বিদায়বেলার স্মৃতিগুলো বোধহয় আর ফ্রেমবন্দি করে রাখা গেল না! বরং ফিনিশিং লাইনের দোরগোড়ায় এসে স্বপ্নভঙ্গ হোসে রামিরেজ ব্যারেটোর।
যে কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে ভবানীপুরকে আই লিগের মূল পর্বে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ব্যারেটো, তা ফিকে হয়ে গেল চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে রয়্যাল ওয়াহিংদোর কাছে ২-৩ হেরে। আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিশনে শুক্রবারের ম্যাচটা ড্র থাকলেই বাংলার আরও একটা টিমের কাছে আই লিগ খেলার ছাড়পত্র চলে আসত। তবে ভবানীপুরের হাত ধরে বাংলার স্বপ্নভঙ্গ হলেও, ব্যারেটোর লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা। শনিবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল-পুণে এফসি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কিন্তু বন্ধু ব্যারেটোর ম্যাচ নিয়ে চরম উৎসাহী এডে চিডি নিয়মিত খোঁজ রাখছিলেন ভবানীপুর-ওয়াহিংদো ম্যাচের। ম্যাচ শেষ হতেই তাঁর মন্তব্য, “হে ঈশ্বর! মোহনবাগানে ব্যারেটো আরও কিছু বছর খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ওকে জোর করে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়। ভবানীপুরকে যদি ও আই লিগে তুলতে পারত, তা হলে সেটা যোগ্য জবাব হত। আগামী দিনে ওকে কোচ হিসেবে দেখতে চাই।”
হতাশ রহিম নবিও। দু’বছর আগে যখন মোহনবাগান জার্সিতে বিদায় ম্যাচ খেলেন ব্যারেটো, তখন তাঁর পাশে ছিলেন পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা। তাঁর কথায়, “আমার ভবানীপুরের জন্য নয়, খারাপ লাগছে ব্যারেটোর জন্য। আরও খারাপ লাগছে ভবানীপুর ১-০ এগিয়েও জিততে পারল না। তবে ফুটবলকে চির বিদায় জানালেও, ফুটবল ব্যারেটোকে কখনও ভুলবে না। বাঙালির হৃদয়ে ও আজীবন থাকবে।”
পনেরো বছর আগে ভারতে শুরু ব্যারেটোর ফুটবল-জীবন। সবুজ-মেরুনের হয়ে অভিষেক ম্যাচে জাতীয় লিগে আইটিআইয়ের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র। জীবনের শেষ ম্যাচেও জয়ের স্বাদ পেলেন না। তবে উৎসবের যাবতীয় উপকরণ তৈরি রাখা ছিল সবুজ-তোতার জন্য। ম্যাচ শুরুর পঁচিশ মিনিটের মধ্যেই ড্যানিয়েল বিদেমির গোলে এগিয়ে যায় ভবানীপুর। তবে বাবাতুন্ডে ও জ্যাকিচাঁদ সিংহের গোলে ১-২ পিছিয়ে পড়ে তারা। ম্যাচের এক ঘণ্টার মাথায় ব্যারেটো নামতে ফের আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ে ভবানীপুরের। বিদেমির দ্বিতীয় গোলে ২-২-ও হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে বিকে বাওয়ারের গোলে ৩-২ করে আই লিগে জায়গা পাকা করে ফেলে ওয়াহিংদো। ম্যাচের পরে ব্যারেটোর প্রথম কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য যদিও বলছিলেন, “মোহনবাগান ছাড়ার পরেই যদি ব্যারেটো ফুটবলকে চির বিদায় জানাত, তা হলে সবচেয়ে ভাল হত। এখন আর ওকে কেউ মনে রাখবে না।” এ দিন ম্যাচের আগেই ব্যারেটোকে উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা জানায় মিজোরাম ফুটবল সংস্থা। তবে ম্যাচ শেষে মনমরা ব্যারেটো। দলকে আই লিগের ছাড়পত্র দিতে না পারার জন্য ঘনিষ্ঠমহলে বিদায়ী ম্যাচেও রেফারিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy