Advertisement
E-Paper

মুদগল রিপোর্টে ভারত অধিনায়ক সমালোচিত এবং এক সিনিয়র প্লেয়ার অভিযুক্ত হতে পারেন

যাঁরা অভিযোগ করছিলেন ভারত-শ্রীলঙ্কা সিরিজ মোটেও জমছে না। সব কিছু থেকেও কী যেন নেই। তাঁরা সোমবার থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন আগুনের খোঁজ পাবেন! সচিন তেন্ডুলকরের বই যদি প্রাচীন আগ্নেয়গিরির নতুন লাভা নিষ্ক্রমণ হয়, তা হলে মুদগল কমিটির রিপোর্ট নাকি স্বয়ং আগ্নেয়গিরি! ক্রিকেটমহলের ধারণা, আসন্ন বোর্ড নির্বাচন, বিশ্বকাপের দল নির্বাচন এবং অবশ্যই আইপিএলের গতিপ্রকৃতি এই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে সোমবার খোলা হওয়ার পর নতুন করে বদলাবে।

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৭

যাঁরা অভিযোগ করছিলেন ভারত-শ্রীলঙ্কা সিরিজ মোটেও জমছে না। সব কিছু থেকেও কী যেন নেই। তাঁরা সোমবার থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন আগুনের খোঁজ পাবেন! সচিন তেন্ডুলকরের বই যদি প্রাচীন আগ্নেয়গিরির নতুন লাভা নিষ্ক্রমণ হয়, তা হলে মুদগল কমিটির রিপোর্ট নাকি স্বয়ং আগ্নেয়গিরি!

ক্রিকেটমহলের ধারণা, আসন্ন বোর্ড নির্বাচন, বিশ্বকাপের দল নির্বাচন এবং অবশ্যই আইপিএলের গতিপ্রকৃতি এই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে সোমবার খোলা হওয়ার পর নতুন করে বদলাবে। এমনকী মাইক্রোস্কোপের তলায় পড়তে পারেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও। ধোনির বিরুদ্ধে গড়াপেটা জাতীয় কোনও অভিযোগ নেই। সিএসকে বনাম রাজস্থান রয়্যালস যে ম্যাচে ধোনিদের ব্যাটিং রান রেট অস্বাভাবিক নেমে যাওয়া নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল, শোনা যাচ্ছে তা থেকে প্রমাণের অভাবে তাঁরা অব্যাহতি পাচ্ছেন। কিন্তু ধোনি রিপোর্টে কঠোর সমালোচিত হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে অন্য কারণে।

তিনি তদন্ত কমিটিকে সত্যি কথা বলেননি গুরুনাথ মইয়াপ্পন সম্পর্কে। ধোনি বলেছিলেন, ও নিছক ক্রিকেট-উত্‌সাহী। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে গুরুনাথই সিএসকের আসল মালিক। বুকিদের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ কথাবার্তা টেপে পাওয়া গিয়েছে। ভয়েস স্যাম্পল টেস্টের পর প্রমাণিত, ওটা তাঁরই গলা। গুরুনাথকে কড়া শাস্তির সুপারিশ করেছে মুদগল কমিটি। ধরে নেওয়া যায় এই রিপোর্টের ভিত্তিতে সিএসকের অন্তত এক বছর নির্বাসন অবশ্যম্ভাবী। একই ভাবে দোষী সাব্যস্ত হতে যাচ্ছেন রাজ কুন্দ্রা। পরের বছরের আইপিএল সিএসকে এবং আরআর বিহীন থাকবে, আগামী সোমবার সেই সঙ্কেতই বয়ে আনছে।

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের নাম মাসখানেক আগে মুদগলের দেওয়া গোপন লেফাফায় ছিল বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কমিটি খতিয়ে দেখেছে, গড়াপেটায় সরাসরি তাঁর জড়িত থাকার ন্যূনতম প্রমাণ নেই। তাঁর বিরুদ্ধে একমাত্র অভিযোগ উঠতে পারে যে, ম্যাচ গড়াপেটা নির্মূল করতে তাঁর আরও দায়িত্ব এবং প্রাজ্ঞতা দেখানো উচিত ছিল। আইপিএল মুখ্যকর্তা সুন্দর রামন কিন্তু বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন। তাঁর কোনও কোনও ফোনালাপ মনে করা হচ্ছে একেবারেই সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিল না।

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন রিপোর্টে ছাড় পেলেও বাকি রিপোর্টের আভাস পেয়ে বোর্ডে তাঁর বিরোধীরা আপাতত উল্লসিত। তাঁরা মনে করেন, সুপ্রিম কোর্ট সোমবার রিপোর্ট খোলা মাত্র দুই দোষী ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে বোর্ডকে ব্যবস্থা নিতে বলবে। শ্রীনিবাসন প্রেসিডেন্টের চেয়ারে থেকে সিএসকের বিরুদ্ধে কী করে ব্যবস্থা নেবেন? তাঁর ক্ষেত্রে তো স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন তুলে দেবেন বিরোধী আইনজীবী। বিরোধীদের আশা তখন সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে চেয়ার থেকে দূরে থাকতে বলবে। বার্ষিক সাধারণ সভায় ফের এক বছরের জন্য মনোনীত হওয়া হবে না।

শ্রীনি চাপে দেখে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা এ দিনই ঘোষণা করে দিয়েছে যে, এজিএমে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন শরদ পওয়ার। বিদর্ভ থেকে আসতে পারেন শশাঙ্ক মনোহর। এ সবই শ্রীনির ওপর চাপ বৃদ্ধির কৌশল যে, মুদগলের রিপোর্ট পেশের পর যখন চাপে থাকবে তখনই মারো!

ক্রিকেটমহলে যা খবর-টবর রটছে, তার বিচারে অবশ্য মুদগল রিপোর্ট প্রকাশিত হলে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর আলোচনা শ্রীনি-ধোনি বা আইপিএল মুখ্যকর্তা কাউকে নিয়েই ওঠার কথা নয়। শিরোনাম সম্ভবত নেবেন ভারতীয় সিনিয়র ক্রিকেটার। যিনি দেশের হয়ে শেষ খেলেছেন সাত মাস আগে।

মুদগল কমিশনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গোয়েন্দাদের সূত্র অনুযায়ী, এই সিনিয়র ক্রিকেটার মোহালিতে বছরখানেক আগের ভারত-শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে এবং পরের দিন এক বুকির সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। এ ছাড়াও আইপিএলে নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার সময় কিছু ম্যাচে ইচ্ছাকৃত পারফর্ম করেননি। যা নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গেও তাঁর জোর ঝগড়া হয়েছিল। যা ললিত মোদী পর্যন্ত গড়ায়। ক্রিকেটারটি বিক্ষুব্ধ হয়ে সেই টিম ছেড়ে চলে যান। কিন্তু এই ঘটনার পরেও ক্রিকেটারটিকে নিয়ে কখনও কোনও প্রশ্ন শোনা যায়নি এবং মুদগল রিপোর্টে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে দেশব্যাপী আলোড়ন ওঠা উচিত।

ক্রিকেটারটির ঘনিষ্ঠ সূত্র তীব্র অস্বীকার করছেন। তাঁর পক্ষ সমর্থনে বলছেন যে, দিন দশেক আগে মুদগলের গোয়েন্দারা তিনি দলীপ ট্রফি খেলার সময় হঠাত্‌ বলেন, তাঁকে জেরা করা হবে। ভয়েস স্যাম্পল চায়। কিন্তু তাঁর জবাবে নাকি গোয়েন্দারা সন্তুষ্ট। বড় মুখ করে তিনি কমিশনকে বলেও এসেছেন, আমার বিশ্বাসযোগ্যতাই আমার সম্পদ। চাইলে আমি এখুনি ভয়েস স্যাম্পল দিতে পারি।

ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত প্রভাবশালী কেউ কেউ ইতিমধ্যে জল্পনায় ব্যস্ত। খবরটা যেন ঠিক না হয়। ভবিষ্যতে ওকে টিমের লাগতেই পারে।

কেউ জানে না কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তবে যা মনে হচ্ছে, সোমবার থেকে সচিনের রেকর্ড সৃষ্টিকারী বইয়ে গ্রেগ বনাম সচিন বিতর্ক শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে পরিণত হবে!

mudgal committee mudgal report gautam bhattacharya MS Dhoni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy