Advertisement
E-Paper

প্রায় এক দশক পর চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমক মৌমার

নয় বছর পর আবার আলোয় ফিরলেন মৌমা দাস। পুদুচেরিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মৌমা যাঁকে হারালেন তিনিও বাংলার আর এক তারকা। পৌলমী ঘটক। দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর বোর্ডের দু’পাশে দাঁড়িয়ে করা ধুন্ধুমার ‘যুদ্ধ’ শনিবাসরীয় বিকেলে হয়ে উঠেছিল চমকপ্রদ এবং আকর্ষণীয় একটা মঞ্চ। দুই বঙ্গললনার লড়াই এত উচ্চতায় উঠেছিল যে একটা সময় মনে হচ্ছিল হয়তো জিতবেন পৌলমী। পরক্ষণেই আবার মৌমা ফিরে আসছিলেন লড়াইতে। শেষ পর্যন্ত মধ্যমগ্রামের মেয়েই শেষ হাসি হাসেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০২

নয় বছর পর আবার আলোয় ফিরলেন মৌমা দাস। পুদুচেরিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মৌমা যাঁকে হারালেন তিনিও বাংলার আর এক তারকা। পৌলমী ঘটক। দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর বোর্ডের দু’পাশে দাঁড়িয়ে করা ধুন্ধুমার ‘যুদ্ধ’ শনিবাসরীয় বিকেলে হয়ে উঠেছিল চমকপ্রদ এবং আকর্ষণীয় একটা মঞ্চ।

দুই বঙ্গললনার লড়াই এত উচ্চতায় উঠেছিল যে একটা সময় মনে হচ্ছিল হয়তো জিতবেন পৌলমী। পরক্ষণেই আবার মৌমা ফিরে আসছিলেন লড়াইতে। শেষ পর্যন্ত মধ্যমগ্রামের মেয়েই শেষ হাসি হাসেন।

বন্ধু পৌলমীকে হারিয়েই যেন নতুন জীবন ফিরে পেলেন বলে মনে করছেন পাঁচ বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। এ দিনের জয়ের পর পুদুচেরি থেকে উচ্ছ্বসিত মৌমা ফোনে বলছিলেন, “ন’বছর পর চ্যাম্পিয়ন হলাম। কাজটা এত সহজ ছিল না। তবে প্রমাণ হল কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় থাকলে সবকিছুই সম্ভব।”

শুধু মৌমাই নন। পুরুষ বিভাগেও চ্যাম্পিয়ন হলেন বাংলার সৌম্যজিত্‌ ঘোষ। মৌমা, পৌলমী, সৌম্যজিতরা অবশ্য কেউই জাতীয় টিটিতে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেননি। করেছিলেন তাঁদের অফিস টিম পিএসপিবি-র হয়ে। স্বভাবতই খাতায় কলমে বাংলা নয়, জাতীয় টিটিতে পিএসপিবি-রই রমরমা। তবে বাংলার ছেলেমেয়েদের হাত ধরেই।

মৌমা এবং পৌলমী যত ভাল বন্ধুই হন না কেন, টেবল টেনিস বোর্ডে কিন্তু একে অপরকে বড় ‘শত্রু’ বলেই মনে করেন। চূড়ান্ত পেশাদার মানসিকতায় নিজেদের জয়টুকু ছাড়া তখন কিছুই ভাবেন না। শনিবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। এ দিন পৌলমীর সামনে ইন্দু পুরীর রেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি ছিল। সর্বোচ্চ আট বার জাতীয় টিটি চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ড করেছিলেন ইন্দু পুরী। পৌলমী সেখানে সাত বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কিন্তু মৌমার কাছে শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করতে হল টালিগঞ্জের মেয়েকে। আর মৌমার সামনে লক্ষ্য ছিল, ন’বছর পর আবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর। এ দিন পৌলমীকে হারানোর পর মৌমা বলছিলেন, “পৌলমীর কাছে পিছিয়ে পড়ার পর মনে হচ্ছিল হেরেই যাব। আসলে শুরুতে আমি খুব তাড়াহুড়ো করছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের নার্ভ শান্ত করার পর ম্যাচে ফিরি।” উল্টোদিকে প্রথম দু’গেমে এগিয়ে থাকার পরও হেরে যাওয়ায় রীতিমতো হতাশ পৌলমী। বলছিলেন, “খুবই খারাপ লাগছে। এতটা এগিয়ে গিয়েও যে হেরে যাব ভাবিনি। দু’গেমের পর ভেবেছিলাম রেকর্ডটা ছুঁয়ে ফেলব।”

৬-১১, ৮-১১-তে পিছিয়ে পড়েও শুধুমাত্র মনের জোর এবং ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা নিয়ে ১১-৩, ১৪-১২, ১১-৭, ১১-৬ ম্যাচ মুঠোয় পুরে ফেলেন মৌমা। প্রায় এক দশক পর আবার জাতীয় টিটি-তে চ্যাম্পিয়ন? এই সাফল্যের রসায়ন কী? “অনেকদিন ধরে নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম। প্র্যাকটিস এবং ম্যাচের সময় আমার ফুট ওয়ার্ক, শট নেওয়ার পদ্ধতি এবং খেলার ধরনসব কিছুর ভিডিও তুলে রাখি ইউটিউবে। আমার দুই কোচ স্পেনের পিটার অ্যাঙ্গেল এবং এখানকার অভিজিত্‌ চৌধুরী সেটা দেখে ব্যাখ্যা করে বলে দেন, কোথায় আমি ভুল করছি বা কোথায় পরিবর্তন দরকার,” ফোনের ওপারে মৌমার গলাতে তখন উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া। আর ইন্দু পুরীর রেকর্ড না ছুঁতে পেরে বার বার আফসোস করছিলেন পৌলমী। “এ বার পারলাম না। একে দুভার্গ্য ছাড়া কী বা বলব!”

পুরুষদের বিভাগে সৌম্যজিত্‌ হারিয়েছেন পিএসপিবি-রই গন্নাশেখরন সাথিয়ানকে। ফল ১১-০৭, ৯-১১, ১১-৩, ১৩-১১, ১৩-১৫, ১১-৯। মহিলাদের ডাবলসে শামিনির সঙ্গে মৌমা পিএসপিবি-কে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। অ্যান্থনি অমলরাজ, সানিল শেট্টির হাত ধরে ছেলেদের ডাবলসেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিএসপিবি। মিক্সড ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরবিআই।

table tennis mouma das champion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy