মাঠে নেমে ও নামার আগে অন্তর্বাস প্রদর্শন। আর তাতেই ফিফার রক্তচক্ষুর খপ্পরে পড়ে গেলেন নেইমার জুনিয়র।
ঘটনার প্রেক্ষাপট— ব্রাজিল বনাম ক্যামেরুন ম্যাচ। হাফটাইমের পর ম্যাচ শুরুর সময় আচমকাই টিভি ক্যামেরা ধরে নেইমারকে। দেখা যায়, সাও পাওলোর ওয়ান্ডার কিড শর্টসের ভিতর থেকে অন্তর্বাস টেনে বার করেছেন! পরে মাঠেও তাঁকে সেটা করতে দেখা যায়। প্রথমে ভাবা হয়েছিল যেহেতু নেইমারের অন্তর্বাসও ব্রাজিল জার্সির রঙে, নেইমার তাই সেটা বারবার বার করছেন। কিন্তু তখন টের পাওয়া যায়নি যে সেটাই ব্রাজিল বোমার দিকে পত্রপাঠ ফিরে আসবে।
ফিরিয়ে আনবে স্বয়ং ফিফা।
এমনিতেই প্লেয়ারদের স্পনসর নিয়ে কড়াকড়ি আছে ফিফার। যে সব সংস্থা ফিফা অনুমোদিত, তারাই একমাত্র প্লেয়ারদের স্পনসর করতে পারবে। উল্টোটাও সত্যি। সে সব সংস্থারই লোগো জিনিসপত্রে ব্যবহার করতে পারবেন প্লেয়াররা। কিন্তু নেইমার যে সংস্থার অন্তর্বাস পরেছিলেন, তা ফিফা অনুমোদিত নয়।
ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা এখন তদন্ত করে দেখছে, নেইমার ফিফার মার্কেটিং সংক্রান্ত নিয়মকানুন ভেঙেছেন কি না। ভাঙলেও সেটা ইচ্ছাকৃত কি না। ফিফার নিয়ম বলছে, প্লেয়াররা এমন কোনও দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না যেখানে কোনও ধর্মীয় বার্তা, কোনও রাজনৈতিক মেসেজ বা বিজ্ঞাপনী স্লোগান লেখা থাকবে। অদ্ভুত শোনাতে পারে। কিন্তু ফুটবল বিশ্বে এর পূর্ব-উদাহরণ রয়েছে। দু’বছর আগে ইউরো কাপে ডেনমার্কের নিকোলাস বেন্ডনারকে এক লক্ষ পঁচিশ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছিল অন্তর্বাসে এক বেটিং সংস্থার বিজ্ঞাপন রাখার জন্য। আর নেইমারেরও এমন কীর্তি প্রথম নয়। গত এপ্রিলে আটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে নেইমারকে দেখা যায়, অন্তর্বাসের উপরের অংশ বারবার উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন। এক নয়, দুই নয়, পাঁচ বার। তখন বলা হয়েছিল, নেইমার এক বিশেষ সংস্থার প্রচার করছেন এ ভাবে।
ব্রাজিল বোমাকে অবশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি কোনও রকম অস্বস্তিতে আছেন বলে। বা ফিফার এমন কোনও নির্দেশিকার খবর তাঁর কানে এসে পৌঁছেছে বলে। বরং নেইমার এবং ফ্রেডকে দেখা গেল প্র্যাকটিসে লুই সুয়ারেজকে নকল করে বেড়াচ্ছেন!
এ দিন ব্রাজিলের প্র্যাকটিসে দেখা যায়, নেইমার ও ফ্রেড সতীর্থদের কামড়ানোর চেষ্টা করছেন। ফ্রেড যেমন মার্সেলোর বাঁ হাত কামড়াতে গেলেন একবার। যা নিয়ে এক রাউন্ড ঠাট্টা-ইয়ার্কি চলল সেলেকাও ট্রেনিংয়ে। আগামী শনিবার চিলির বিরুদ্ধে নামছে ব্রাজিল। তার আগে নেইমারদের এমন ফুরফুরে মেজাজ, সমর্থকদের নিঃসন্দেহে স্বস্তি দেবে। তবে সুয়ারেজের কীর্তির নকল করে বেড়ালেও না নেইমার, না ফ্রেড—কেউই ঘটনাটা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। শুধু মিডফিল্ডার উইলিয়ান বলেছেন, “যা হয়েছে দেখেছি। আমি কেন, সবাই দেখেছে। কিন্তু আমরা সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করার জায়গায় নেই। আমাদের নিজেদের কাজটা নিয়ে ভাবতে হবে। অন্য কিছু নিয়ে না ভেবে।”