Advertisement
E-Paper

শ্রীনির চাপে উল্টো বলে নিজেই জড়িয়ে পড়ল ধোনি

এগারো মাস আগে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে যে জেহাদ তিনি শুরু করেছিলেন, তাতে এ বার সিলমোহর পড়ার অপেক্ষা। কিন্তু আদিত্য বর্মা আজ এতটুকু টেনশনে নেই। বরং নিশ্চিন্ত। নিশ্চিন্ত যে, শ্রীনি-পতন হচ্ছেই! ভারতীয় ক্রিকেটের মহাশুক্রবারের আগের রাতে নয়াদিল্লি থেকে ফোনে শ্রীনি-প্রতিপক্ষ বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব আনন্দবাজারকে যা বললেন...।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৪ ০৪:৪৮
এই জার্সিতে কি আর দেখা যাবে?

এই জার্সিতে কি আর দেখা যাবে?

প্রশ্ন: আপনাকে ফোন করলে ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’ গানটা শোনা যাচ্ছে। আচমকা এ রকম একটা কলার টিউন কেন?

আদিত্য বর্মা: কারণ আমি একলা চলায় বরাবর বিশ্বাস করে এসেছি, তাই। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে যখন মহাত্মা গাঁধী নেমেছিলেন, তখন কি তিনি ভেবেছিলেন সঙ্গে কে আসবে না আসবে? আমি তেমনই চেয়েছিলাম শ্রীনিবাসন নামের এক কালোবাজারির হাত থেকে ভারতীয় ক্রিকেটকে মুক্তি দিতে। ভাবিনি সঙ্গে কাকে পাব। কারা থাকবে। বাকিদের দিকে তাকিয়ে থাকলে তো কিছু করাই যাবে না।

প্র: আজ রাতে ঘুম আসবে? এগারো মাস ধরে যে যুদ্ধটা আপনি চালাচ্ছেন, তার চূড়ান্ত ভাগ্য-নির্ধারণ তো শুক্রবার।

আদিত্য: আমি তো বলব সবচেয়ে ভাল ঘুমটা আজ রাতে আসবে! মনে অনেক তৃপ্তি নিয়ে ঘুমোতে যেতে পারব। যে লোকটাকে আমি ভারতীয় ক্রিকেট থেকে নিকেশ করতে চেয়েছিলাম, সেটা তো শেষ পর্যন্ত হচ্ছে।

প্র: কী ভাবে এখনই সেটা বলছেন? শুক্রবার বোর্ড পক্ষের আইনজীবীদের কথা সুপ্রিম কোর্ট শুনবে। এ দিন যা যা বলা হল, সবই তো প্রস্তাব। প্রোপোজাল। কোনওটাই অর্ডার নয়।

আদিত্য: এটা আপনাদের কে বলছে বলুন তো? কোর্ট থেকে বেরোনোর পর শুনে যাচ্ছি সবই নাকি প্রোপোজাল। অর্ডার নয়। আরে বাবা, আমি নিজে আদালতে ছিলাম। বিচারপতিরা স্পষ্ট বলেছেন যে, যা যা এ দিন বলা হল বোর্ডকে সে সবই আসলে অর্ডার। যা শুক্রবার জারি করা হবে। বরং আমার তো আর একটা ভয় হচ্ছে।

প্র: কী ভয়?

আদিত্য: শ্রীনিবাসনের অবস্থা শেষ পর্যন্ত সহারাশ্রী সুব্রত রায়ের মতো না দাঁড়ায়!

প্র: মানে?

আদিত্য: আরে, ব্যাপারটা তো সে দিকেই যাচ্ছে। শ্রীনিকে গদি ছাড়ার জন্য আটচল্লিশ ঘণ্টার সময়সীমা দিল সুপ্রিম কোর্ট। ও কানে তুলল না। তুলবে যে না, জানতাম। ওর মতো নির্লজ্জ লোক খুব কমই দেখেছি জীবনে। আর চব্বিশ ঘণ্টা ওর হাতে আছে। যা লোক, তাতেও দেখবেন ঠিক গদি বাঁচাতে পড়ে থাকবে। তখন যা আদালত করে এসেছে, সেটাই করবে। ভাবতে পারেন, লোকটা ধোনিকে দিয়ে পর্যন্ত মিথ্যে কথা বলিয়ে নিল।

প্র: আজকের পর থেকে লোকে একটা কথা বলছে। বলছে, আদিত্য বর্মার এত দিন একজন শত্রু ছিল। শুধু শ্রীনিবাসন। এখন সেটা দু’জন। শ্রীনিবাসন প্লাস মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।

আদিত্য: ভুল বলছে। আমার শত্রু একজনই। শ্রীনি। ধোনি কখনওই নয়। আমি ওকে কখনওই এ সবে জড়াতে চাইনি।

প্র: কিন্তু আপনার আইনজীবী হরিশ সালভে তো এ দিন আদালতে ধোনির বিরুদ্ধে প্রচুর কড়া প্রশ্ন তুলে দিলেন।

আদিত্য: দেখুন, আমি ধোনিকে টানিনি। ও নিজেই নিজেকে এ সব কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ফেলল। মুদগল কমিশনের সামনে ও কেন উল্টো কথা বলে এল গুরুনাথ মইয়াপ্পন নিয়ে। ও বড় ক্রিকেটার। দেশের অধিনায়ক। ধোনির বোঝা উচিত ছিল যে, ক্রিকেটই ওকে আজ এত বড় করেছে। সেখানে ও বুঝল না যে, একটা ভুল পদক্ষেপ ওকে গাড্ডায় ফেলে দিতে পারে?

আসলে ধোনি ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমি নিশ্চিত যে, মুদগল কমিশনের কাছে যাওয়ার আগে কী বলতে হবে সেটা শ্রীনি ওকে শিখিয়ে-পড়িয়ে দিয়েছিল।

প্র: কিন্তু ভয়টা কীসের?

আদিত্য: মোহিন্দর অমরনাথের ব্যাপারটা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি। বিদেশে জঘন্য সিরিজ হারের পর অধিনায়ক বদলের কথা বলাতে কী হল? ওকেই সরিয়ে দেওয়া হল! ধোনি যদি কমিশনের কাছে সত্যি কথা বলে আসত মইয়াপ্পন নিয়ে, কী গ্যারান্টি ছিল যে তার পরেও ওর ইন্ডিয়া ক্যাপ্টেন্সি থেকে যেত?

তবে আজ যা হয়েছে, হয়েছে। ধোনির সঙ্গে আমার কোনও ঝামেলা নেই। আমার আইনজীবীরা ওকে নিয়ে আর কিছু বলবে না। আর শুক্রবার তো বোর্ডের আইনজীবী বলবে, আদালত শুনবে। আমার তরফ থেকে যা বলার, সবই বলা হয়ে গিয়েছে আজ।

প্র: লোকে আরও একটা কথা বলছে। বলছে, শ্রীনি-র ভাগ্য তো বটেই আদিত্য বর্মা আইপিএল সেভেনকেও একই সঙ্গে চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিলেন।

আদিত্য: কেন?

প্র: চেন্নাই সুপার কিংস আর রাজস্থান রয়্যালসকে বাদ দিয়ে টুর্নামেন্ট করতে হলে পড়ে থাকে ছ’টা টিম। এই ক’টা টিম নিয়ে আইপিএলের মতো মেগা ইভেন্ট সম্ভব?

আদিত্য: কেন সম্ভব নয়? ছ’টা টিম থাকলেও ৪২-টা ম্যাচ থাকছে। ভারতে নির্বাচন মিটে গেলে অনায়াসে করা যাবে। দুবাইটা বাদ দিলেই চলবে। তা হলে? ১৬-ই এপ্রিল আমার আসল মামলার শুনানি আছে সুপ্রিম কোর্টে। সে দিন আইপিএলের এই ব্যাপারটা তুলব।

প্র: কী বলবেন?

আদিত্য: বলব যে, আইপিএল দেশেই হোক। সবার সামনে হোক। দুবাইয়ে সবার চোখের আড়ালে নয়। আর টুর্নামেন্টটা আয়োজনের জন্য একটা ভাল রিভিউ কমিটি গঠন করা হোক। যাদের সামনে টুর্নামেন্টটা হবে। যারা দেখবে, আইপিএলে আবার কোনও কেলেঙ্কারি চলছে কি না। সেই কমিটিতে কিছু সম্মানীয় ক্রিকেটার যেমন থাকবেন, তেমনই কিছু দক্ষ প্রশাসকও থাকবেন। কাদের নাম প্রস্তাব করব সেটাও ভেবে রেখেছি।

প্র: তাঁরা কারা?

আদিত্য: বিষেণ সিংহ বেদী, মোহিন্দর অমরনাথের মতো ব্যক্তিত্বরা। এবং অবশ্যই মুকুল মুদগল।

MS Dhoni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy