রাসেল
রাজস্থান রয়্যালস: ১৭০-৬ (২০ ওভার)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬০-৬ (২০ ওভার)
হারাকিরি বলে একটা শব্দ আছে। এত দিন লোককে সেটা বলতে শুনতাম। আজ মোতেরায় কেকেআরকে দেখে শব্দটার মানেও বুঝে গেলাম।
মাত্র দু’রানের মধ্যে যদি একটা টিমের ছ-ছ’টা উইকেট উড়ে যায়, হাতে দশ উইকেট নিয়ে যদি একটা টিম ছ’ওভারে ৬০ তুলে আসতে না পারে সেই টিমটা কী করতে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছে? আমি পাড়া ক্রিকেটে পর্যন্ত মনে করতে পারছি না কোনও টিমকে ১২১-০ থেকে ১২৩-৬ হয়ে যেতে দেখেছি বলে। আরে, পাড়া ক্রিকেটেও এ জিনিস করলে পরের দিন মাঠে ঢুকতে পারবে না। নাইট রাইডার্স কলকাতার টিম। আবেগ আমারও আছে টিমটাকে নিয়ে। কিন্তু একজন ক্রিকেটার হিসেবে আজকের পর আর বলতে পারব না, টিমটা প্লে অফে ওঠার যোগ্য।
উথাপ্পা, ইউসুফ পাঠান, মণীশ পাণ্ডে এদের মানসিকতা দেখে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। কারও কোনও প্ল্যানিং বলে বস্তু নেই। রবিন উথাপ্পা চোখের সামনে দেখল যে, এক বল আগেই গম্ভীর আউট হল। দেখল যে, আন্দ্রে রাসেলকে নামানো হল চালানোর জন্য। উথাপ্পা জানে যে, ওর কাজটা শিট অ্যাঙ্করের। তার পরেও ও চালাতে গেল! ভারতীয় ক্রিকেটের পরিপ্রেক্ষিতে উথাপ্পা কিন্তু জুনিয়র নয়। যথেষ্ট সিনিয়র। চোদ্দো ওভার খেলে ও ভাবে আউট হওয়াটা অন্যায় নয়, অপরাধ। মণীশ পাণ্ডে? তাম্বেকে দেখেই ক্রিজ ছেড়ে বেরোল। যেটার কোনও যৌক্তিকতা নেই। ওই ওভারটার আগে তিন ওভারে ২৪-২৫ দিয়েছিল তাম্বে। মণীশ, তা হলে ওই ওভারটার সময় কে চাপে ছিল? তুমি, না তাম্বে? সেখানে তাম্বে হ্যাটট্রিক করে চলে গেল। ইউসুফ পাঠানের কথা যত কম বলা যায়, তত ভাল। যে দিন লাভ নেই সে দিন ছক্কা মারবে। যে দিন প্রয়োজন, সে দিন বোলারকে লোপ্পা দিয়ে চলে যাবে। টিমের অসম্ভব প্রয়োজনের সময় আজ কত করল ইউসুফ? না প্রথম বলে তাম্বেকে কট অ্যান্ড বোল্ড উপহার!
পাণ্ডে
দুশখাতে
সোমবারের এই ধাক্কা কী ভাবে সামলাবে কেকেআর?
মাইক হর্নকে ডাকতে পারে। ওরা তো হর্নকে মোটিভেটর হিসেবে নিযুক্ত করেছে। সত্যি বলতে, মাইক হর্নের কাজটা আজ থেকেই শুরু হল। কারণ পরের ম্যাচ থেকে কেকেআরের সমস্যা যত না হবে ক্রিকেটীয়, তার চেয়েও বেশি মানসিক। এর পর থেকে ম্যাচে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে পড়লেই তো মনে হতে থাকবে, রাজস্থানের বিরুদ্ধে নিশ্চিত ম্যাচটাই জিতে আসতে পারলাম না, আর এটা পারব? তাই মাইক হর্ন চেষ্টাচরিত্র করেও কতটা কী করতে পারবেন, বলা কঠিন। হর্ন তো আর হ্যারি পটার নন!
আসলে কী জানেন, টিমটা যেমন ম্যাচের পর ম্যাচে ‘আত্মহত্যা’ করতে ব্যস্ত, ওদের সাপোর্ট স্টাফও তাই। বেলিস, দাহিয়া, ডব্লিউ ভি রামন এঁরা। ভাবতে পারেন, টুর্নামেন্টের সাত-সাতটা ম্যাচের পরেও টিমটা কোনও সেট ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করে উঠতে পারল না? প্লেয়িং ইলেভেনে কোন চার জন বিদেশি খেলবে, সেটা বুঝে উঠতে পারল না? কোনও দিন দেখছি জাক কালিস তিন নম্বরে নামছে। কোনও দিন দেখছি ওপেন করছে। কোনও দিন চারে। আজ আবার বাদ। রায়ান টেন দুশখাতে এবং আন্দ্রে রাসেল দু’জন একই ধরণের ক্রিকেটার জেনেও আজ কালিসকে বসিয়ে দু’জনকেই খেলিয়ে দেওয়া হল। কালিস থাকা মানে চারটে ওভার করে দেবে, আবার টপ অর্ডারে ব্যাটটাও করতে যাবে। শুধু তাই নয়, ফর্মে থাকা সূর্যকুমার যাদবের আগে গেল ইউসুফ পাঠান। কোনও যুক্তি আছে? গম্ভীর না হয় নিজের ফর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিল। আর সবই যদি ক্যাপ্টেন করবে, তা হলে সাপোর্ট স্টাফের থেকে কাজ কী? অবাক লাগছে দেখে যে, ১৬ এপ্রিল টুর্নামেন্ট শুরুর দিনে টিমটা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল, আজও সেখানেই দাঁড়িয়ে। বিন্দুমাত্র উন্নতি নেই।
হাফসেঞ্চুরি করে কেকেআর অধিনায়ক।
সোমবার রাতে ইন্টারনেট খুলে যে হিসেব দেখছি তাতে মনে হচ্ছে, কেকেআরকে যদি প্লে অফে এর পর একেবারে নিশ্চিত ভাবে যেতে হয় তা হলে বাকি সাতটা ম্যাচের মধ্যে সাতটাই জিততে হবে। সাতটার মধ্যে ছ’টা জিতলে তখন আবার নেট রান রেটের প্রশ্ন চলে আসবে। অতীতে দেখেছি এ রকম অবস্থা থেকেও প্লে অফে গিয়েছে টিম। নিরপেক্ষ ভাবে দেখলে কাজটা অসম্ভব নয়। কিন্তু যে টিমের ২ রানে ৬ উইকেট চলে যায়, জেতার মতো অবস্থায় পৌঁছে গিয়ে শেষ পর্যন্ত একরাশ বিদ্রূপ নিয়ে ফিরে আসে তাদের উপর আমার অন্তত বাজি ধরার সাহস নেই।
ছবি: বিসিসিআই
৯ বল ২ রান ৬ উইকেট
বোলার ওয়াটসন
১৪.১ গম্ভীর আউট (৫৪)। অফে ড্রাইভ মারতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে কট বিহাইন্ড। কেকেআর ১২১-১
১৪.২ রাসেল। ১ রান
১৪.৩ উথাপ্পা আউট (৬৫)। স্লোয়ারে ডিপ স্কোয়ার লেগে উঁচু ক্যাচ। কেকেআর ১২২-২
১৪.৪ রাসেল। ডট বল
১৪.৫ রাসেল আউট (১)। স্লোয়ার ডেলিভারির লাইন মিস করে বোল্ড। কেকেআর ১২২-৩
১৪.৬ সাকিব। ডট বল
বোলার তাম্বে
১৫.১ ওয়াইড বল। মণীশ আউট (০)। স্টেপ আউট করতে গিয়ে স্টাম্পড্। কেকেআর ১২৩-৪
১৫.১ পাঠান আউট (০)। ফুল লেংথ বলে ড্রাইভ মারতে গিয়ে বোলারকে ফিরতি ক্যাচ। কেকেআর ১২৩-৫
১৫.২ দুশখাতে আউট (০)। এলবিডব্লিউ। কেকেআর ১২৩-৬
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy