে, ক্রিকেটার সত্ত্বার পাশাপাশি অনেক বড় মনের মানুষ ভারতীয় দলের এই উইকেটরক্ষক। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘ঋদ্ধির মতো ভাল মানুষ আমি দেখিনি। ক্রিকেট যে ‘জেন্টলম্যান্‌স গেম’ সেটা ওকে দেখেই বোঝা যায়। অফিসের যে কোনও প্রয়োজনে ওকে পাশে পাওয়া যায়।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে অফিসের প্রতিও এ রকম দায়বদ্ধতা আমার কাছে বিরল দৃশ্য। একজন ভাল মানুষ বলেই হয়তো এটা সম্ভব।’’

একই অফিসে চাকরি করেন রঘুনাথ বসাক। ময়দানে তিনি পরিচিত ‘পিন্টু’ নামে। এক সময় বাংলা ক্রিকেট দলের ম্যাসিওর ছিলেন তিনি। এমনকী সচিন তেন্ডুলকরও তাঁর আত্মজীবনীতে ‘পিন্টু’-র মাসাজে উপকৃত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। ঋদ্ধির সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পিন্টু বলেন, ‘‘একটা ঘটনা আমার খুবই মনে পড়ছে। বছর দু’য়েক আগে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ খেলার পরে মাঝরাতের ট্রেন ধরে ভুবনেশ্বর পৌঁছেই অফিসের হয়ে খেলতে নেমেছিল পাপালি (ঋদ্ধি)। ওর মতো ভদ্র ক্রিকেটার আমি কমই দেখেছি। পাপালি কিন্তু সেই একই রকম রয়েছে।’’

অফিস লিগের ম্যাচটি সকালেই ওয়াকওভার হয়ে গিয়েছিল। দুপুরে কলকাতার ক্রীড়া সংবাদিকদের অনুরোধে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। প্রথমেই বাউন্সারের মতো ঋদ্ধির দিকে বল বিকৃতি সংক্রান্ত প্রশ্ন উড়ে এল। টেস্ট ম্যাচের মতোই সেই প্রশ্নকে ডিফেন্স করলেন ঋদ্ধি। বল বিকৃতির অভিযোগের পরে অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। দেশের পাশাপাশি রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন স্টিভ স্মিথও। তবে ডেভিড ওয়ার্নার-কে পাওয়া না গেলেও তাঁর জায়গা পূরণ করার মতো ক্রিকেটার হায়দরাবাদে রয়েছে, মত ঋদ্ধিমান সাহার। বলেন, ‘‘ওয়ার্নার না থাকলেও আমাদের রিজার্ভ বেঞ্চে ওর জায়গা পূরণ করার মতো ক্রিকেটার রয়েছে।’’

অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের শাস্তি নিয়েও নিজের মত প্রকাশ করেছেন ঋদ্ধি। বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এই ঘটনায় অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের সমান শাস্তিই হওয়া উচিত।’’

আইপিএলের পরেই ইংল্যান্ড সফর। তার প্রস্তুতি হিসেবে কাউন্টি খেলার পরিকল্পনা করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি। ঋদ্ধিও কি সে রকম কিছু ভাবছেন? তাঁর উত্তর, ‘‘কাউন্টি খেলার কোনও পরিকল্পনা এখনও করিনি। টেস্ট শুরু হওয়ার বেশ কিছু দিন আগে পৌঁছতে পারলেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধে হবে।’’

IPL Wriddhiman Saha Sunrisers Hyderabad India Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy