Advertisement
E-Paper

সেট পিসে গোল চান গার্সিয়ারা

ইতালিয়ান পাস্তা, সেদ্ধ চিকেন আর প্রচুর পরিমাণ জল। যে কোনও ম্যাচ খেলতে নামার আগে লুই গার্সিয়ার খাবার-চার্টে এই তিন বাধ্যতামূলক। কেবল গার্সিয়াই নন, আটলেটিকো দে কলকাতা-র অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দলের বাকি বিদেশিরাও তাঁদের মার্কি ফুটবলারকে অনুসরণ করেন।

প্রীতম সাহা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৫২
বোধনের আগে যুবভারতীর অঙ্গসজ্জা।

বোধনের আগে যুবভারতীর অঙ্গসজ্জা।

ইতালিয়ান পাস্তা, সেদ্ধ চিকেন আর প্রচুর পরিমাণ জল। যে কোনও ম্যাচ খেলতে নামার আগে লুই গার্সিয়ার খাবার-চার্টে এই তিন বাধ্যতামূলক।

কেবল গার্সিয়াই নন, আটলেটিকো দে কলকাতা-র অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দলের বাকি বিদেশিরাও তাঁদের মার্কি ফুটবলারকে অনুসরণ করেন। অন্তত খাবারের ব্যাপারে তো বটেই! গার্সিয়ার দেশোয়ালি বোরহা ফার্নান্দেজ যুবভারতীর করিডর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যেমন বলছিলেন, “খুব ভারীও নয়। খুব হালকাও নয়। ম্যাচের আগে আমি এমন-ই খাবার পছন্দ করি। সবচেয়ে ভাল পাস্তা আর সেদ্ধ চিকেন। যা পেলে তো আর কথাই নেই।”

বিদেশি ফুটবলারদের মুখের স্বাদের সঙ্গে অবশ্য স্বদেশি ফুটবলারদের বিস্তর পার্থক্য। গার্সিয়ারা যখন পাস্তা আর চিকেনে মজে, তখন অর্ণব-রফিকদের খাবারের চার্টে রকমারি ফল। অর্ণব মণ্ডল বলছিলেন, “ম্যাচ কখন শুরু হচ্ছে, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যেহেতু সন্ধে সাতটায় খেলা, তাই স্ন্যাক্স কিংবা ফল খেয়েই মাঠে নামব।” রফিক-ক্লাইম্যাক্সরাও গলা মেলাচ্ছেন অর্ণবের সঙ্গেই।

খাবারের টেবিলে আটলেটিকোর বিদেশি-স্বদেশি ফুটবলাররা যতই আলাদা হয়ে যান না কেন, মাঠের মধ্যে সবার সংকল্প যেন এক! সেটা কী? আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচ শহরবাসীর কাছে স্মরণীয় করে তোলার শপথ। প্র্যাকটিস শেষ হতেই যুবভারতীর টানেলের সামনে দাঁড়িয়ে একবার গোটা মাঠের দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন গার্সিয়া। তার পরেই মন্তব্য, “রবিবার রাতে স্টেডিয়ামে যাঁরা আসবেন, তাঁদের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব এখন আমাদের। কোনও খেলাতেই ভবিষ্যদ্বাণী হয় না। তবে একটা কথা দিচ্ছি, সুন্দর ফুটবল উপহার দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করব।” হঠাত্‌ গার্সিয়াকে দেখলে তখন মনে হতেই পারে, তিনি বোধহয় স্পেনের নন, এই দেশেরই বাসিন্দা। চোখে প্রবল আবেগ কলকাতার জন্য। মুখে প্রতিজ্ঞা। জিততেই হবে।

রবিবার আইএসএলে কলকাতার আটলেটিকো অভিযান শুরু করছে মুম্বই সিটি-র বিরুদ্ধে। হাবাসের দলের জন্য সুখবর হল, প্রথম ম্যাচে মুম্বইয়ের মার্কি ফুটবলার আনেলকা নেই। লিউনবার্গকে নিয়েও সমস্যা আছে। গার্সিয়া অবশ্য এই সব বিষয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ। “উল্টো দিকে কে খেলতে পারছে, কে পারছে না, তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল, আমরা কতটা তৈরি। এবং আমাদের দল সম্পূর্ণ তৈরি।” একটু থেমে গার্সিয়া আরও যোগ করলেন, “আমাদের প্লাস পয়েন্ট, স্বদেশি আর বিদেশি ফুটবলারদের দারুণ মিশেল। হতে পারে সে ভাবে কোনও বড় নাম নেই দলে। কিন্তু ম্যাচ জেতার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, সেই বোঝাপড়া আর আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই আমাদের মধ্যে। এত কম সময়ের মধ্যে এ রকম বোঝাপড়া আর কোনও টিমে তৈরি হয়েছে কি না আমার জানা নেই।” হাবাসের অনুশীলন দেখে মনে হল, রবিবার আটলেটিকোর প্রথম দলে বাংলার চার ফুটবলার অর্ণব, রফিক, বলজিত্‌ এবং লোবো সম্ভবত থাকছেন।

হাবাসের চূড়ান্ত টিম কম্বিনেশন কী হবে, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অনুশীলন দেখে মনে হল, আটলেটিকো কোচ বেশি জোর দিচ্ছেন সেট পিসে। হাবাস জানেন তাঁর টিমের স্ট্রাইকিং ফোর্স অন্য দলের তুলনায় দুর্বল। অন্তত খাতায়-কলমে। সেজন্যই সম্ভবত সেট পিস থেকে গোল তুলে নিতে চাইছেন কলকাতা কোচ। গার্সিয়া খেলছেন উইথড্রন ফরোয়ার্ডে। বলজিত্‌ সিংহ সাইনির পিছনে। ঠিক যে পজিশনে পেন ওরজি কিংবা শেষের দিকে ব্যারেটো খেলতেন ফ্রি ফুটবলার হিসেবে। হেডের জন্য ডিফেন্স থেকে কখনও উঠিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে নাটোকে, কখনও অর্ণবকে। দুই ডিফেন্ডারের উচ্চতা বিপক্ষের ছোট বক্সে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে। তবে চোখ টানার মতো ঘটনা হল, এখনও অসম্পূর্ণ যুবভারতীতে নানা খুটখাট শব্দের মধ্যেও আটলেটিকো ফুটবলারদের একাগ্রতা।

শুক্রবার গার্সিয়াদের অনুশীলনে ফের হাজির ছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। পুরো সময় দেখলেন। নোটও নিলেন। আইএসএলে তিনি যে ধারাভাষ্যকারও বটে। কাজের সুবাদেই আটলেটিকোর ডেরায়। এবং আইএসএল নিয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের মন্তব্য, “কোনও ফেভারিট দল নেই। যে দলের বিদেশিরা ভারতের এই পরিবেশে সবার আগে মানিয়ে নেবে, তারাই সফল হবে।” একইসঙ্গে আরও বললেন, “এ রকম সব ফুটবলারের সঙ্গে খেলার জন্যই একটা সময় বিদেশে খেলতে যেতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু এখন ওরাই এখানে খেলতে আসছে। এই সুযোগ যদি আমাদের ফুটবলাররা ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারে, তা হলে শুধু নিজেদেরই উন্নতি হবে না। দেশের ফুটবলেরও ভাল হবে।”

যুবভারতীতে এ দিন আটলেটিকো দে কলকাতার ‘থিম সং’ উদ্বোধন করা হল। ‘ফাটাফাটি ফুটবল... লেটস ডু সাম হট্টগোল’। গায়ক অরিজিত্‌ সিংহ ‘থিম সং’ উদ্বোধনে না থাকলেও ছিলেন গানটির গীতিকার ও সুরকার, দু’জনই।

ছবি: কৌশিক সরকার

atletico de kolkata pritam saha football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy