Advertisement
০৮ মে ২০২৪
আটলেটিকোর ভুলে লা ডেসিমা রিয়ালের

প্রথা ভেঙে দেবীর গলায় মাফলার পরালেন র‌্যামোস

শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি যার হাতেই উঠুক না কেন, জয়টা মাদ্রিদেরই হত। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে শহরটার সেলিব্রেশন কী রকম হতে পারে, কলকাতার ফুটবল-পাগল মানুষ ভালই বুঝবেন। শনিবার সন্ধে থেকে শহরের সব ক’টা বার, রেস্তোরাঁ, পিৎজা পার্লারে থিকথিক করছিল ফুটবলপ্রেমীর ভিড়ে।

ক্যাপ্টেন কাসিয়াস নয়। দেবীর গলায় মাফলার পরাচ্ছেন র‌্যামোস। ছবি:কাঞ্চন সরকার।

ক্যাপ্টেন কাসিয়াস নয়। দেবীর গলায় মাফলার পরাচ্ছেন র‌্যামোস। ছবি:কাঞ্চন সরকার।

কাঞ্চন সরকার
মাদ্রিদ শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০৩:৩৯
Share: Save:

শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি যার হাতেই উঠুক না কেন, জয়টা মাদ্রিদেরই হত। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে শহরটার সেলিব্রেশন কী রকম হতে পারে, কলকাতার ফুটবল-পাগল মানুষ ভালই বুঝবেন। শনিবার সন্ধে থেকে শহরের সব ক’টা বার, রেস্তোরাঁ, পিৎজা পার্লারে থিকথিক করছিল ফুটবলপ্রেমীর ভিড়ে। এখানে ন্যাশনাল টিভিতে ম্যাচটা দেখিয়েছে, কিন্তু একটা বড় দলে ম্যাচ দেখার মজা আলাদা। রাত একটু বাড়তে সেই ভিড় থেকে আটলেটিকো জার্সিগুলো যেন অদৃশ্য হতে থাকল।

ম্যাচটা যখন শেষ হল, মাদ্রিদে তখন প্রায় মাঝরাত। শহর জুড়ে তখন রিয়ালের সাদা জার্সির ঢেউ, আর ‘চ্যাম্পিয়ন...চ্যাম্পিয়ন’ চিৎকারে যেন সমুদ্রগর্জন। ৯৩ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থেকে লা ডেসিমা জেতার আনন্দটা একটু বেশি তো হবেই! জানেন, আজ স্পেনে ভোট। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বলা হয়েছিল, যাবতীয় উৎসব যেন ভোর চারটের মধ্যে শেষ করা হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটাতেও ভিড় একটুও কমেনি। এখানে এখন প্রচণ্ড ঠান্ডা, কিন্তু সে সবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাদ্রিদের মানুষ রাস্তায় সারা রাত, প্রায় সারা সকাল কাটিয়ে দিল। আমরা জনাদশেক বাঙালিও ছিলাম তার মধ্যে! মাদ্রিদে আমরা প্রায় সব বাঙালিই রিয়ালের সমর্থক হলেও কলকাতায় হয়তো অনেকেই সৌরভের সঙ্গে আইএসএলের দল কেনায় আটলেটিকোর জয় চেয়েছিল। ফেসবুকে দেখলাম সৌরভ, ডোনাও লিসবনে ম্যাচ দেখতে এসেছিল। তাই ‘দাদার’ জন্য খারাপ লাগছে।

ট্রফি জিতেই বান্ধবী ইরিনাকে

নিয়ে সিআর সেভেন। ছবি: টুইটার।

রিয়ালের আনুষ্ঠানিক সেলিব্রেশন বরাবর যেখানে হয়, সেই প্লাজা ডে সিবেলেসে রোনাল্ডোরা এসে পৌঁছল প্রায় সকাল সাতটায়। বের্নাবাও থেকে হুডখোলা বাসে ওদের শোভাযাত্রা দেখতে ওই ভোরেও হাজির হয়েছিল প্রায় হাজার পঁচিশেক সমর্থক। প্লাজায় গ্রিক দেবী সিবেলেসের যে মূর্তিটা আছে, সাধারণত তার গলায় টিমের মাফলার জড়িয়ে দেন রিয়াল ক্যাপ্টেন ইকার কাসিয়াস। রবিবার কিন্তু সেই দায়িত্ব দিয়ে দিলেন সের্জিও র্যামোসকে। র্যামোসের গোলেই তো রিয়ালের ম্যাচে ফেরা। আর একটা জিনিস দেখে খুব ভাল লাগল। কোপা দেল রে জিতে রিয়ালের ফুটবলাররা তাঁদের ভক্তদের উদ্দেশ্যে কিছুই বলেননি। যাতে ভক্তরা বেশ দুঃখ পেয়েছিল। এ দিন কিন্তু কাসিয়াস থেকে রোনাল্ডো, মদরিচ থেকে মার্সেলো সবাই প্রাণ খুলে রিয়াল সমর্থকদের ধন্যবাদ দিয়ে দিলেন। রিয়াল ফাইনালে ওঠার পর থেকে এখানে একটা স্লোগান তৈরি হয়েছিল, ‘কেন আমি বিশ্বাস করব না যে আমি দশ নম্বরটা জিততে পারি?’ কাসিয়াস ওর বক্তৃতায় স্লোগানটা বলায় গোটা প্লাজা সিবেলেস ফেটে পড়ল।

উৎসব কিন্তু এখানেই শেষ হচ্ছে না। রবিবার এখানকার সময়ে সন্ধে সাড়ে আটটা নাগাদ মাদ্রিদের মেয়রের হেড অফিসে কাপ-সহ আসছে গোটা টিম। তার পর আরও সব অনুষ্ঠান। প্লাজা সিবেলেস থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেখলাম, রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি হচ্ছে রিয়ালের জার্সি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ তো কী, মাদ্রিদের উৎসব সবে শুরু!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

champions league sergio ramos
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE