মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বোর্ডসচিব সঞ্জয় পটেলের যে বক্তব্য শুনলাম, তাতে পরিষ্কার, বিশ্বকাপ ২০১৫-র কথা ভেবেই মোহিত শর্মা, ধবল কুলকার্নি, সঞ্জু স্যামসন, কর্ণ শর্মার মতো তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের দল গড়া হয়েছে।
ছ’মাস পরই তো ধোনিকে বিশ্বখেতাব রক্ষার লড়াইয়ে দল নিয়ে নামতে হবে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে। তাই বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়ে এখন দল বাছাই স্বাভাবিক। সে দিক থেকে এই দলে সঞ্জু স্যমসনের আসাটা বেশ ইতিবাচক ঘটনা। ঋদ্ধিমানের যেহেতু চোট, তাই এই মুহূর্তে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ওর চেয়ে ভাল কেউ নেই। তা ছাড়া ভারত ‘এ’ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ান ডে সিরিজে এত ভাল ব্যাট করেছে ছেলেটা। আইপিএলেও বিশ্বসেরা বোলারদের বিরুদ্ধে ভাল ব্যাট করেছে। ধোনির জায়গায় ভারত বিকল্প হিসেবেও একজন ভাল উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান পাবে।
তবে বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়েই আমার মনে হল, এই দলে গৌতম গম্ভীর থাকলে বোধহয় ভাল হত। দলে ওপেনার বলতে ধবন, রোহিত ও রাহানে। প্রথম জন যে ভাল ফর্মে আছে, তা এখন বলা যাচ্ছে না। রোহিতও খুব একটা ধারাবাহিক নয়। এই অবস্থায় গম্ভীরের মতো একজন ব্যাক আপ ওপেনারকে দলে দরকার ছিল।
সবচেয়ে বড় কথা, গম্ভীর এখন ইংল্যান্ডে আছে। কাগজে, টিভিতে দেখছি, ওকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে নামানোর একটা তোড়জোড় চলছে। তখন ওকে টেস্ট সিরিজের পর দেশে ফেরৎ পাঠানোর যুক্তিটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। গম্ভীর যদি শেষ দুই টেস্টে খেলে ও রানে ফিরে আসে, তা হলে ভারতীয় দলে ওর চেয়ে ভাল ওপেনার আর কে হতে পারে?
তবে এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে, এখানেই ওর ওয়ান ডে কেরিয়ার শেষ। মনে রাখবেন, এ বার সম্ভবত ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ান ডে ও টি টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়ে যাবে সবার আগে। বিশ্বকাপের দল বাছাইয়ের সময় ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক ফর্ম দেখে নেওয়ার জন্যই এই প্রথাবদল। তাই বিজয় হাজারে ট্রফিতে ভাল পারফম্যান্স দেখিয়ে বিশ্বকাপ দলে ফেরার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে গম্ভীরের। মনোজ তিওয়ারির ক্ষেত্রেও একই কথা বলতে পারি। তবে ওকে তাকিয়ে থাকতে হবে রায়ডু-রায়নাদের পারফরম্যান্সের উপর।
হরভজন সিংহকেও কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আইপিএলে বেশ ভাল বল করেছে হরভজন। ঘরোয়া মরসুমেও ভাল বল করতে পারলে ওকে নিয়ে ভাবার যথেষ্ট কারণ থাকবে। তবে এই সম্ভাবনাটা যুবরাজ সিংহর ক্ষেত্রে খুব একটা বেশি দেখছি না। আইপিএলে শেষ খেলেছে ও। ব্যাটে যে প্রচুর রান ছিল, তাও না। আইপিএলের পর লর্ডসে এমসিসি-র ম্যাচে ১৩২ করল। কিন্তু ইংল্যান্ডে গিয়েও কেন কাউন্টি ক্রিকেটে খেলল না, ভেবে বেশ অবাক হচ্ছি। হরভজনকেও তো গত দু’মাসে ক্রিকেট মাঠে দেখাই যায়নি। কোনও ক্রিকেটারকে দলে নিতে গেলে নির্বাচকদের অন্তত সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের একটা ছবি প্রয়োজন, যা ওদের প্রায় নেই বললেই চলে। সেই জন্যই যুবি, ভাজ্জিরা বোধহয় দৌড়ে অনেকটা পিছনে চলে গিয়েছে।
সঞ্জু স্যামসন বয়স ১৯ বছর ২৬৭ দিন
অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজে
ম্যাচ ৭, রান ২৪৪, গড় ৮১.৩, সর্বোচ্চ ৮১, ক্যাচ ৫, স্টাম্প ২।
আইপিএল ২০১৪
ম্যাচ ১৩, রান ৩৩৯, সর্বোচ্চ ৭৪, গড় ২৬.০৭, স্ট্রাইক রেট ১২৪.১৭, ক্যাচ ৫, স্টাম্প ২।
ভারতীয় দল
ধোনি (ক্যাপ্টেন), কোহলি (ভাইস ক্যাপ্টেন), ধবন, রোহিত, রাহানে, রায়না, জাডেজা, অশ্বিন, বিনি, ভুবনেশ্বর, শামি, মোহিত, রায়ডু, উমেশ, ধবল, সঞ্জু, কর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy