একটা সময় কর্নাটকের রান ছিল ৩১-৪। সেখান থেকে গুজরাতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে দলকে বিজয় হাজারের সেমিফাইনালে তুললেন শাহরুখ খানের নতুন নাইট। যার ঘণ্টা দুয়েক বাদে টিম হোটেলের লবিতে বসে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন রবিন উথাপ্পা।
প্রশ্ন: একত্রিশ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কী মনে হচ্ছিল?
উথাপ্পা: তখন একটা ভাল পার্টনারশিপ ছাড়া আর কিছুই ভাবছিলাম না। যখন করুণ (নায়ার) ব্যাট করতে এল, তখন সেই পার্টনারশিপটা শুরু হল।
প্রশ্ন: তিনশোয় পৌঁছে নিশ্চয়ই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন?
উথাপ্পা: ঠিক তা নয়। কারণ কড়া রোদ ছিল। সকালে উইকেটে যেমন বল সিম করছিল, দুপুরের পর থেকে কিন্তু তা হচ্ছিল না। বিনয়, মিঠুনরা দারুণ বল করল। ভাল ফিল্ডিংও হল আমাদের। এই পারফরম্যান্সের পর আমার বিশ্বাস, পরের দুটো ম্যাচেও আমরা ভাল খেলব।
প্রশ্ন: মানে, ফাইনালে উঠবেন ধরেই নিচ্ছেন?
উথাপ্পা: কেন নয়? আমরা সারা মরসুমেই ভাল খেলছি।
প্রশ্ন: আপনার সেঞ্চুরি, বিনয় কুমারের পাঁচ উইকেট। কেকেআর সমর্থকদেরও আজ খুশির দিন।
উথাপ্পা: ওরা খুশি হলে, আমরাও খুশি। নিশ্চয়ই বোঝাতে পারলাম, আমরা এমনই। দলের প্রতি কতটা দায়িত্বশীল।
প্রশ্ন: কেকেআর নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন?
উথাপ্পা: এখনই ঠিক শুরু করিনি। আমার উপর উপর আস্থা রেখে যে টিম ম্যানেজমেন্ট ভুল করেনি, তা প্রমাণ করার একটা তাগিদ রয়েছে। সে রকমই পারফর্ম করতে হবে। ওরা খুব পেশাদার টিম বলে শুনেছি। এ রকম টিমই পছন্দ আমার। আর এখানকার মানুষও তো ক্রিকেট পাগল। কলকাতা অবশ্য আমার কাছে পয়া। এখানে খেলার অভিজ্ঞতা খারাপ নয়।
প্রশ্ন: কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা খুব আবেগপ্রবণ। ফলে এখানকার টিমের উপর প্রত্যাশার চাপ থাকে প্রচুর। এটা সামলাবেন কী করে?
উথাপ্পা: চাপ তো থাকবেই। এই চাপ সামলানোই আমার কাজ ও পেশা। পেশাদার জগতে এটা থাকবেই। পরিশ্রমে বিশ্বাস করি। আত্মবিশ্বাসী থাকার চেষ্টা করি। চাপ নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি এখানকার খাবার নিয়ে। বিশেষ করে এখানকার সি-ফুড। কিছু বাংলা শেখারও চেষ্টা করছি, যাতে এখানকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারি। সবার যাতে মনে হয়, আমি তাদের নিজেদেরই লোক।
প্রশ্ন: নিলামের আগে ভেবেছিলেন, এত টাকা দিয়ে আপনাকে নেবে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি?
উথাপ্পা: (হেসে) কেন নয়? আমি খারাপ? শাহরুখ ভাই কেন টাকা ঢালবে না? সত্যি বলতে, টাকা নিয়ে কিছুই ভাবিনি (উথাপ্পা পেয়েছেন ৫ কোটি)। কারা আমাকে নেবে সেটা নিয়েই চিন্তায় ছিলাম। কেকেআর নেওয়ায় বেশ খুশি হয়েছি আমি।
প্রশ্ন: নিলামের পর গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে কথা হয়েছে?
উথাপ্পা: গৌতম নিলামের পরই ফোন করেছিল। টিমে আমার ভূমিকাটা কী, তা নিয়ে আলোচনা হল ওর সঙ্গে। মোদ্দা কথাটা হল, সাফল্য আনতে হবে দলের জন্য। আরও কথা হবে। আশা করি, ওর প্ল্যান অনুযায়ী এগোতে পারব। এর আগে পুণের হয়ে তো ভালই ব্যাট করেছি। পুণের উইকেট বরং ব্যাট করার পক্ষে কঠিন। ইডেনের উইকেট তার চেয়ে অনেক ভাল। মনে হয়, দলকে, ক্যাপ্টেনকে, সমর্থকদের আশাহত করব না।
প্রশ্ন: ক্যাপ্টেন হিসেবে গৌতম গম্ভীর সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?
উথাপ্পা: গৌতম যথেষ্ট ভাল ক্যাপ্টেন। দলকে ভাল লিডও করেছে ও। গৌতম মানসিক ভাবে খুব শক্তিশালী। আমাদের যেমন ব্যালান্সড দল, তেমনই ভাল লিডার। দেখে নেবেন। সাফল্য আসবেই।
প্রশ্ন: অনেকে বলছে কেকেআর প্রচুর টাকা নষ্ট করে আজেবাজে ক্রিকেটার নিয়েছে। আপনার কী মত?
উথাপ্পা: এটা ঠিক নয় বোধহয়। প্রত্যেকের কাছ থেকেই কিছু না কিছু পাওয়া যাবে। নিশ্চয়ই একটা প্ল্যান করে দল গড়া হয়েছে। তা ছাড়া আমাদের দলটা ব্যালান্সড। ভাল ব্যাটিং, বোলিং। বিশেষ করে ফাস্ট বোলিং। কয়েকজন ভাল অলরাউন্ডার আছে।
প্রশ্ন: এই দলে মহম্মদ শামি থাকলে ভাল হত না?
উথাপ্পা: শামি থাকলে তো ভালই হত। দুর্ভাগ্য আমরা ওকে পাইনি। লক্ষ্মী, মনোজকে না পাওয়াও দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু দেখুন, আমি, বিনয়, মনীশও তো বেঙ্গালুরুর হয়ে নামতে পারছি না। আইপিএল এ রকমই। এটা একটা প্রোডাক্ট যার সাফল্যই আসল কথা। এখানে আবেগের জায়গা বোধহয় অতটা নেই।
প্রশ্ন: এই যে দুটো দেশে হওয়ার কথা হচ্ছে আইপিএল। এতে আপনাদের, মানে ক্রিকেটারদের অসুবিধা হবে না?
উথাপ্পা: সে হতে পারে। কিন্তু আমাদের দ্রুত আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। পেশাদারি জায়গায় এটাই তো চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয়, এটা তেমন কোনও ব্যাপার নয়। আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। এটা আমাদের করতেই হবে। এটা প্রস্তুতির ব্যাপার। সব কিছু ঠিকঠাক হলে এই ব্যাপারটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy