কথায় বলে মানুষের মন নাকি সবচেয়ে দ্রুতগামী। এখন বোধহয় এটাও বলে দেওয়া যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মনের চেয়ে দ্রুত আর কিছু নেই এই দুনিয়ায়! এই তিনি লর্ডসে। তো পরের মুহূর্তেই তাঁর মন মুম্বইয়ের সেই পাঁচতারা হোটেলে, যেখানে গত দু’দিন ধরে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের টানটান উত্তেজনাপূর্ণ দল বাছাই হয়ে গেল।
শুধু কি মন? সঙ্গে ছুটছে তাঁর ফোনও। লর্ডসে ভারতীয় দলের স্মরণীয় টেস্ট জয় দেখার পর সাগরপার থেকে সমানে ফোনে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন মুম্বইয়ে আটলেটিকো দ্য কলকাতার অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে। আইপিএলের নিলামের সময় যেমনটা করে থাকেন শাহরুখ খান। আর যাঁর উপর দল বাছাইয়ের মূল দায়িত্ব, সেই ব্যারেটোর সঙ্গে তো দলের খুঁটিনাটি নিয়ে কথা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়কের।
বুধবার সন্ধ্যায় যখন লন্ডনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সৌরভ বললেন, “ব্যারেটোর সঙ্গে এই দু’দিনই কথা হয়েছে আমার। কেমন দল করেছে, কাদের নিয়েছে, সবই ফোনে আলোচনা করেছি আমরা।” তবে কোন ফুটবলারকে নেওয়া হবে বা হবে না, সেই সিদ্ধান্ত মোহনবাগানের প্রাক্তন ব্রাজিলীয় তারকার উপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান সৌরভ। অকপটে বললেন, “আমি তো আর জানি না, কলকাতা ময়দানে কোন ফুটবলার কেমন খেলে। কোন পজিশনে কাকে দলে নিলে ভাল হবে, এই ব্যাপারটা সবচেয়ে ভাল বোঝে ব্যারেটোই। তাই ওর উপরই এই দায়িত্বটা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। জানতাম, এই ব্যাপারে ওর চেয়ে ভাল জাজ আর কেউই হতে পারে না।”
আইএসএল প্লেয়ার ড্রাফটের প্রথম দিন খুব একটা ভাল দল গড়ার প্রতিশ্রুতি দিতে না পারলেও বুধবার দ্বিতীয় দিন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ক্লাইম্যাক্স লরেন্স, সঞ্জু প্রধান, লেস্টার ফার্নান্ডেজ, বলজিৎ সাইনি, মোহনরাজদের মতো নামী ফুটবলারদের তুলে নিয়েছে কলকাতা। ফলে এখন যথেষ্ট খুশি দলের অন্যতম কর্ণধার। ফোনে কিছুটা আঁচও পাওয়া যাচ্ছিল। বললেন, “টিম তো ভালই হয়েছে। ব্যারেটোও তো দেখলাম দল নিয়ে বেশ খুশি। ও যখন বলছে ভাল, তা হলে ভালই হবে। এদের সঙ্গে আটলেটিকো মাদ্রিদের পাঁচ জন ভাল ফুটবলারকে পেয়ে যাব আমরা। তাই টিমটা এমনিতেই দাঁড়িয়ে যাবে মনে হয়।” জানতেও চাইলেন, “কলকাতার ফুটবল মহলের লোকেরা কী বলছে আটলেটিকো দ্য কলকাতা দল নিয়ে?” যখন শুনলেন, ময়দানের প্রতিক্রিয়া ভালই, বললেন, “ভালই হবে। ব্যারেটো যখন ভাল বলছে, তখন খারাপ হবেই বা কেন? বাকিটা ওরা মাঠে নামলে বোঝা যাবে।”
টেস্ট সিরিজ, আটলেটিকো দ্য কলকাতা ছাড়াও আরও একটা ব্যাপার এখন সৌরভের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সিএবি। বাংলার ক্রিকেটের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে চলেছেন তিনি। রবিবারই বার্ষিক সভায় তাঁর সেই নতুন দায়িত্বে সিলমোহর পড়ে যাবে। গুঞ্জন ছিল, রবিবার সেই সভায় তিনি নাও আসতে পারেন। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। কেউ কেউ তো এমনও বলা শুরু করেছিলেন, প্রথম সভাতেই যখন আসতে পারবেন না, এর পর বাকি সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন কী করে? সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এ দিন সৌরভ বলে দিলেন, “রবিবার বার্ষিক সভার দিনই কলকাতায় পৌঁছচ্ছি। মিটিং অ্যাটেন্ড করে রাতের বিমানেই ফের সাউদাম্পটনে ফিরে আসব।” অন্য সব কিছুর মধ্যে সিএবি-র গুরুত্ব যে তাঁর কাছে এতটুকু কম নয়, এই এক কথায় সেটাই বুঝিয়ে দিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy