দলকে নিয়ে আবার দৌড় শুরু করে দাও। বাগান অধিনায়ককে কি সেটাই বলছেন কোচ। শুক্রবার অনুশীলনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ওকোলি ওডাফার কি আজ শনিবার চোট সারিয়ে মাঠে ফেরার ‘পুনর্জন্ম’ হবে?
দু’কোটির বাগান অধিনায়ক কি পারবেন এ মরসুমে নিজের শেষ বড় ম্যাচে গোল করে অক্সিজেনের জোগান দিতে?
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই নয়। আজ করিম বেঞ্চারিফা বনাম সঞ্জয় সেনের ধুন্ধুমার লড়াই অবনমনের আওতা থেকে বেরোনোর রসদ সংগ্রহের তাগিদ। সেখানে ওডাফা বড় টেক্কা করিমের। যেমন সঞ্জয়ের আছেন জোসিমার।
আইএফএ শিল্ডের ম্যাচে যে দলের বিরুদ্ধে ফ্রি-কিক থেকে শট মারতে গিয়ে ফের চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন, সেই মহমেডান ম্যাচই এখন প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ ওডাফার। অন্তত করিমের অনুশীলন দেখে মনে হল। এবং সেই ম্যাচের আগে এতটাই টেনশনে তিনি যে, মুখে সেলোটেপ এঁটে দিয়েছেন। গাড়িতে ওঠার আগে শুধু বলে গেলেন, “বহু দিন আমি মাঠের বাইরে। ম্যাচ খেলিনি। তাই গোল না করে কোনও কথা বলতে চাইছি না। গোল করেই আমি যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিতে চাই।” করিমের প্র্যাকটিসে শুক্রবার ওডাফাকে কিন্তু বেশ চনমনে দেখাল।
ওডাফার মতোই করিমের কাছেও এটা নিজের টিআরপি বাড়ানোর ম্যাচ। তাঁকে বাগানে রাখা হবে, কি হবে না তা নিয়ে আলোচনায় ময়দান তোলপাড়। করিম-ওডাফার এই ‘ইচ্ছাশক্তি’-র যুগলবন্দিই বাগানের কঠিনতম ম্যাচ জেতার সেরা অস্ত্র মনে করছেন অনেকেই। করিম অনুশীলনের পর বলছিলেন, “মহমেডান ছন্দে আছে। ওদের বিরুদ্ধে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। তবে অবনমনের আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে তিন পয়েন্ট চাই-ই।”
পরিস্থিতি যা তাতে আজ ড্র করলে চলবে না মহমেডানেরও। তাদেরও দরকার তিন পয়েন্ট। আসলে অবনমনের আশঙ্কার জায়গা থেকে এই মুহূর্তে সঞ্জয় আর করিম যে একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। মোহনবাগান যেখানে আঠারো ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার নয় নম্বরে রয়েছে। মহমেডান তখন লিগ তালিকায় এগারো নম্বরে দাঁড়িয়ে ভেন্টিলেশনে। তাদের পয়েন্ট ষোল ম্যাচে ১৬। এই পরিস্থিতিতে যুযুধান দুই পক্ষের কাছেই আজ ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। সঞ্জয় সেন সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। অনুশীলনের পর বলে দেন, “আই লিগে আমরা যে জায়গায় রয়েছি, সেখানে সব ম্যাচই বড় ম্যাচ। জিততে না পারলেই অবনমনে পড়ব।”
দু’দলের অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল, ফুটবলাররা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুডে। তাতেও কিন্তু করিম এবং সঞ্জয়ের কপালের চিন্তার ভাঁজগুলো কমছে না। দুই দলের কোচই চোট-আঘাত, কার্ড আর অফিস ফুটবলের সমস্যায় জেরবার। চোটের জন্য আইবরকে যেমন করিম পাচ্ছেন না, তেমনই সাদা-কালো কোচ আবার কার্ড সমস্যায় পাবেন না মেহরাজকে। চোটের জন্য গোলকিপার লুই ব্যারেটো অনিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে অশোক সিংহকে খেলাতে পারেন সঞ্জয়।
মোহনবাগানে আবার অফিস লিগ খেলে শৌভিক ঘোষ, প্রীতম কোটালরা ফিরে এলেও তাঁরা ক্লান্ত। তার উপর প্রায় এক সপ্তাহ দলের সঙ্গে অনুশীলন না করার জন্য বোঝাপড়ার সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন করিম। মহমেডানের রহিম নবি অফিস ম্যাচ খেলে শুক্রবার রাতেই ফিরেছেন। মহমেডানের কাছে আরও চিন্তার মাঝমাঠের প্রাণভোমরা পেন ওরজি আবার চোটের জন্য দু’দিন ধরে অনুশীলন করতে পারেননি। প্র্যাকটিসে চোট পেয়েছিলেন তিনি। তবে পেন এ দিন বলছিলেন, “কোচ খেলালে আমার কোনও সমস্যা নেই।”
বাগানের অনুশীলনে কিন্তু একটি ব্যাপার পরিষ্কার, মহমেডানের বিরুদ্ধে করিম শুরু থেকেই আক্রমণের পথে হাঁটতে চাইছেন। সে জন্য ওডাফা-ক্রিস্টোফার ছাড়াও সাবিথ এবং মণীশ ভার্গবকেও প্রথম একাদশে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। পেনকে নিষ্ক্রিয় করতে ডেনসনকে ব্যবহার করবেন মরক্কান কোচ। আর মহমেডানের মাঝমাঠ এলোমেলো করে দিতে কাতসুমির দৌড়কে অস্ত্র করতে চাইছেন তিনি। জোসিমার আর তারো-র জন্য ইচে-কিংশুকরা রয়েছেন।
করিম বুনো ওল হলে, সঞ্জয় বাঘা তেঁতুল। চেতলার বাসিন্দা ম্যাচের শুরু থেকেই চাইবেন লুসিয়ানো এবং নির্মল ছেত্রীকে দিয়ে ওডাফাকে পকেটে পুরে ফেলতে। কাতসুমির দৌড় আটকাতে সাদা-কালোর শক্তিশালী মাঝমাঠ রয়েছে। ইচেদের বোকা বানানোর টিপসটাও নাকি জোসিমারকে দিয়ে রেখেছেন সঞ্জয়।
এই মরসুমে ওডাফা-জোসিমারদের ফলাফল সমান সমান। তিনটি ম্যাচই ড্র। এই ধারা বজায় থাকলে আজ কিন্তু বিপদ থেকে বেরোতে পারবে না কোনও দলই।
শনিবার আই লিগ
মোহনবাগান: মহমেডান (যুবভারতী, ৩-০০),
বেঙ্গালুরু এফসি: চার্চিল ব্রাদার্স (৪-০০),
ডেম্পো: স্পোর্টিং ক্লুব (৬-০০),
পুণে এফসি: শিলং লাজং (৬-৩০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy