ক্যাপ্টেন যখন কোচ। সতীর্থদের ফিল্ডিং প্র্যাকটিস করাচ্ছেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। পাশে অশোক দিন্দা। রবিবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ঋদ্ধিমান সাহা কি দীর্ঘ যাত্রার ধকল কাটিয়ে সেরাটা দিতে পারবেন? গ্রিন টপ না পাটা, কোন উইকেটে খেলবে বাংলা? জম্মু-কাশ্মীরের বিরুদ্ধে তিন স্পিনারের স্ট্র্যাটেজিই চূড়ান্ত? প্রশ্ন অনেক। কিন্তু উত্তর দেবেন কে, বাংলা শিবিরে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
পরভেজ রসুলদের বিরুদ্ধে ‘জিততেই হবে’ ম্যাচে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বাংলাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বিতর্ক। প্রচারমাধ্যমের কাছে অশোক দিন্দা আর মনোজ তিওয়ারির বিতর্কিত মন্তব্যের পর সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া যে কড়া মনোভাব দেখিয়েছেন, দলে তার প্রভাব রবিবারও ঘোরতর ভাবে স্পষ্ট। সিএবি প্রেসিডেন্ট শনিবার বলেছিলেন, ‘‘একই ঘটনা আবার ঘটলে সোজা থ্যাঙ্ক ইউ বলে দেব।” সেই আতঙ্কই যেন তাড়া করছে এখন গোটা দলকে। বাংলার কোনও ক্রিকেটারকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে গেলেই শুধু উত্তর আসছে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’।
হলটা কী? শোনা গেল সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলা নিয়ে ক্রিকেটারদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ফিসফাস আরও বেড়ে গেল কিছুক্ষণ পরই মনোজ তিওয়ারি প্র্যাকটিসে আসেননি দেখে। কেন? মিডিয়ার উপর রাগ নয়তো? টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ বললেন, সুস্থ নয় বলে আগেই প্র্যাকটিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন মনোজ। তবে সে রকম কিছু নয়, সোমবারই দলের প্র্যাকটিসে যোগ দেবেন।
একটা ব্যাপার যদিও স্পষ্ট। পরভেজদের বিরুদ্ধে পুরো পয়েন্ট নিয়ে জিততে কতটা মরিয়া বাংলা। রবিবার ইডেনে বাংলার প্রায় ঘণ্টা তিনেকের প্র্যাকটিসের পর কোচ অশোক মলহোত্র সংবাদমাধ্যমকে দেখেই বলে দিলেন যা বলার ক্যাপ্টেন বলবে। লক্ষ্মীরতন শুক্ল আবার বললেন, ‘কাল কথা বলব’। তবে মুখে কিছু না বললেও এ মরসুমের রঞ্জি অভিযানে ভেসে থাকতে ম্যাচটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্র্যাকটিসেই বুঝিয়ে দেন লক্ষ্মী। সতীর্থদের তাতাতে এক সময় অধিনায়ক নিজেই ফিল্ডিং প্র্যাকটিস করাতে শুরু করেন প্রীতম চক্রবর্তী, শ্রীবত্স গোস্বামীদের। সঙ্গে অশোক দিন্দা। যাঁকে নিয়ে ড্রেসিংরুমে গুমোট আবহাওয়া কাটাতে নেমে পড়েছিলেন এ দিন কোচ আর ক্যাপ্টেন। নেটে তখন অভিমন্যু ঈশ্বরন আর অরিন্দম দাসকে বোলিং করাতে ব্যস্ত স্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ী, ইরেস সাক্সেনা আর অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন পেসার বীরপ্রতাপ সিংহ আর সৌরভ সরকারও। ইরেস আর অমিতকে দীর্ঘক্ষণ বল করতেও দেখা গেল নেটে। তিন স্পিনারে খেললে সৌরাশিসের সঙ্গে যে দু’জনের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে সব কিছুই নির্ভর করবে বাংলা মঙ্গলবার কোন উইকেটে শেষ পর্যন্ত নামবে সেটা ঠিক হওয়ার পর। এ দিন প্র্যাকটিসের মধ্যেই গ্রিন টপে যেমন রোলার চলল, তেমনই পাটা উইকেটে কিছুটা ঘাসও ছাঁটা হল। বাংলার কোচ, ক্যাপ্টেন অবশ্য দু’বার দেখেও আসেন পাটা পিচই। তাতেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। শোনা গেল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার সকালে মাঠে আসতে পারেন। সিএবি যুগ্মসচিব সব দেখার পরই পিচের ব্যাপারটা ঠিক হতে পারে।
জম্মু-কাশ্মীর শিবিরের অবশ্য পিচ নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তা নেই। পরভেজদের কোচ প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সুনীল জোশী তো ঘূর্ণি পিচে বাংলা তাঁদের ফেলার কথা ভাবছে শুনে বলেই দিলেন, “তাই নাকি, জানতাম না এটা। সেটা হলে তো খুব ভাল খবর। আমরা জানতাম স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হবে। উইকেট এখনও দেখিনি। কাল তো ওদের বলতেই হবে কোন উইকেটে খেলা হবে। তার পর দেখব।” এ দিন প্র্যাকটিসের মধ্যেই ফিল্ডিং করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের আদিত্য প্রতাপ সিংহের ডান হাতের আঙুলে চোট লাগে। সুনীল অবশ্য বললেন, “ওটা বড় কোনও ব্যাপার না, চোট লাগতেই থাকে। গুরুতর কিছু নয়। আমরা সবচেয়ে বেশি ফোকাস করছি ভাল পারফর্ম করার উপর।”
ঠিক যে বিশল্যকরণীর খোঁজে এখন বাংলা।
আর ম্যাচ খেলতে চায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy