সাধারণ নির্বাচনের সূচি ঘোষণা হলেও আইপিএল সূচি চূড়ান্ত করে উঠতে পারলেন না বোর্ড কর্তারা। এ বারের আইপিএল যে দু’ভাগে হবে, বুধবার বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের বৈঠকে শুধু এই সিদ্ধান্ত হল। কিন্তু অন্য কোন দেশে প্রথম ভাগের আইপিএল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে এ দিনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া গেল না। তবে চলতি সপ্তাহেই ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আশা কর্তাদের।
বুধবার লোকসভা নির্বাচনের সূচি ঘোষণার পর দিল্লিতে বৈঠকে বসেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন, সচিব সঞ্জয় পটেল, ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্ল, আইপিএল কমিশনার রঞ্জীব বিসওয়াল ও আইপিএল-এর চিফ অপারেটিং অফিসার সুন্দর রামন। এই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় রঞ্জীব বিসওয়াল ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, “আমরা আইপিএল সেভেনের ৬০-৭০ শতাংশ ম্যাচ দেশে করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ভোটপর্ব মেটার পর মাত্র ১৮ দিনে এতগুলো ম্যাচ (প্রায় ৩৬টি) করা বেশ কঠিন। সেই জন্যই আরও কিছুটা সময় নিয়ে নেওয়া হল, যাতে এই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করা যায়।”
১৬ মে ভোট গণনা। তার পরের দিন থেকেই যে ভারতের মাটিতে আইপিএল শুরু করে দেওয়া যাবে, এমন সম্ভাবনা কম। অথচ ৩ জুনের মধ্যে আইপিএল শেষ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভারতে আইপিএলের জন্য ১৮ দিনও হাতে পাওয়া যাবে না। অথচ স্পনসর ও ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চাইছে আইপিএলের বেশিরভাগটাই ভারতে হোক। তাতে তাদের আর্থিক ও বাণিজ্যিক ক্ষতি কমবে।
কিন্তু কী ভাবে তা সম্ভব?
বুধবারের বৈঠক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক আইপিএল কর্তা এ দিন জানালেন, বৃহস্পতিবার ফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বা কথা বলে মে-র শুরু থেকে ভারতে আইপিএল করার অনুমতি চাইতে পারেন বোর্ড কর্তারা। “ন’দফার মধ্যে সাত দফা ভোট পর্ব চুকে যাওয়ার পর দেশে আইপিএল শুরু করা গেলে ৬০-৭০ শতাংশ ম্যাচ করা যেতে পারে। সে জন্যই ফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দ্বারস্থ হওয়া। যাতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই আইপিএল করার অনুমতি পাওয়া যায়।”
কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যেখানে আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন আইপিএলের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বন্দোবস্ত করা অসম্ভব, তার পর এই প্রস্তাবে তারা রাজি হবে কি?
আইপিএল কর্তার দাবি, “রাজি না হলেও ১৩ মে থেকে আইপিএল দেশে করা যাবে এবং সেক্ষেত্রে অর্ধেক ম্যাচ আমরা দেশেই করতে পারব। কারণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এর আগে আমাদের জানিয়েছিল, ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে।”
এ বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে যে যুক্তি তুলে ধরা হবে, তা হল, দেশে ৬০-৭০ শতাংশ ম্যাচ করা না গেলে ৫০ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বোর্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। এতে বরফ গলবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় যে আইপিএল হচ্ছে না, তা এ দিনই ঠিক হয়ে গেল। শোনা যাচ্ছে, প্রধান স্পনসররা জানিয়েছে, ওখানে তাদের তেমন বাজার নেই বলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চায় না তারা। রঞ্জীব বিসওয়াল অবশ্য এই তত্ত্ব মানতে রাজি নন। অন্য দিকে কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে টুর্নামেন্ট নিয়ে গেলে ফের গড়াপেটার আশঙ্কা মাথা চাড়া দিতে পারে। এই বক্তব্য জানিয়ে কমিশনের কাছে তারা চিঠিও দিয়েছে বলে শোনা গেল।
বাংলাদেশ নিয়েও আপত্তি আছে কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির। তাদের মত, আইপিএলের আগে দু’টি বড় মাপের টুর্নামেন্ট হয়ে যাওয়ার ফলে ওখানকার উইকেট কতটা খেলার উপযোগী থাকবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। ওই সময় খুব বৃষ্টি হতে পারে বলে শ্রীলঙ্কাকে আগেই সরিয়ে রাখা হয়েছে। তা হলে কোথায় হবে আইপিএলের প্রথম ভাগ, এটাও এখন হয়ে উঠেছে বড় প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy