ভারতে চোদ্দো বছরের ফুটবলার জীবনের উপর আজ শুক্রবার দাঁড়ি টানতে চলেছেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। তুলে রাখতে চলেছেন বুট। তবে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় যাঁদের সঙ্গী ছিলেন সেই সবুজ-মেরুন জার্সিতে নয়, ভবানীপুরের জার্সিতেই আইজলে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন সবুজ তোতা।
আই লিগে ওঠার জন্য আজ আইজলে রয়্যাল ওয়াহিংডোর বিরুদ্ধে খেলতে নামবে ব্যারেটোর দল ভবানীপুর। এই ম্যাচে এক পয়েন্ট পেলেই ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, ডেম্পো, বেঙ্গালুরুর সঙ্গে আই লিগ ওয়ানে খেলার সুযোগ পাবে কলকাতার দলটি। সেই ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে অবশ্য অবসর নিয়ে একেবারেই নস্টালজিয়ায় ভুগছেন না হোসে ব্যারেটো। আইজলে ফোনে ধরা হলে বলে দিলেন, “নিরানব্বইতে মোহনবাগানে আই লিগ দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটা কাজটা কাল শেষ করতে চাই। ভবানীপুরকে আই লিগের মূলপর্বে তুলে। শুধু আমার একার কাছে এটা শেষ ম্যাচ বলে স্পেশ্যাল নয়, ভবানীপুরের সব ফুটবলারই ম্যাচটা জেতার জন্য মুখিয়ে আছে।”
চোখ ধাঁধানো ফুটবল জীবন। কলকাতায় খেলা ধারাবাহিক সেরা বিদেশি। পকেটে দু’দু’টো আই লিগ এবং ফেড-কাপ সহ অসংখ্য ট্রফি। মনে রাখার মতো অসংখ্য গোল। মোহনবাগানের বহু কঠিন ম্যাচ উতরে দেওয়ার নায়ক। তা সত্ত্বেও এই সাঁইত্রিশ বছর বয়সে এখনও ট্রফির খিদে অটুট সবুজ তোতার। কথা বললেই বোঝা যায়। “আইজলের এই ট্রফিটা (পড়ুন লিগ) জেতার জন্য আমি মুখিয়ে আছি,” বলে দিয়েছেন তিনি। ড্যানিয়েল বিদেমির সঙ্গে অবশ্য আজ শুরু থেকে নামছেন না তিনি। টিম সূত্রের খবর বিদায়ী ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে নামানো হবে ব্যারেটোকে।
অ্যালবামে ব্যারেটো। সবিস্তার...
অবসরের পর বেটোর সঙ্গে গড়া নিজের ফুটবল অ্যাকাডেমির কাজ করবেন বলে ঠিক করেছেন। জড়িয়ে থাকতে চান ভবানীপুর এবং মোহনবাগানের নানা কাজের সঙ্গে। সেজন্য তৈরি করেছেন একটি কোম্পানিও। কিন্তু সে সব নিয়ে এখন কথা বলতে একেবারেই আগ্রহী নন বাগানের সর্বকালের অন্যতম সফল বিদেশি। বলে দিলেন, “গত দু’বার নানা কারণে আমরা খুব কাছে এসেও আই লিগের প্রথম ডিভিশনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। এ বার সেটা পেতেই হবে। আমাদের ছেলেরা জানে এই ম্যাচের গুরুত্ব।”
ব্রাজিলের পোর্তো আলেগ্রার ছেলে ব্যারেটো গ্রেমিও অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় কোচ ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী লুই ফিলিপ স্কোলারি। বাগানে দু’দফায় খেলেছেন তিনি। মোট এগারো বছর। মাঝে মালয়েশিয়ার পেনাং এবং মহীন্দ্রা ইউনাইটেডে খেলেছেন। দু’শোর উপর গোল করেছেন তিনি। দু’বছর আগে বাগান তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার পর বাগান কর্তাদের আর একটা টিম ভবানীপুরে নাম লিখিয়েছিলেন। নতুন জার্সিতেও গোল করেছেন। এ বারও চোট পেয়ে কিছু দিন বাইরে ছিলেন। একাগ্রতা আর নিষ্ঠা এমনই যে, ফের ফিরে এসেছেন মাঠে। বলে দিলেন, “পেশাদার ফুটবলার হিসাবে যা করার দরকার তা করেছি। ফুটবলাররা চোট পায়, ফিরেও আসে। এটাই জীবন।”
জীবনের শেষ ম্যাচেও কি স্বপ্ন সফল করে ফিরতে পারবেন ব্যারেটো? ব্যারেটো বললেন, “ওয়াহিংডো খুব ভাল দল। খুব ব্যালান্সড। তবে ওদের জিততে হবেই। আমাদের ড্র করলেও চলবে। তবু আমরা জেতার জন্যই নামব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy