ফেডেরার-ভক্ষণের পরের দিন। ইতালির আন্দ্রেস সেপ্পি ব্যস্ত পিৎজা খাওয়ায়। শনিবার মেলবোর্নের এক রেস্তোরাঁয় বাণিজ্যিক প্রচার অনুষ্ঠানে। ছবি: রয়টার্স।
যাকে আগের দশটা ম্যাচে দশবারই হারিয়েছে ফেডেরার, তার কাছে একেবারে গ্র্যান্ড স্ল্যামে হারাটাই অস্ট্রেলীয় ওপেনের প্রথম সপ্তাহে সবচেয়ে বড় অঘটন। আমার কাছে অবশ্য ওরই সমান অপ্রত্যাশিত দ্বিতীয় রাউন্ডে নাদালের মেডিক্যাল টাইমআউট নিয়ে মানে কোর্টেই চিকিৎসকের শুশ্রূষা নিয়ে ক্র্যাম্প সারিয়ে পাঁচ সেটে জেতাটা। সে দিন মেলবোর্নে বিরাট ক্যামব্যাক করেছে নাদাল। অন্য তারকা বাছাইরা—ওয়ারিঙ্কা, মারে, নিশিকোরি, রাওনিক, বার্ডিচ সবাই নিজেদের র্যাঙ্কিং অনুযায়ী ভালই খেলে চলেছে এখনও পর্যন্ত।
কোচ হিসেবে বলতে পারি নোভাকও তিনটে ভাল ম্যাচ পেয়েছে। যেগুলো জেতার পথে নিজের ফর্ম আর ছন্দও খুঁজে পেয়েছে ও। বিশেষ করে শনিবার তৃতীয় রাউন্ডে ফেরনান্দো ভার্দাস্কোর বিরুদ্ধে। ফেরনান্দো এক সময়ের বিশ্বের প্রথম দশের প্লেয়ার। ম্যাচটা দু’জনের জন্যই বেশ কঠিন ছিল। এবং ফেরনান্দো এ দিন চমৎকার খেলেওছে। তবু নোভাক স্ট্রেট সেটে জেতায় ওর পক্ষে খুব ভাল হল। কারণ, টুর্নামেন্টের এই জায়গায় পৌঁছে তিন সেটে জেতা মানে তুমি যেমন নিজের শক্তি বাঁচিয়ে রাখলে পরের রাউন্ডের জন্য, তেমনি বেশি পরিশ্রমের থেকেও নিজেকে বাঁচালে!
মেয়েদের সিঙ্গলস থেকে প্রথম দিনেই ইভানোভিচের বিদায়ে আমি যথেষ্ট অবাক। তার পর শারাপোভাও প্রায় ছিটকে যেতে বসেছিল। পানোভার মতো এক জন কোয়ালিফায়ারের বিরুদ্ধে তিনটে পয়েন্ট বাঁচানো আমার মনে হয় শারাপোভার জীবনে কখনও ঘটেনি। ওজনিয়াকির দ্বিতীয় রাউন্ডেই দু’বারের অস্ট্রেলীয় ওপেন চ্যাম্পিয়ন আজারেঙ্কার সামনে পড়ে গিয়ে হারাটা আমার মতে কিছুটা দুর্ভাগ্যের। কারণ দুই মহিলার কাছেই এটা কঠিন ড্র দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। সুতরাং দু’জনের মধ্যে যে কোনও এক জন ফেভারিটকে তো দুর্ভাগ্যবশত বিদায় নিতেই হত। আর ঠিক সেটাই হয়েছে।
এমনকী সেরেনাকেও পরীক্ষা নিল শনিবারে ওর তৃতীয় রাউন্ডটা। অখ্যাত এলিনা ভিটোলিনাকে টপকাতে তিন সেটে লেগে গেল সেরেনার! মেলবোর্নে মেয়েদের সিঙ্গলসে ছেলেদের তুলনায় বেশি অবাক করা রেজাল্ট হচ্ছে। যেটা আমাকে বলতে বাধ্য করছে— মেয়েদের সার্কিটে পার্থক্যটা এই মুহূর্তে আরও নিকট থেকে নিকটতর। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশের সঙ্গে পরের কুড়ি-পঁচিশের মধ্যে পার্থক্যটা এখন আর তত বেশি নয়। নইলে গ্র্যান্ড স্ল্যামে আমরা এত ‘আপসেট’ ঘটতে দেখতে পেতাম না।
যদিও ওর মধ্যেই কেরবার, লিসিকি ও পেটকোভিচ—তিন জার্মান মেয়েকেই প্রথম রাউন্ডে হারতে দেখাটা আমার পক্ষে হতাশাজনক। পাশপাশি অবশ্য একটা আলোর সন্ধানও পাচ্ছি— সতেরো বছরের ক্যারিনা উইথোয়েফ্টের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠা। এটা দারুণ ব্যাপার। জুলিয়া গোয়েরজেস-ও চতুর্থ রাউন্ডে উঠল। যার মানে, সৌভাগ্যক্রমে আমাদের একটা জার্মান মেয়ে টুর্নামেন্টে এখনও টিকে! তবে পুরুষ সিঙ্গলস নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা টুর্নামেন্ট দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়ার মুখেও আমার জন্য বেশ কঠিন ব্যাপার।
তার ওপর আমি আবার জকোভিচের কোচ। বুঝতেই পারছেন, ছাত্রের বিরুদ্ধে আমি বেটিং করব না। বরং অবশ্যই আশা রাখব, ড্রয়ের ‘টপ হাফ’ থেকে নোভাক চূড়ান্ত রাউন্ডে পৌঁছবে। নীচের অর্ধের দু’জন সবচেয়ে শক্তিশালী প্লেয়ার এখন নাদাল আর মারে। আমার আশা ওদের দু’জনের মধ্যে কেউ এক জন ফাইনালে নোভাকের মুখোমুখি হবে। অন্তত পরিকল্পনাটা সেই রকমই। আর মেয়েদের সিঙ্গলসে আমার ভবিষ্যদ্বাণী সেরেনা বনাম মারিয়া ফাইনাল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy