Advertisement
E-Paper

হাবাস নিশ্চয়ই আর লোবোকে বসানোর ভুল করবেন না

ম্যাচটা শেষ হতেই একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল! সেই ঘটনার কেন্দ্রীয় চরিত্রই এ দিন গোয়ার মাঠ থেকে মহানায়কের সম্মান নিয়ে বেরলো। কে, সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না! ঘটনা কী! ময়দানে সেটা কেভিন লোবোর প্রথম বছর। ওর ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের কোচ তখন মর্গ্যান। কলকাতা লিগে নেমেই লাল-হলুদ গ্যালারিকে আস্থা দিয়েছিল লোবো। কিন্তু ফেড কাপের জন্য মর্গ্যানের দলে লোবোর নামটা ছিল না! এক সাংবাদিক বন্ধুর কাছে শোনা, সে দিন ইস্টবেঙ্গলের সব ফুটবলার বাড়ি চলে যাওয়ার পরেও টেন্টের সামনে কিট ব্যাগ কাঁধে চুপ করে দাঁড়িয়েছিল লোবো। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, এখনও দাঁড়িয়ে কেন?

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৫
গোল করে লোবো।

গোল করে লোবো।

এফসি গোয়া-১ (সান্তোস)

আটলেটিকো দে কলকাতা-২ (কেভিন লোবো-২)

ম্যাচটা শেষ হতেই একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল!

সেই ঘটনার কেন্দ্রীয় চরিত্রই এ দিন গোয়ার মাঠ থেকে মহানায়কের সম্মান নিয়ে বেরলো। কে, সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না!

ঘটনা কী! ময়দানে সেটা কেভিন লোবোর প্রথম বছর। ওর ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের কোচ তখন মর্গ্যান। কলকাতা লিগে নেমেই লাল-হলুদ গ্যালারিকে আস্থা দিয়েছিল লোবো। কিন্তু ফেড কাপের জন্য মর্গ্যানের দলে লোবোর নামটা ছিল না!

এক সাংবাদিক বন্ধুর কাছে শোনা, সে দিন ইস্টবেঙ্গলের সব ফুটবলার বাড়ি চলে যাওয়ার পরেও টেন্টের সামনে কিট ব্যাগ কাঁধে চুপ করে দাঁড়িয়েছিল লোবো। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, এখনও দাঁড়িয়ে কেন? ফেড কাপে জায়গা না পাওয়ায় মন খারাপ? জবাবে লোবো নাকি বলেছিল, “না। বরং মনকে শক্ত করে বলছি, নিজেকে আরও ডুবিয়ে দিতে হবে ফুটবলে। যে দিন সুযোগ পাব তার পর থেকে যেন আর আমাকে বসতে না হয়।”

এ দিন ০-১ পিছিয়ে পড়ার পর শেষ পঁয়তাল্লিশ মিনিটে লোবোর জোড়া গোলে কলকাতা ২-১ জেতার পর মনে হচ্ছিল, আইএসএলেও টিমের প্রথম তিন ম্যাচে সুযোগ না পাওয়ায় সে রকমই কোনও কঠিন সংকল্প নিয়েছিল কি লোবো?

ডার্বিতে ওর গোল আছে। সোলো রানটা চমত্‌কার। ভাল পাসার। দু’পায়েই জোরাল শট রয়েছে। তবু হাবাসের দলে সুযোগ পাচ্ছিল না। আনন্দবাজারে দিন কয়েক আগেই দিল্লি ডায়ানামোসের বিরুদ্ধে আটলেটিকো কলকাতার ম্যাচ রিপোর্টে লিখেছিলাম, মার্কি ফুটবলার গার্সিয়া চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর কেন লোবোকে খেলানো হল না? কেন লিখেছিলাম সেটা এ দিনের ম্যাচের পর নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবারের পর আটলেটিকো কোচ হাবাসও নিশ্চয়ই লোবোকে আর বসিয়ে রাখতে পারবেন না!

শুনলাম, আইএসএলেও সুযোগ না পেয়ে ফুঁসছিল তরুণ গোয়ান মিডিও। কালীপুজোর দিন সুযোগ পেয়ে লোবো যেন আইএসএলের বহুপ্রচারিত সেই প্রোমোটাকেই সত্যি করে দিল— ইস দিওয়ালি ফুটবলওয়ালি!

ভারতীয় ফুটবলে একটুআধটু কোচিং করার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, গোয়ার মাটি থেকে কলকাতার কোনও দলের ম্যাচ বার করে আনা কতটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জেও কিন্তু জিতে ফিরছে অর্ণব, লোবো, হোফ্রে, হোসেমিরা।

তার পরেও অবশ্য হাবাসের টিমকে খুব বেশি নম্বর দেওয়া যাচ্ছে না। একাধিক মিস পাস। উইং প্লে নেই। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও দলের প্রধান স্ট্রাইকার ফিকরু অনেকটা নেমে খেলল! এ-ও বুঝলাম না ফর্মে থাকা গোলকিপার শুভাশিসকে বসিয়ে কেন নড়বড়ে বেটেকে নামিয়েছিলেন হাবাস? সান্তোসের যে গোলটা কলকাতা হজম করল সেটাও হত না। যদি আহত রাইট ব্যাক ডেঞ্জিলকে সঙ্গে সঙ্গেই তুলে নেওয়া হত। ওই ফাঁক দিয়েই গোলটা হল।

কলকাতা খেলাটা ধরল গোল খাওয়ার পরে। বলজিত্‌ চলে এল রাইট ব্যাকে। ওকে কোনও দিন ওই পজিশনে খেলতে দেখিনি। তবে ভালই খেলল। সঞ্জু নেমে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াল। লোবোর প্রথম গোলের সময় ফিকরুর ফ্লিকটাও উল্লেখ করতে হবে। সেটা বুক দিয়ে নামিয়েই জোরাল ভলিতে লোবোর প্রথম গোল। দ্বিতীয় গোলের শটটাও অনবদ্য।

হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে দু’দলের তর্কাতর্কি, হোফ্রে, বোরহাদের প্লে অ্যাক্টিং, আর্নোলিন-ফিকরুর ধাক্কাধাক্কির পর আটলেটিকো ফুটবলারের ঢুঁসো গোয়ার ফরাসিকে— সবই দেখলাম। কিন্তু শেখার মতো ব্যাপার একটার বেশি পেলাম কি?

সেই একটা— নিজের সংকল্পে অটল থেকে মনের ক্ষোভকে হৃদয়ে লালনপালন করার পর আসল দিনে তা উগড়ে দেওয়া!

যার নাম কেভিন লোবো।

আটলেটিকো দে কলকাতা: বেটে, ডেঞ্জিল (সঞ্জু), অর্ণব, হোসেমি, বিশ্বজিত্‌, বোরহা, নাতো, বলজিত্‌, হোফ্রে (আর্নাল), লোবো, ফিকরু (মনসুরু)।

isl atletico de kolkata lobo subrata bhattacharya football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy