কোচ সঞ্জয় সেন পরিষ্কার বলে দিলেন, “আইএমজিআর ফুটবলারদের ধারাবাহিকতার অভাব মহমেডানের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। দলের ফুটবলারদের গড় বয়স বেশি হওয়াটাও একটা ফ্যাক্টর।”
রাংদাজিদের বিরুদ্ধে ‘ডু ওর ডাই’ ম্যাচে খেলতে নামার প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা আগে সবাইকে অবাক করে দিয়ে পেন ওরজিও বলে বসলেন, “মহমেডানের কোনও দলগত সংহতি নেই। ব্যক্তিগত ইচ্ছাশক্তি ছাড়া আলাদা কোনও প্রেরণাও নেই।’’
আই লিগ তালিকার লাস্ট বয়দের মধ্যে অবনমন বাঁচানোর দায়বদ্ধতা কোথায়? কোথায় হারিয়ে গেল টিমের ‘একতা’?
২০১২-১৩ মরসুমে টিম স্পিরিটের জোরেই অবনমনের আওতা থেকে বেরিয়ে এসেছিল মোহনবাগান। দলগত সংহতি ছিল করিম বেঞ্চারিফার টিমের মূল মন্ত্র। আর মহমেডানের ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো। রাংদাজিদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন সাদা-কালো শিবিরে চলল একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি।
লুসিয়ানোকে রীতিমতো উত্তেজিত গলায় এ দিন বলতে শোনা গেল, “টিমের এই দশা কেন, কর্তাদের জিজ্ঞেস করুন। আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে।” কিছুক্ষণ পর পেন বললেন, “দলের খারাপ হালের জন্য প্রশাসনিক ব্যর্থতা তো রয়েছেই, সঙ্গে বেতন সমস্যা এবং দলগত নানা জটিলতাও আছে। আমাদের আসল সমস্যা মাঠের বাইরে।”
এই মুহূর্তে তিনটি ম্যাচই মহমেডানের কাছে কঠিনতম পরীক্ষা। একটি ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করা মানে অবনমনের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু সে কথা কি পেন-লুসিয়ানোরা আদৌ ভাবছেন? দলের সুবিধার কথা ভেবেই সাদা-কালো কর্তারা দুপুর তিনটেয় রাংদাজিদ ম্যাচ রেখেছেন। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার, পাহাড় থেকে এসে সমতলের গরমে খেলতে গিয়ে যাতে সমস্যায় পড়ে র্যান্টি মার্টিন্সের দল। কিন্তু কর্তারা চাইলেও, ফুটবলাররা কি এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারবেন? মহমেডানের অন্যতম কর্তা কামারুদ্দিন বললেন, “আমাদের কোনও স্পনসর নেই। টাকা-পয়সার সমস্যা রয়েছে। তবে ফুটবলারদের এক-দেড় মাসের বেশি কারও বেতন বাকি নেই। আর আমরা ফুটবলারদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখি। সমস্যা হওয়ার জায়গা নেই।”
তীব্র ডামাডোলের মাঝেই রাংদাজিদকে হারিয়ে মহমেডান যখন নিজেদের লিগের লড়াইয়ে ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করবে, তখন অবনমনের আওতায় থাকা মোহনবাগান-ইউনাইটেড এবং মুম্বই এফসি-চার্চিল ব্রাদার্সও একে অপরের মুখোমুখি হবে যথাক্রমে কল্যাণী আর পুণেতে। আজ রবিবারই আই লিগে অবনমনের চিত্র অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে।
র্যান্টিকে আটকে সঞ্জয় চাইবেন রাংদাজিদের গোলের মুখ প্রথমে বন্ধ করে দিতে। নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের জন্য বড় চেহারার মেহরাজ এবং লুসিয়ানোকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। র্যান্টির দলও অবশ্য জিততে মরিয়া। র্যান্টি বললেন, “জিততে না পারলে আমরাও সমস্যায় পড়ব।” মহমেডানের শেষ কয়েকটি ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে, রক্ষণের ভুলেই গোল খেয়ে তিন পয়েন্ট নষ্ট করেছেন রহিম নবিরা। সঞ্জয় তাই শনিবার ফুটবলারদের বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, “প্রথমে নিজেদের গোলের মুখ বন্ধ করে দাও। তার পর গোল করার জন্য ঝাঁপাও।”
তবে দলের যা পরিস্থিতি তাতে ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে অসন্তুষ্ট সঞ্জয় সেনের পেপ-টক ‘বিদ্রোহী’ পেন, লুসিয়ানোদের কতটা উদ্বুদ্ধ করে সেটাই এখন দেখার।