কলকাতার ময়দানে ছুড়ে বল করে এত দিন পার পেয়ে গিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু আর নয়। এ বার ময়দানের চাকারদের ধরতে ফাঁদ পাতছে সিএবি। আর ‘চাকার’-দের ধরার দায়িত্বে কে? মুথাইয়া মুরলীধরন! উনিশ বছর আগে যাঁর গায়ে কি না ‘চাকার’-এর তকমা সেঁটে দিয়েছিল আইসিসি!
বোর্ড বেশ কয়েক বছর ধরেই সিএবিকে বলে আসছিল, তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে চাকিংয়ের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু ময়দানের কিছু ক্লাবের চাপে সে সব এত দিন করা যায়নি। অফস্পিনারদের মধ্যে যে প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে ইদানীং। কিন্তু বুধবার সিএবি-র নবগঠিত ক্রিকেট কমিটির বৈঠকে চাকার ধরার জাল ছড়ানোর নীল নকশা তৈরি হয়ে গেল।
সিএবি-র প্রথম ডিভিশন লিগে আগেও যে চাকিং করার জন্য আম্পায়াররা ‘নো’ ডাকেননি, তা নয়। তবে সে জন্য কোনও বোলারের বিরুদ্ধে ‘সাসপেক্টেড বোলিং অ্যকশন’-এর নির্দিষ্ট অভিযোগ আনার ব্যবস্থা ছিল না। এ বার সেটাই হতে চলেছে। তাই প্রথম ডিভিশন লিগের আম্পায়ারদের দায়িত্ব এখন থেকে বেশ কিছুটা বাড়ল। তাঁদেরই খুঁজে বের করতে হবে, কোন বোলার চাক করছে বা ছুড়ছে। সেই বোলারদের পাঠানো হবে ভিশন ২০২০ প্রকল্পে। যেখানে স্পিন কোচ মুথাইয়া মুরলীধরনের তত্ত্বাবধানে তাঁদের অ্যাকশন শোধরানো হবে। যে মুরলী নিজেই ১৯ বছর আগে লড়াই করে নিজের ‘চাকার’ তকমা ঝেড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তিনিই এ বার বাংলার ‘চাকার’-দের শুধরে ফেরার পথ দেখাবেন। মুরলী অবশ্য দায়িত্বে থাকবেন স্পিনারদেরই। তবে তিনি যখন আসবেন, তখন তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ভিশনের শিবিরেই পরীক্ষা করে দেখা হবে বোলিংয়ে গলদের মাত্রা। এই গলদ খুঁজে বের করার জন্য যে সব যন্ত্রপাতি দরকার, তাও আনবে সিএবি। যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “এখানেও যদি বোলারের অ্যাকশন শোধরানো না যায়, তা হলে আমরা তাকে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতেও পাঠাতে পারি।” যে ক্রিকেট কমিটির উপর এই প্রকল্পের দায়িত্ব, তার চেয়ারম্যান, প্রাক্তন যুগ্মসচিব শরদিন্দু পাল বললেন, “প্রিয়ঙ্কর, মনোজিতের মতো চাকারদের নিয়ে ভাবছি না। মূলত লিগে খেলা ১৪ থেকে ২২ বছরের বোলারদেরই বেছে নিয়ে তাদের অ্যাকশন ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
ক্লাব ক্রিকেটে পরিচ্ছন্নতা বাড়ানোর জন্য যেমন এই প্রকল্প, তেমনই আরও একটি নতুন ব্যবস্থাও আনতে চলেছে সিএবি, যা গত বারের অবনমন পর্বে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয়েছিল। এ বার লিগে আগাগোড়া সব ম্যাচেই একজন করে অবজার্ভার বা ম্যাচ রেফারি নিয়োগ করা হবে। এ জন্য প্রাক্তন বোর্ড আম্পায়ার বা প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকে কুড়ি জনের প্যানেল তৈরির দায়িত্ব পড়েছে সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও সত্রাজিৎ লাহিড়ীদের উপর। লিগ চলাকালীন সপ্তাহে এক দিন আম্পায়ারদের নিয়মিত ক্লাসও নেবেন বোর্ডের আম্পায়াররা। অন্তত ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে পরের মরসুমে পোস্টিং পেতে আম্পায়াররা সমস্যায় পড়বেন, এমন হুঁশিয়ারিও দিতে চলেছে সিএবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy