এক দিকে, তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা দিনে দিনে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বকাপ যত এগোচ্ছে, তত। ইংল্যান্ড কোচ রয় হজসন বলে দিচ্ছেন, ইংরেজ মহাতারকার অবস্থা হলিউড সুপারস্টার আল পাচিনো বা জ্যাক নিকোলসনের মতো। যাঁদের সিনেমা আসা মানেই লোকে ধরে নেয়, সেটা সুপারহিট হবে।
অন্য দিকে, ইংরেজ মহাতারকা নিজে প্রবল বিরক্ত। ক্ষুব্ধ দেশজ মিডিয়ার উপর। যারা তাঁকে ধাওয়া করেছে পর্তুগাল পর্যন্ত।
দুইয়ে মিলিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর তিন সপ্তাহ আগে ওয়েন রুনি ভাল রকম অস্বস্তিতে।
রুনি এই মুহূর্তে পর্তুগালে। নিজের সন্তানদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন। কিন্তু সেখানে ব্রিটিশ মিডিয়াকে উপস্থিত হতে দেখে প্রবল চটেছেন ইংল্যান্ড ফুটবলের মহাতারকা। টুইট করে লিখে ফেলেছেন, ‘দেখে অসহ্য লাগছে যে ইংলিশ মিডিয়া পর্তুগালে পর্যন্ত আমাকে তাড়া করে হাজির হয়েছে। যখন কি না আমি আমার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে এসেছি।’
যার কাছাকাছি সময়ে আবার রুনিকে নিয়ে হজসন বলে দিয়েছেন তিনি ইংল্যান্ড ফুটবলের বক্স অফিস। আজ পর্যন্ত আটটা বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলেছেন রুনি। কিন্তু কোনও গোল করতে পারেননি। বড় টুর্নামেন্টেও তিনি এমন কিছু এখনও ঘটাননি যা টিমকে উদ্দীপ্ত করতে পারে। ইউরোতে আজ পর্যন্ত ছ’টা ম্যাচে নেমে গোল করেছেন পাঁচটা। যার মধ্যে চারটে এসেছে ২০০৪-এর ইউরোতে। তবু তাঁকেই ব্রিটিশ ফুটবলের বক্স অফিস ধরছেন ইংল্যান্ড কোচ। এটাও বলে দিচ্ছেন, রুনির উপর প্রত্যাশাটা বরাবরের মতো এ বারও মারাত্মক থাকবে।
“ও জানেও সেটা। রুনি জানে ইংলিশ ফুটবল যারা দেখে, লেখে বা সেটা নিয়ে আলোচনা করে, তাদের কাছে ওর চাহিদাটা কী। শুধু এটুকু আশা করব যে, ও নিজের সেরাটা দেবে। সেটা আমি বিশ্বাসও করি। আসলে আমি শুধু সেরা প্রস্তুতির কথাটাই ভাবতে পারি। আশা করব, এমন ভাবে ওকে তৈরি করব যাতে ও মাঠে নেমে ভাবে যে, আমার একদম ঠিকঠাক লাগছে। আমি সেই খেলাটা খেলব, যেটা লোকে আমার থেকে প্রত্যাশা করে,” বলে দিয়েছেন হজসন। এখানেই না থেমে তাঁর আরও সংযোজন, “আমার মনে হয় হলিউড তারকাদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে। আপনি যদি প্রথম এসেই একটা ভাল সিনেমা বানিয়ে ফেলেন, কিছু ভাল রিভিউ পেতে পারেন। কিন্তু যখনই একদিন আপনি আল পাচিনো বা জ্যাক নিকোলসনের মতো তারকা হয়ে উঠবেন, লোকে আশা করবে আপনার প্রত্যেকটা সিনেমাই দুর্দান্ত হবে।”
তবে ঘটনা হচ্ছে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হলেও রুনির মরসুম খুব খারাপ যায়নি। তা ছাড়া বিশ্বকাপে রুনি পাশে স্টারিজ, ওয়েলবেক, ল্যাম্বার্ট, স্টার্লিংদের মতো ফুটবলারদের পাবেন। বোধহয় সেটা ভেবেই হজসন বলে দিচ্ছেন, “আমার মনে হয় না, টুর্নামেন্টে রুনির কোনও কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করার মতো আছে। ওর দায়বদ্ধতা, ফিটনেস, খিদে কোনও কিছু নিয়েই নয়।” সঙ্গে আরও যোগ করছেন, “সে দিক থেকে দেখলে ২০১২-র মতো সমস্যা এ বার হওয়া উচিত নয়। সে বার রুনি প্রথম দু’টো ম্যাচে খেলতে পারেনি। মারাত্মক হতাশ হয়ে পড়েছিল। এ বার সেটা হবে না। বরং বিশ্বাস করি, যে দলটা আমরা বেছেছি সেটা সত্যি ভাল। খুব ভাল ভাল প্লেয়ারও আছে। যার ফলে গোল করার সমস্ত দায়িত্ব রুনিকেই নিতে হবে, এমন নয়। আমাদের টিমে এমন বেশ কিছু প্লেয়ার আছে, যারা গোল করে চলে যেতে পারে। তাই আমি রুনি হলে ভাবতাম, সব ঠিকঠাকই লাগছে। আমার চার দিকে এমন প্রচুর প্লেয়ার আছে যারা অত্যন্ত ভাল। তাই বিশ্বকাপ আমার কাছে কিছু করে দেখানোর বড় সুযোগ।”