বাগান আইকনকে ভরসা টিডি-র। প্র্যাকটিসে বোয়া-সুভাষ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
আর্মান্দো কোলাসোর উল্টো পথে হাঁটলেন সুভাষ ভৌমিক!
হতে পারে ইস্টবেঙ্গল কোচের মতো নিউ আলিপুরের বাসিন্দার কাছেও মহমেডান ম্যাচ ‘ডার্বি’ নয়। নিছক একটা ম্যাচ। তবে সেই ম্যাচের গুরুত্ব যে ‘ডার্বি’র চেয়ে কোনও অংশে কম নয়, সেটা নিজের হাবভাবেই বুঝিয়ে দিলেন সুভাষ। “ভারত-পাক ক্রিকেট ম্যাচ যেমন অ্যাসেজ হতে পারে না, তেমনই মহমেডান ম্যাচও ডার্বি নয়। তবে কলকাতা লিগ জিততে হলে এই ম্যাচটাও আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মহমেডান ব্যালান্সড টিম। ওদের বিদেশিরা গোলের মধ্যে আছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, অসীম বিশ্বাসের কামব্যাক। আমার মতে অসীম এই যুগের সবচেয়ে প্রতিভাবান বাঙালি স্ট্রাইকার,” শনিবার প্র্যাকটিসের পরে বলছিলেন বাগান টিডি।
কলকাতা লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে মহমেডানের বিরুদ্ধে আর্মান্দোর সাহসী জুনিয়র-তত্ত্ব বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়োলেও জয়ের সন্ধান দিতে পারেনি ইস্টবেঙ্গলকে। কলকাতা লিগ জেতার স্বপ্নে বুঁদ সুভাষের কাছে সেখানে পুরো তিন পয়েন্টের প্রাধান্যই রবিবারের ম্যাচে বেশি। আর সেটা হওয়াটাও তো অস্বাভাবিক কিছু নয়! গত চার বছর ধরে যে ক্লাবে বড় ট্রফির নাম-গন্ধ নেই, সেই দলের টিডি এ ছাড়া অন্য কী আর ভাববেন? সুভাষ বলছিলেন, “জুনিয়রদের খেলিয়ে-খেলিয়ে পাকাতে চাই। কারবাইড দিয়ে নয়। রাম মালিক, পঙ্কজ মৌলারা গত বছর থেকে খেললেও আমার কাছে ওরা পরীক্ষিত নয়। মহমেডান প্রেসিং ফুটবল খেলে। তাই সেটা আটকাতে যা যা করা দরকার, সব করব।”
এখানেই শেষ নয়। মহমেডানকে আটকাতে সদ্য আসা বিদেশি স্টপার ফাতাইকেও রিজার্ভ বেঞ্চে রাখছেন বাগান টিডি। তবে তাঁকে খুব প্রয়োজন না পড়লে নামানো হবে না। পিয়ের বোয়া এবং কাতসুমি-ই শুরু করবেন। জেজে-র চোট বলে তাঁর জায়গায় খেলবেন সাবিথ। বাকি টিম অপরিবর্তিত। মহমেডান সেখানে তাদের দুই মিজো ফুটবলার ড্যানিয়েল আর মালসামলুয়ালাকে অসুস্থতার জন্য পাচ্ছে না। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলার অসীম বিশ্বাস বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের মতো খেলতে হবে। তবে ওই দিন শুরু থেকে প্রেসিং ফুটবল খেলেছি। রবিবার প্রথম দিকটা একটু দেখে খেলতে চাই।”
সুভাষের বাগানে ঢুকলে ইদানীং যেটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে, সেটা হল সুন্দর ফুটবলের পরিবেশ। যেটা বহু দিন উধাও ছিল সবুজ-মেরুন তাঁবু থেকে। ‘ক্লোজড ডোর’-এর ঠেলায় প্র্যাকটিস দেখার সুযোগ না থাকলেও সদ্য-সমর্থকদের উৎসাহে যেন ‘পুরোনো সেই দিনের’ ছায়া বাগানে। লিগের শুরুতেই জয়ের হ্যাটট্রিক ট্রফি জেতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে যে! শনিবার সাতসকালে ক্লাব তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, খোদ সুভাষের চোখে-মুখেও একটা স্বস্তির ছায়া লেপ্টে। সেই চনমনে মেজাজ। রসিকতায় ভরা। তবে সেটা তাঁর বহিরঙ্গ নয় তো!
বোয়াদের প্র্যাকটিস থেকে যে খবর বেরিয়ে আসছিল, তাতে কিন্তু অন্য সুভাষের ছবি ভেসে উঠবে। একেবারে কড়া হেডমাস্টার যাকে বলে! ভুলের তো কোনও জায়গা নেই-ই, সামান্য মিস পাস হলেও দারুণ বিরক্ত হচ্ছেন ফুটবলারদের উপর। আসলে লক্ষ্য একটাই টানা ম্যাচ জেতার আনন্দে সাবিথ-শৌভিকরা যাতে আত্মতুষ্ট না হয়ে পড়েন। মহমেডানকে আটকাতে সুভাষ কোনও ত্রুটি রাখছেন না। বিপক্ষ দলের প্রত্যেক ফুটবলারকে নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে চর্চা করেছেন। এমনকী কোনও অঘটন ঘটলে প্রয়োজনে ম্যাচের মধ্যে একাধিক বার ছক বদলানোর কথাও ভেবে রেখেছেন তিনি। সব মিলিয়ে সুভাষের প্রস্তুতি জোরদার। এখন দেখার, মহমেডান কোচ ফুজাতোপে বড় ম্যাচে ফের কোনও তোপ দাগতে পারেন কি না!
রবিবারে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ
মোহনবাগান : মহমেডান (যুবভারতী, ৪-০০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy