Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
মেসির ম্যাজিক আর ইতিহাস

রেফারিং নিয়ে ক্ষুব্ধ ম্যান সিটি

খুব কম সংখ্যাক ফুটবলপ্রেমীই বোধহয় আশা করেছিলেন সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহ শিকার করে ফিরবেন ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। শেষ পর্যন্ত যা হয়নি। আগেরো, জাবালেতাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দৌড় শেষ হয়ে গেল মেসি-নেইমারদের ঘরের মাঠেই। কেন? উত্তরটা আটকে সেই লিও মেসিতেই। দিন কয়েক আগেই লা লিগার ম্যাচে বমি করেছিলেন। দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছিল শোরগোল।

ন্যু কাম্পে মেসি-রাজ। সিটি-র বিরুদ্ধে গোল করার পরে। ছবি: এফপি।

ন্যু কাম্পে মেসি-রাজ। সিটি-র বিরুদ্ধে গোল করার পরে। ছবি: এফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৫
Share: Save:

বার্সেলোনা-২ (মেসি, আলভেজ)

ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-১ (কম্পানি)

খুব কম সংখ্যাক ফুটবলপ্রেমীই বোধহয় আশা করেছিলেন সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহ শিকার করে ফিরবেন ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। শেষ পর্যন্ত যা হয়নি। আগেরো, জাবালেতাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দৌড় শেষ হয়ে গেল মেসি-নেইমারদের ঘরের মাঠেই।

কেন? উত্তরটা আটকে সেই লিও মেসিতেই। দিন কয়েক আগেই লা লিগার ম্যাচে বমি করেছিলেন। দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছিল শোরগোল। কিন্তু কোথায় কী? আসল সময়ে জ্বলে উঠে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির রক্ষণকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে গোল করে গেলেন এলএম টেন-ই। শেষ বেলায় নাটকীয় ভাবে কম্পানি সমতা ফেরালেও এক মিনিটের মধ্যে দানি আলভেজের গোল। নিটফল, দু’পর্ব মিলিয়ে (অ্যাওয়ে ম্যাচে ২-০ জিতেছিল বার্সেলোনা) ম্যান সিটিকে ৪-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে একটা সময় একচেটিয়া বলের দখল ছিল বার্সার। এই সময়ই এডিন জেকোর হেড তৎপরতার সঙ্গে বাঁচিয়ে বার্সা গোলকিপার ভালদেজ-ও উজ্জ্বল থাকলেন পুরোদমে।

গোটা ম্যাচে দেখার ছিল দুই আর্জেন্তাইনের লড়াইতে শেষ হাসি কার মুখে থাকবে? মেসি, না আগেরো? কিন্তু আগেরো পুরো সময় মাঠে থাকতে পারলেন কোথায়? চোটের জন্য প্রথমার্ধের পরেই তাঁকে তুলে জেকোকে নামান পেলেগ্রিনি। ৪৫ মিনিটে যেখানে আগেরোর অবদান মোটে পাঁচটা পাস বাড়ানো, সেখানে মেসি শুরু থেকেই মাঠ দাপালেন আগ্রাসী মেজাজে। দ্বিতীয়ার্ধে লেস্কটকে বোকা বানিয়ে গোল করাই শুধু নয়, পোস্টে লেগেও একবার ফিরল তাঁর শট। সাত মিনিটে বক্সে মেসিকে অবৈধ ভাবে আটকেছিলেন লেস্কট। রেফারি পেনাল্টি দিতেও পারতেন। গত রাতে গোলের সুবাদে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যে কোনও একটি দলের হয়ে রাউল গঞ্জালেসের গোলের রেকর্ডও (৬৬) টপকে গেলেন লিও মেসি (৬৭)। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড ছুঁতে মেসির দরকার আরও ৪ গোল। কারণ, রিয়ান ছাড়ার পরে শালকের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরও ৪ গোল করেছিলেন রাউল।

সিটি-র বিরুদ্ধে গোল করার পরে সতীর্থদের সঙ্গে জয়োল্লাস। ছবি: এফপি

ম্যাচ হারার পর রেফারিং নিয়ে যথারীতি সোচ্চার ব্রিটিশ মিডিয়া। হারের কারণ হিসাবে ফরাসি ম্যাচ রেফারি স্টিভন লানয়কেই দায়ী করছেন ম্যান সিটির ফুটবলাররা। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে পেনাল্টি বক্সে জাবালেতাকে ট্যাকল করেছিলেন পিকে। ম্যান সিটির প্রায় সব ফুটবলারই রেফারিকে পেনাল্টি দেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু উল্টে রেফারির সঙ্গে তর্ক করার জন্য লাল কার্ড দেখতে হয় জাবালেতাকে। ম্যাচ শেষে রেফারির সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করে জাবালেতা বলেন, “রেফারি ঘটনাস্থলের দু’মিটার দূরে ছিলেন। আমার মাথায় আসছে না কেন তিনি পেনাল্টি দিলেন না। আর আমি রেগে গেলেও কিন্তু রেফারিকে অসম্মান করিনি।”

এর আগেও বহু ইংলিশ ক্লাব কাম্প ন্যু-তে এগারো জন ফুটবলার নিয়ে শুরু করলেও দশ জন নিয়ে ম্যাচ শেষ করেছে। বুধবার রাতের পরে আবার প্রতিটা ব্রিটিশ দৈনিকের শিরোনাম-- “তবে কি কাম্প ন্যুতে কোনও দিনই এগারো জন ফুটবলার নিয়ে ম্যাচ শেষ করতে পারবে না কোনও ইংলিশ দল?”

কিন্তু খারাপ রেফারিং নয়। ম্যান সিটি ফুটবলারদের বহু সুযোগ নষ্ট করাই কাঁটা হয়ে দাঁড়াল শেষ আটে যাওয়ার পথে, সেই কথাই ম্যাচ শেষে বলেছেন দলের কোচ পেলেগ্রিনি। “দুটো ম্যাচেই অসংখ্য সুযোগ পেয়েছে আমার দল। ঠিক সময় গোল করতে পারলেই দু’পর্ব মিলিয়ে ছবি হয়তো পাল্টে যেত।”

মেসি-কথা

• বার্সেলোনার হয়ে এই মরসুমে ৩২ ম্যাচে ২৮ গোল।

• পরপর ছয় মরসুমে দেশ ও ক্লাব মিলিয়ে ৩০ গোলের বেশি করেছেন।

• ৪১১ ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে ৭৫ বার প্রথম গোল করলেন।

• কাম্প ন্যু-তে ১৯৬ ম্যাচে ১৬০ ম্যাচ জিতেছেন।

ইব্রা আটকে গেলেও শেষ আটে সাঁ জাঁ

সংবাদ সংস্থা • প্যারিস

বিশ্বকাপে নেই তাঁর দেশ। তাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাটাই পণ করেছেন জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ। বুধবার রাতে জার্মানির বেয়ার লিভারকুসেনকে ২-১ হারিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিলে তাঁর দল প্যারিস সাঁ জাঁ। আগের অ্যাওয়ে ম্যাচে লিভারকুসেনের ঘরের মাঠে গিয়ে ৪-০ জিতে ফিরেছিল প্যারিস সাঁ জাঁ। ফলে সব মিলিয়ে ৬-১ জিতে শেষ আটে যাওয়ার পথে তেমন কোনও বাধার সামনে পড়তে হয়নি লরা ব্লাঁ-র দলকে।

গোটা ম্যাচে বলার মতো কিছুই করতে পারেননি ইব্রাহিমোভিচ। তিনি আটকে গেলেন লিভারকুসেন রক্ষণে। বরং গোটা ম্যাচ প্যারিসের দলটির গোলে চনমনে মেজাজে খেললেন ইব্রাদের কিপার সালভাতোর সিরিগু। পেনাল্টি আটকে ম্যাচের নায়ক তিনিই। যার সুবাদে ম্যাচ শেষে ইব্রার হুঙ্কার, “আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল সিরিগুর পারফরম্যান্স। এ বার লড়াই কোয়ার্টার ফাইনালের।”

শেষ তিরিশ মিনিট দশ জনে খেললেও শুরুর দিকে লিভারকুসেনের আক্রমণেই ঝাঁঝ ছিল বেশি। যার ফল, ছ’মিনিটেই সিডনি স্যামের গোলে এগিয়ে যাওয়া। তবে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দলকে সমতায় পেরান মারকুইনহোস। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান আর্জেন্তাইন এজেকিউয়েল লাভেজ্জি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mesi paris saint germain champions league
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE