খাস কলকাতার বুকে রমরমিয়ে চলছিল প্রতারণার চক্র। কখনও দেশের নানা বড় বড় হাসপাতালের প্রতিনিধি, কখনও আবার পরিবহন দফতরের কর্তা সেজে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছিল বড় অঙ্কের টাকা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে আগেই চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার ধরা পড়লেন আরও একজন। শুধু তা-ই নয়, জানা গেল, ধৃতদের সঙ্গে যোগ রয়েছে কুখ্যাত ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় পঞ্চম ধৃতের নাম মহম্মদ আরিফ। বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত আরিফের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড়ের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। ধৃতেরা সকলেই ছিলেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। এ বার ওই ঘটনাতেই ধরা পড়লেন আরও এক জন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেদের দেশের বিভিন্ন বড় হাসপাতালের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিয়ে যাতায়াত ও হোটেল বুকিংয়ের নাম করে প্রতারকেরা ব্যবহারকারীদের হোয়াট্সঅ্যাপে মেসেজ পাঠাতেন। কখনও আবার পরিবহন দফতরের নাম ব্যবহার করে মেসেজ পাঠানো হত। প্রতারণার জন্য ব্যবহার করা হত এপিকে ফাইল। প্রথমে মোবাইল ফোনের ভুয়ো অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হত। তার পর বিভিন্ন হাসপাতাল কিংবা পরিবহন দফতরের নাম করে হোয়াট্সঅ্যাপে এই এপিকে ফাইলগুলি পাঠানো হত। ফাইল ডাউনলোড করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর মোবাইল চলে যেত প্রতারকদের নিয়ন্ত্রণে। তার পর মোবাইলে থাকা বিভিন্ন অনলাইনে টাকা লেনদেনের অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করে নিতেন প্রতারকেরা। গত শুক্রবার বিজয়গড়ের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে জামশেদ আনসারি, মহম্মদ সোয়েব আনসারি, বীরেন্দ্র পণ্ডিত, প্রদীপ মণ্ডল নামে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় একটি ম্যাক বুক, ২৪টি মোবাইল, ইন্টারনেট রাউটার, অপরাধ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি ও স্ক্রিনশট। এ ছাড়াও প্রতারিত হওয়া প্রায় ২৫০ জনের প্যান কার্ড ও ২৫ জনের প্যান কার্ডের নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়।