Advertisement
E-Paper

দুই ঠান্ডা মাথার ‘খুনি’র জন্যই ফাইনালে এগিয়ে ভারত

এ রকম একজন ঠান্ডা মাথার ‘খুনি’ দলে থাকলে বিপক্ষের গলা টিপে ধরা নিয়ে আর চিন্তা কীসের? সে তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন। টিম ইন্ডিয়ার এ রকমই অবস্থা। দলে বিরাট কোহলির মতো মাস্তান ব্যাটসম্যান থাকলে কোনও রান তাড়া করাই বোধহয় ভারতের পক্ষে আর কঠিন নয়।

দীপ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:০৫
বিরাট-উন্মাদনা। ম্যাচ শেষে কোহলিকে নিয়ে যুবরাজ, ধোনি। ছবি: এএফপি।

বিরাট-উন্মাদনা। ম্যাচ শেষে কোহলিকে নিয়ে যুবরাজ, ধোনি। ছবি: এএফপি।

এ রকম একজন ঠান্ডা মাথার ‘খুনি’ দলে থাকলে বিপক্ষের গলা টিপে ধরা নিয়ে আর চিন্তা কীসের? সে তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন। টিম ইন্ডিয়ার এ রকমই অবস্থা। দলে বিরাট কোহলির মতো মাস্তান ব্যাটসম্যান থাকলে কোনও রান তাড়া করাই বোধহয় ভারতের পক্ষে আর কঠিন নয়।

ধোনির ভাগ্য ভাল। এ রকম আরও একজন ‘খুনি’-কে এ দিন পেয়ে গেল ক্যাপ্টেন কুল। বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা যখন নির্দয় ভাবে পেটাচ্ছে, তখন মাথা ঠান্ডা রেখে তাদের প্যাভিলিয়নে পাঠানোর কাজটা করল রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চাপের মুখে শুক্রবার মিরপুরে এই দুই খুনে ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স দেখার পর ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতকে এগিয়ে রাখতেই হবে।

টিভিতে ভারতের রান তাড়া করা দেখতে দেখতে যখন নিজেই টেনশনে পড়ে যাচ্ছিলাম, তখন কোহলিকে দেখে কম অবাক হইনি। শের ই বাংলা স্টেডিয়ামের এই উইকেটে ১৭২ রানের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে নেমেও ওর মাথাটা কেমন বরফের মতো ঠান্ডা! সারা ভারতের হৃদ্পিণ্ডের গতি যেখানে ক্রমশ বাড়ছে, সেখানে ওই ছেলেটা অম্লান বদনে ডেল স্টেইনের একটার পর একটা বল বাউন্ডারি পার করে দিচ্ছিল। যা দেখে শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছিল, কী আত্মবিশ্বাস!

কোহলির এই আত্মবিশ্বাসটাই ভারতকে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে দিল। লোকে বলে টি-টোয়েন্টি আসলে ক্রিকেটের ব্যাকরণকে বুড়ো আঙুল দেখানোর খেলা। যাঁরা এই কথা বলেন, কোহলির এই ব্যাটিং দেখার পর তাঁরা আর তা বলবেন না বোধহয়। একটাও অক্রিকেটীয় বা ভুল শট নেই গোটা ইনিংসে। যে বলটা ঠিক যে ভাবে মারা দরকার, সে ভাবেই খেলে গেল। আর বেসিকটা ঠিক রেখে ব্যাট করা মানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও কম। সে জন্যই ওকে শেষ পর্যন্ত টলাতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। সে স্টেইন হোক বা ইমরান তাহির।

ফাইনালে ভারত। সবিস্তার...

আর কোহলি যদি মহানায়ক হয়, তা হলে এই ম্যাচের আর এক নায়ক অবশ্যই রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’শো তোলাটা কিন্তু আটকে দিল অশ্বিনই। আর যে বলটায় হাসিম আমলার স্টাম্প ছিটকে গেল, সেটা অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। কোনও বিশেষজ্ঞ লেগস্পিনারও এমন বল করতে পারবে কি না, সন্দেহ আছে। বলটা লেগস্টাম্পের বাইরে পড়ে যে ভাবে টার্ন করে ঢুকল, তা অবিশ্বাস্য। ক্রিকেটের ব্যাকরণ দিয়ে এমন বলের রহস্যভেদ করা যাবে না বোধহয়। সারা টুর্নামেন্টেই ভাল বল করে চলেছে অশ্বিন। যখনই ধোনি ওর হাতে বল তুলে দিয়েছে কোনও বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য, তখনই ও সেটা করে দেখিয়েছে। শুক্রবারও সেটাই হল। সমানে নিখুঁত লাইন রেখে গেল। তাও আবার কোন পরিস্থিতিতে? মোহিত শর্মা যখন আগের ওভারটায় ও রকম মার খেল, ঠিক তার পরই। ওই সময় অশ্বিন ও রকম একটা স্পেল না করলে ভারতের কাজটা কিন্তু আরও কঠিন হয়ে যেত।

শুক্রবার ধোনির আসল তাসটা কাজে আসেনি। অমিত মিশ্রকে পিটিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। ওদের দলে বেশ কয়েক জন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান আছে। যার জন্য জাডেজাকেও পরের দিকে আর আক্রমণে আনতে পারেনি ধোনি। তাই অশ্বিনের রোলটা এ দিন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অশ্বিনের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা হচ্ছিল। ও সে ভাবে উইকেট পাচ্ছিল না। অশ্বিনের একটা গুণ ওকে কিন্তু বাকিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে রাখে। সেটা হল, চাপ সামলানোর মানসিকতা। এই ধরনের প্রেশার-ম্যাচে এই টেম্পারমেন্ট বজায় রাখাটাই আসল ব্যাপার। টি টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটসম্যান তো মারবেই। কিন্তু মার খেয়ে ঘাবড়ে গিয়ে আরও মার খাওয়ার বল দিলেই তো বিপত্তি। এই অবস্থায় চাপ সামলানোর এই মানসিক শক্তিটা না থাকলে ডুবতে হয়। অশ্বিনের সেটা আছে বলে ও এই চাপটাও সামলে নিল। ঠিক যেমন ব্যাটিংয়ের সময় করল কোহলি।

deep dasgupta icc world t20
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy