Advertisement
E-Paper

সবাই সাফারিতে গেলেও আমি লড়ছিলাম রাক্ষসগুলোর সঙ্গে

কেকেআরের অন্দরমহলের সব খবর নিয়ে পূর্ব ভারতে একমাত্র আনন্দবাজারে কলম ধরছেন নাইটদের ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীরস্কুলে আমি বরাবর মোটামুটি ভাল ছাত্র ছিলাম। বেশির ভাগ গড়পরতা ছাত্র যেমন হয় তেমনই কয়েকটা সাবজেক্টে ভাল ছিলাম, আবার কয়েকটায় নয়। ইতিহাস, হিন্দি আর ইংলিশ, এই তিনটে আমার পছন্দের সাবজেক্ট ছিল কিন্তু অঙ্ককে খুব ভয় পেতাম। সবচেয়ে খারাপ সময়টা আসত যখন স্কুল লম্বা ছুটির জন্য বন্ধ হত আর সে দিনটায় আমাকে অঙ্ক পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে হত। নিশ্চিত ভাবেই অঙ্কে কম নম্বর পেতাম। আর তার ধাক্কায় আমার ছুটিটা বরবাদ হয়ে যেত!

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:০৫
মরুসফরে বান্ধবীকে নিয়ে জাক কালিস। ছবি টুইটার

মরুসফরে বান্ধবীকে নিয়ে জাক কালিস। ছবি টুইটার

স্কুলে আমি বরাবর মোটামুটি ভাল ছাত্র ছিলাম। বেশির ভাগ গড়পরতা ছাত্র যেমন হয় তেমনই কয়েকটা সাবজেক্টে ভাল ছিলাম, আবার কয়েকটায় নয়। ইতিহাস, হিন্দি আর ইংলিশ, এই তিনটে আমার পছন্দের সাবজেক্ট ছিল কিন্তু অঙ্ককে খুব ভয় পেতাম। সবচেয়ে খারাপ সময়টা আসত যখন স্কুল লম্বা ছুটির জন্য বন্ধ হত আর সে দিনটায় আমাকে অঙ্ক পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে হত। নিশ্চিত ভাবেই অঙ্কে কম নম্বর পেতাম। আর তার ধাক্কায় আমার ছুটিটা বরবাদ হয়ে যেত!

গোটা পরিবার যখন ছুটিতে আমার অঙ্কের স্কিল বাড়ানোর চেষ্টায় লেগে থাকত, তখন আমার নিজের চিন্তা থাকত কী করে ক্রিকেট মাঠে আমার স্কোরগুলো বাড়াব! দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছে কেকেআরের হারের পর যে চার দিন আমাদের ম্যাচ খেলা থেকে ছুটি ছিল সেই সময়ে আমার অনুভূতিটা একেবারে ঠিক ওই রকম ছিল। বিশ্বাস করুন, যদি শেষ ম্যাচটা জিততাম, তা হলে এই চারটে দিন হয়তো স্পা-এ কাটানোর মতোই হত। কিন্তু দিল্লির কাছে হারার ফলে ব্যাপারটা উল্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল অনেকটা কোনও ব্যাঙ্ক কর্মীর অফিসে হিসাব পরীক্ষকের সামনে পড়ার মতোই।

আমার হিসাব পরীক্ষক হল আমার মনের ভেতরের রাক্ষসগুলো। আমার দল হারলেই যারা আমাকে ভেতরে ভেতরে চিবিয়ে খেতে শুরু করে। এই ভেতরে ভেতরে চিবিয়ে খাওয়ার ব্যাপারটা আরও খারাপ চেহারা নেয়, যখন সেই ম্যাচে আমি আদৌ ভাল রান করতেও পারি না। চাপ কমাতে আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট গোটা দল আর প্লেয়ারদের সঙ্গে থাকা তাদের পরিবারের লোকজনদের নিয়ে ডেজার্ট সাফারি-র বন্দোবস্ত করেছিল। আমি জানতাম যে আমি যাব না এবং আমি যাইওনি। বিশ্বাস করুন, আমি যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু যাইনি, যে-হেতু আমি নিজের সঙ্গে আরও কিছুটা বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করছিলাম। যে স্পোর্টস ইউটিলিটি গাড়ি আমাদের দলকে সাফারিতে নিয়ে গিয়েছিল, তাতে আমিই হয়তো সবার আগে লাফিয়ে চড়তাম! কিন্তু শেষ ম্যাচের হারটা আমাকে সেই মেজাজটা থেকে অনেক অনেক দূরে সরিয়ে দিয়েছিল।


সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

শুনলাম সাফারিতে খুব মজা হয়েছে। আমাদের ছেলেরা আনন্দ করেছে জেনে আমি খুশি। আমার নিজের ওই সময়টা কেটেছে হোটেলে নিজের ঘরে। রুম সার্ভিসকে খাবারের অর্ডার দিয়ে। সন্ধেবেলায় টিভিতে ক্রিকেট দেখে। আর ইদানীং আমার সবচেয়ে প্রিয় গান আরিফ লোহারের ‘জুগনি জি’ শুনে। গানটা পুরনো। যেটা আরিফ আর সহশিল্পীরা কোক স্টুডিওয় গেয়েছে। কিন্তু আমি গানটায় মজে গিয়েছি। যারা আমাকে চেনে, সত্যিই চেনে তারা হয়তো জানে, আমি যদি একটা গানের মধ্যে ঢুকে পড়ি তা হলে সেটার যোগ্য উত্তরসূরি যতক্ষণ না আবিষ্কার করছি, সেই গানটা নিয়েই পড়ে থাকি।

উত্তরসূরির কথায় বলি, আমাদের টিমের কেউ এক জন বলছিল যে, আইপিএলে ক্রিস গেইলের উত্তরসূরি হিসেবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এসে পড়েছে। ভাল কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বিগ ক্যাট-এর সঙ্গে একই ব্র্যাকেটে ম্যাক্সওয়েলকে রাখার পক্ষে সময়টা যদিও একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে, তবে অজি তরুণও সত্যিই দুর্দান্ত। ম্যাক্সওয়েল আক্ষরিক অর্থেই ওর প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে। ম্যাক্সওয়েলের সাফল্যে আমি খুশি, কারণ শুনেছি ও সত্যিকারের ভাল ছেলে। নিখুঁত টিম-ম্যান। যে গুণগুলোকে আমি জীবন দর্শনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঠাঁই দিয়ে এসেছি বরাবর। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে আমার কয়েক জন্য বন্ধু বলেছিল যে, ম্যাক্সওয়েল ওদের ড্রেসিংরুমকে মাতিয়ে রেখে দিত। প্রথম দলে যদি সুযোগ না পেত, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে চাইত দ্বাদশ ব্যক্তির কাজ করতে।

আমার সেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বন্ধুরাই হতাশ হয়ে বলছিল, কী ভাবে ম্যাক্সওয়েল এ বারের নিলামে তাদের হাতছাড়া হয়েছে। তার পরে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সিংহাসনে ম্যাক্সওয়েলকে দেখে ওদের হা-হুতাশ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এমনও বলছে যে, নিলামে ম্যাক্সওয়েলকে ধরে রাখতে না পারার জন্য মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কেউ না কেউ চাকরি খোয়ায়! যাক গে, আশা করি, তেমন ঘটনা অন্তত ঘটবে না। ২০০৮-এ আইপিএল যখন শুরু হয়েছিল, তখন ক্রিস গেইল তো কেকেআরে ছিল। কিন্তু গেইল-ঝড় ওঠে ও আরসিবিতে যোগ দেওয়ার পরে। অতএব এমনটা হতেই পারে।

আমার প্রিয় নায়িকাদের মধ্যে এক জন প্রীতি জিন্টার জন্যও আমি দারুণ খুশি। বহু দিন ধরেই দেখে আসছি, প্রীতির দল জিতুক বা হারুক, ও সমান জোশ নিয়ে গ্যালারি থেকে চিৎকার করে চলে। এ বছর ওর পঞ্জাব টিম দুর্দান্ত খেলছে এবং প্রীতি সেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের প্রত্যেকটা মুহূর্ত উপভোগ করছে। কোথায় একটা পড়েছিলাম যে, টিমের ভাগ্য ফেরাতে প্রীতি ওর ড্রেসটা পাল্টাবে। কিন্তু এ বছরে সেটার আর দরকার হবে না!

gautam gambhir ipltag kkr
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy