E-Paper

চালে শুল্ক-হুমকির জেরে কি থমকে যাবে বাণিজ্য চুক্তির বৈঠক? উঠছে সময় নিয়ে প্রশ্ন

আগে রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে আপত্তি তুলে ভারতের উপরে বাড়তি শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। ফলে চাল-সহ সব পণ্যেই এখন আমেরিকায় ৫০% শুল্ক দিতে হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৭
(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আমেরিকার বাজার দরের থেকে কম দামে ভারত সেখানে চাল রফতানি করে, এই অভিযোগ তুলে এ বার তাতে শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে প্রশ্ন উঠল, দু’দেশ যখন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার পথে, তখন এই আচরণের অর্থ কী? এটাও প্রশ্ন, ঠিক যে সময়ে আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধি দল এই সংক্রান্ত আলোচনার জন্য নয়াদিল্লিতে আসছে, তখনই ট্রাম্পের এমন বার্তা গোটা উদ্যোগে জল ঢালবে না তো? আলোচনা যদি বা হয়, তা আখেরে কতটা সফল হবে? আজ ও কাল এই বৈঠক হওয়ার কথা। এর আগে রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে আপত্তি তুলে ভারতের উপরে বাড়তি শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। ফলে চাল-সহ সব পণ্যেই এখন আমেরিকায় ৫০% শুল্ক দিতে হয়। একাংশের দাবি, এটা ট্রাম্পের কৌশলও হতে পারে। চাপ বাড়িয়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা।

যদিও ভারতীয় চাল রফতানিকারীরা চিন্তিত নন। তাঁদের মতে, এ দেশ থেকে আমেরিকায় বেশি যায় বাসমতী। ট্রাম্প তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম-সহ আরও কিছু দেশকে এই হুমকি দিয়েছেন। যারা মূলত অন্য চাল রফতানি করে। ফলে তাঁর লক্ষ্য সেগুলিই। তবে বাসমতী চালেও শুল্ক বাড়লে তার রফতানি কমবে। তাতে দেশের বাজারে তার জোগান বৃদ্ধি পেলে ধাক্কা খাবে অন্যান্যগুলি।

ট্রাম্পের কাছে আমেরিকার কৃষি ক্ষেত্র ও চালকলগুলি নালিশ করেছে,ভারত, তাইল্যান্ড, চিন, ভিয়েতনামের মতো দেশের সস্তার চালে বাজার ভরছে। মার খাচ্ছেন আমেরিকার কৃষক ও বিক্রেতারা। এর পরেই ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘কেন ভারতকে এই কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে? তাদের শুল্ক দিতে হবে।... যে সব দেশ বেআইনি ভাবে রফতানি করছে, তাদের উপরে শুল্ক বসিয়ে খুব সহজে এর সমাধান করা যায়। এক দিনেই তা সম্ভব।’’

চাল রফতানিকারীদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অজয় ভালোটিয়ার দাবি, ‘‘ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে ভিয়েতনাম ও তাইল্যান্ডের কথাও বলেছেন। যারা বাসমতী বাদে অন্য চাল বিক্রি করে আমেরিকায়। ফলে বলা যায়, শুল্কের নিশানা অন্যান্য চালই। ভারত উল্টো, অন্য যা চাল রফতানি করে বাসমতী তার পাঁচ গুণ। কাজেই শুল্কের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে দেখতে হবে তিনি শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেন।’’ ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টার্স ফেডারেশনের বার্তা, গতঅর্থবর্ষে ২.৭৪ লক্ষ টন বাসমতী গিয়েছে আমেরিকায়। এই চালে তারা ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম বাজার। অন্য চালে ২৪ নম্বরে (প্রায় ৬১,৩০০ টন)। সব মিলিয়ে রফতানি হয়েছে প্রায় ৩৫১০ কোটি টাকার চাল। বৃহত্তম চাল উৎপাদক ও রফতানিকারী হিসেবে ভারতের চালের বাজার ছড়িয়ে সারা বিশ্বে। ফলে শুল্ক বৃদ্ধিতে ক্ষত তেমন গভীর হবে বলে মনে হয় না।

পশ্চিমবঙ্গের চাল রফতানিকারী ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে বাসমতী চাষ হয় না। তাই তাতে শুল্ক বসলেও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে সে ক্ষেত্রে দেশে বাসমতী ধান ও চালের দাম কমবে। বাড়বে জোগান। তার প্রভাব পড়তে পারে অন্য চালের বাজারে। তার মধ্যে থাকবে রাজ্যে উৎপাদিত বাঁশকাঠি ও মিনিকিটও। ক্ষতিগ্রস্ত হবে চালকলগুলি। যদিও সেই প্রভাব কতটা হবে, পুরো বিষয়টি স্পষ্ট না হলে বোঝা মুশকিল বলেই মনে করছেন তাঁরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Trade Deal India USA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy