Advertisement
E-Paper

ফিরল কোহলি-ঝড় সিরিজ জিতল ভারত

বিরাট কোহলি বোধহয় ওঁদের খুশি করতে পারেননি। কারা? যাঁরা ধর্মশালা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন পাহাড়ের সৌন্দর্য ও ক্রিকেট একসঙ্গে উপভোগ করতে। যতক্ষণ ব্যাট হাতে ক্রিজে ছিলেন কোহলি, ততক্ষণ বিশাল ধৌলাধারের দিকে তাকানোর সুযোগই কেউ পেয়েছে বলে মনে হয় না।

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৪০
কোহলি: ১১৪ বলে ১২৭

কোহলি: ১১৪ বলে ১২৭

বিরাট কোহলি বোধহয় ওঁদের খুশি করতে পারেননি।

কারা?

যাঁরা ধর্মশালা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন পাহাড়ের সৌন্দর্য ও ক্রিকেট একসঙ্গে উপভোগ করতে।

যতক্ষণ ব্যাট হাতে ক্রিজে ছিলেন কোহলি, ততক্ষণ বিশাল ধৌলাধারের দিকে তাকানোর সুযোগই কেউ পেয়েছে বলে মনে হয় না।

শুক্রবার তাঁর কামব্যাক ইনিংস ছিল এতটাই ঝোড়ো। স্থানীয় মানুষের ভাষায় ‘ধঁুয়াধার’। সুরেশ রায়নারও তাই। এই দু’জনের ব্যাটিং ঝড়েই বিদ্রোহের আগুনে জ্বলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেতিয়ে পড়ল। ধ্বংসস্তুপের মধ্যে প্রাণের সন্ধান পাওয়ার মতো মার্লন স্যামুয়েলসের সেঞ্চুরি ক্যারিবিয়ানদের আশার আলো দেখালেও লক্ষ্য এতটাই পাহাড়প্রমাণ যে, তা টপকানো তাঁর একার সাধ্য ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাই ৫৯ রানে ম্যাচ হেরে, সিরিজ হেরেই দেশে ফিরতে হচ্ছে।

অস্তগামী সূর্যের ছটায় তখন ধৌলাধার পর্বতের রঙ গাঢ় সোনালী। ডারেন ব্র্যাভোর ওভার থ্রোয়ের সুযোগে নেওয়া এক রানে যখন ওয়ান ডে-র কুড়ি নম্বর সেঞ্চুরি পূর্ণ করে দু’হাত তুলে আকাশের দিকে তাকালেন কোহলি, তখন ধৌলাধারের সেই রূপও যেন ম্লান। শৈলশহরে তখন কোহলিই বিরাট, পর্বতরাজ নন।

ভারতীয় ক্রিকেটের গ্ল্যামার-বয়ের ওই অভিব্যক্তিতে যতটা না আনন্দ ও তৃপ্তি, তার চেয়ে বেশি স্বস্তি। আগের দিনই যে এক-ঘর সাংবাদিকের সামনে বলে গিয়েছেন, “আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।” আগের দিন কোহলি নিজে যা বলেছিলেন, পরের দিন তাঁর ব্যাটও সেই কথাই বলল।

বোর্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জেরে ক্যারিবিয়ানরা অন্যমনস্ক, গা-ছাড়া মনোভাব তাঁদের যত সমালোচনাই হোক না কেন, বিরাট কোহলির এই সেঞ্চুরির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক আছে বলে মনে হল না। আগের দিন যে ভাবে রবি শাস্ত্রীর তত্ত্বাবধানে টানা হুক আর পুল প্র্যাকটিস করেছেন। নেট থেকে বেরনোর পর তাঁকে দেখে ও তাঁর কথা শুনে যে রকম আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছিল, শুক্রবার মাঠেও সেই একই ছবি।

ক্যারিবিয়ান বোলাররা এ দিন তাঁদের সেরা ফর্মে থাকলেও হয়তো কোহলি তাঁদের ছেড়ে কথা বলতেন না। সে রকম প্রস্তুতি নিয়েই এ দিন মাঠে নেমেছিলেন। ১১৪ বলে যে ১২৭-এর ইনিংস খেললেন, তাতে ১৩টি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি। এ বছর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েলিংটন টেস্টে ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে সেঞ্চুরির আট মাস পর এ দিন তাঁর ব্যাটিংয়ে ফের সেই ফ্লেভার, ‘কোহলি ফ্লেভার’। ধর্মশালা দেখে নিল সচিনোত্তর ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা ব্যাটিং জাদুকরের সেই চেনা ম্যাজিক।

এই বাইশ গজে বল বুকের উচ্চতায় ঘন ঘন উঠবে ধরে নিয়ে আগের দিন শাস্ত্রীর হুক-পুল সেশন যে এ দিন কাজে লেগেছে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাহানে, ধবন, কোহলি, রায়না এ দিন বেশির ভাগ রানই অর্জন করলেন এই হুক-পুল থেকে। টেলর, হোল্ডার, রাসেলরা যত ভয়ঙ্কর হওয়ার চেষ্টা করলে, ততই আগ্রাসন দেখা গেল ভারতীয়দের ব্যাটে। কোহলির সঙ্গে রায়নার ৫৮ বলে ৭১ তারই নিদর্শন। রায়না-কোহলির ১৩৮ রানের পার্টনারশিপটাই ভারতকে তিনশোর গন্ডি পার করিয়ে দিল। শেষ দশ ওভারে ভারত যে ৯৪ তুলল, তাতেই অর্ধেক জয় মুঠোয় চলে আসে।

রবীন্দ্র জাডেজার ওয়ান ডে কেরিয়ারের জঘন্যতম বোলিং (২-৮০) ও বেশ খরুচে শামি (২-৭২) ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কিছুটা মাথা তোলার সুযোগ করে দিলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারেননি। ফিল্ডিংয়ের সময়ও প্রচুর ক্যাচ ফেলেছেন, মিস ফিল্ডিং করেছেন ব্র্যাভোরা। ব্যাটিংয়েও সেই একই ভরাডুবি দেখা গেল। যা পরিস্থিতি, তাতে এমনটাই হওয়া স্বাভাবিক ছিল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত ৩৩০-৬ (বিরাট ১২৭, রায়না ৭১),

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৭১ (স্যামুয়েলস ১১২, রাসেল ৪৬, ভুবনেশ্বর ২-২৫)।

rajib ghosh west indies dharamshala cricket india
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy