Advertisement
E-Paper

মর্যাদার ম্যাচটা জিততে পেরেছেন এটাই তৃপ্তি চিডি, আর্মান্দোদের

ফেড কাপ শেষ পর্যন্ত আর্মান্দো কোলাসোর কাছে ‘অভিশাপ’ই হয়ে থাকল। কঠিনতম অঙ্কের সমাধান করতে বসে একটা ধাপ আর্মান্দো মিলিয়ে দিলেও, মিলল না দ্বিতীয় ধাপের হিসাব। উত্তর না মেলাতে পারায় ফেড কাপের গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। জটিল অঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, আই লিগের শীর্ষে থাকা বেঙ্গালুরু এফসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় লাল-হলুদ ব্রিগেড।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৪ ২১:২১

ফেড কাপ শেষ পর্যন্ত আর্মান্দো কোলাসোর কাছে ‘অভিশাপ’ই হয়ে থাকল।

কঠিনতম অঙ্কের সমাধান করতে বসে একটা ধাপ আর্মান্দো মিলিয়ে দিলেও, মিলল না দ্বিতীয় ধাপের হিসাব। উত্তর না মেলাতে পারায় ফেড কাপের গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হল ইস্টবেঙ্গলকে।

জটিল অঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, আই লিগের শীর্ষে থাকা বেঙ্গালুরু এফসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় লাল-হলুদ ব্রিগেড। জোড়া গোল করেন এডে চিডি। কিন্তু ম্যাচ খেলতে নামার আগেই আর্মান্দো ব্রিগেডের সব আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, আগের ম্যাচেই রাংদাজিদকে ২-০ হারিয়ে দেয় স্পোর্টিং ক্লুব। ফলে গ্রুপ তালিকায় শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল গোয়ার দলটিই।

পর পর দু’বার ইস্টবেঙ্গলকে ফেড কাপ দিয়েছিলেন ট্রেভর মর্গ্যান। একবার রানার্স করেছিলেন। আর্মান্দো কিন্তু শেষ পর্যন্ত মর্গ্যানের এই সাফল্যের রেকর্ড ধরে রাখতে পারলেন না। মঞ্জেরিতেই ফেলে আসতে হল ফেড কাপ জয়ের স্বপ্ন। মর্গ্যান অবশ্য ব্যর্থতার কারণ হিসেবে বলছেন, “ইস্টবেঙ্গল এই মুহূর্তে সেরা টিম। কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রথম একাদশে যারা খেলছে তারাই সেরা। নতুন কোচ এলে টিমের ফর্মেশনে একটু বদল আসে। আর সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে ফুটবলারদের কিছুটা সময় লাগে। টিমটাকে আরও একটু সময় দিতে হবে। তবে আমি আশাবাদী, ফুটবলাররা নিজেদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়িয়ে আগামী দিনে সাফল্যও পাবে।”

মঙ্গলবার যখন বাসে করে স্টেডিয়ামে যাচ্ছিলেন চিডি-মোগারা তখনও একটা আশা ছিল। স্টেডিয়ামে পৌঁছেই দুরুদুরু বুকে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা আগে দৌড় লাগিয়েছিলেন স্পোর্টিং ক্লুব বনাম রাংদাজিদ ম্যাচের স্কোর দেখতে। তখন স্পোর্টিং ১-০ এগিয়ে। এর পরও আশা ছাড়েননি চিডিরা। তাকিয়ে ছিলেন রাংদাজিদের গোল শোধের দিকে। কিন্তু ড্রেসিংরুমে জার্সি পরতে পরতেই তাঁরা খবর পান ২-০ করে ফেলেছে স্পোর্টিং। এবং শেষ পর্যন্ত পাহাড়ের দলটি সেই গোল শোধ করতে পারেনি। আশার যে ফানুসে চেপে গত আটচল্লিশ ঘণ্টা ধরে জটিল অঙ্কের হিসেব মেলাতে চেষ্টা করছিলেন ওপারা, সুয়োকারা--- সেটা যেন এক নিমেষেই চুপসে যায়।

বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই ফেড কাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে জানা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও মরিয়া লড়াই চালিয়ে যান লাল-হলুদ ফুটবলাররা। মর্যাদার লড়াইয়ে সাফল্যও পেয়েছেন। এটাই হয়তো আর্মান্দোর প্রাপ্তি। লাল-হলুদ কোচ বলেও দিলেন, “সেমিফাইনালে যেতে পারলে ভাল লাগত। কিন্তু মর্যাদার ম্যাচে জেতায় আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে দলে। আর এটাকে সঙ্গী করেই কলকাতা ফিরছি।” বেঙ্গালুরু কিন্তু এ দিন দু’টি পেনাল্টি মিস করেছে। সহকারী রেফারির সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জুড়ে বেঙ্গালুরুর কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড লাল কার্ডও দেখেন।

ম্যাচের পর লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমে নাকি শশ্মানের নিঃস্তব্ধতা নেমে এসেছিল। জেতার পরও আফসোস আর হতাশা ঘিরে ধরেছিল লাল-হলুদ ফুটবলারদের। আক্ষেপের সুরে অনেক ফুটবলারই এ দিন বলছিলেন, “আগের ম্যাচে যদি গোলগুলো মিস না হত তবে আমরাই সেমিফাইনাল খেলতাম।” জোড়া গোল করার পরও চিডি ছিলেন নির্লিপ্ত। বললেন, “সেমিফাইনালেই তো যেতে পারলাম না। এই গোলের আলাদা আর কোনও গুরুত্বই থাকল না।”

গত দু’বারের চ্যাম্পিয়নদের ব্যর্থতা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে বসে অবশ্য প্রাক্তনরা মনে করছেন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জন্যই ডুবতে হয়েছে আর্মান্দোকে। লাল-হলুদের প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য যেমন বললেন, “এক একটা খারাপ সময় আসে সব দলের। তবে ইস্টবেঙ্গলের খেলার গ্রাফটা হঠাৎ করেই যেন পড়ে গিয়েছে। কেন? সেটা কোচকেই খুঁজে বের করতে হবে। এটাও ঠিক কলকাতা লিগ জয়ের পর টিমের মধ্যে একটা আত্মতুষ্টি এসেছিল। যার ফলে ডার্বিতেও ব্যর্থ হয়েছে দল।” আর এক প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় সরাসরি আঙুল তুলেছেন কোচের দিকেই। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “ডার্বির আগে হঠাৎ করেই আর্মান্দো গোয়া চলে গেলেন। কলকাতা লিগ জিতে যাওয়ার পর মোহনবাগান ম্যাচকে কোনও গুরুত্বই দিলেন না। তাই ফুটবলারদের মধ্যেও একটা গা ছাড়া ভাব এসে গিয়েছিল। কোচের আত্মতুষ্টি এবং ডার্বি হারের প্রভাব কিন্তু ফেড কাপে পড়েছে। যার পরিণাম হাতেনাতে পেল ইস্টবেঙ্গল।”

২০০৮ ফেড কাপে শেষবার গ্রুপ লিগ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এর পর চার বছরের মধ্যে তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। রানার্স এক বার। সবচেয়ে বেশি ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডও রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের ঝুলিতে। কিন্তু এ বার আর ফেড কাপ ‘অভিশাপ’ থেকে বেরিয়ে লাল-হলুদে ফুল ফোটাতে পারলেন না আর্মান্দো কোলাসো। ইস্টবেঙ্গল পারল না ফেড কাপ জয়ের হ্যাটট্রিক করতে।

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, রাজু, ওপারা (নওবা), অর্ণব, রবার্ট, তুলুঙ্গা (লেন), লোবো (খাবরা), সুয়োকা, ডিকা, চিডি, মোগা।

east bengal federation cup begaluru fc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy