Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Jagdeep Dhankhar

রাজভবনে যাচ্ছেন মুখ্যসচিব-ডিজি, টুইটে সন্ধির বার্তা ধনখড়ের

অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৪৬
Share: Save:

অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুইট করে রাজ্যপাল নিজেই জানালেন সে কথা। এ দিন বিধানসভাতেও গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। টুইটারেই সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি এবং লিখেছেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে ইতিবাচক সাড়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’’

রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে সোমবার রাজভবনে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতার নামে রাজ্যে যা চলছে, তার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদে জানার জন্যই তাঁদের ডাকা হয়। রাজভবন সূত্রে তেমনই জানানো হয়েছিল। কিন্তু সোমবার মুখ্যসচিব বা ডিজির মধ্যে কেউই রাজভবনে যাননি।

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল তাঁর অসন্তোষ গোপন করেননি। মুখ্যসচিব এবং ডিজি যে ডাকা সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি, সে কথা টুইটারে সোমবারই জানান রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসনের ওই দুই শীর্ষকর্তার তরফ থেকে তিনি কোনও সাড়াই পাননি এবং এতে তিনি বিস্মিত— এ রকমই টুইটারে লিখেছিলেন রাজ্যপাল। তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে, প্রশাসনিক আধিকারিকরা তাঁর ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না বলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকেই ডেকেছেন মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর যখন সুবিধা হবে, তখনই মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসতে পারেন— এমনও জানান ধনখড়।

মঙ্গলবার বিধানসভায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: বিরাট সঙ্কট ডেকে আনছে ভারত, বললেন ইমরান || নিজের দেশে তাকান, জবাব দিল্লির​

রাজ্যপালের এই একের পর এক টুইটে সোমবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী কড়া চিঠি লেখেন রাজ্যপালকে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো নয়, রাজ্য প্রশাসনকে সহায়তা করাই সাংবিধানিক কর্তব্য— রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠিতে এমনই লেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই মমতাকে পাল্টা চিঠি লেখেন ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রী যা লিখেছেন, তা বাস্তবের থেকে অনেক দূরে— পাল্টা চিঠিতে রাজ্যপাল এই রকমই লিখেছিলেন। ফলে রাজ্যের দুই সর্বোচ্চ পদাধিকারীর সঙ্ঘাত ফের বেনজির ভাবে প্রকাশ্যে এসেছিল।

মঙ্গলবার পরিস্থিতি কিছুটা বদলাল। এ দিন বিধানসভায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। আগের দু’বার বিধানসভায় গিয়ে যে রকম ‘শীতল’ আচরণের মুখে রাজ্যপালকে পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ, এ বার আর তেমন হয়নি। বরং বিধানসভার পদস্থ কর্তাদের বেশ কয়েক জন তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য হাজির ছিলেন। ছিলেন বিধানসভার বিশেষ সচিব ধৃতিরঞ্জন পাহাড়ি-সহ অন্য আধিকারিকরা। স্পিকার ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু রাজ্যপালকে বিধানসভার গ্রন্থাগার-সহ বিভিন্ন অংশ ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা স্পিকার করে রেখেছিলেন বলে খবর। রাজ্যপাল নিজেই সে কথা একটি টুইটে জানান। বিধানসভা সফর প্রসঙ্গে টুইটারে তিনি আরও লেখেন, ‘‘...গণতন্ত্রকে সফল করার জন্য এখন মতানৈক্য সরিয়ে রেখে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’’ সেই সঙ্গেই তিনি লেখেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার অপেক্ষা করছি।’’

আরও পড়ুন: রাজ্য যদি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর না করে, তবে কি ৩৫৬?

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ দিন রাজভবনে যাননি। মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারেন, এই কথা মাথায় রেখে উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়ায় একটি নির্ধারিত কর্মসূচি রাজ্যপাল বাতিল করে দিয়েছেন বলে রাজভবনের তরফে বিকেলের দিকে জানানো হয়েছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত আর যাননি।

আরও পড়ুন: সংশোধিত নাগরিক আইন তুলে নিতে আর্জি, সনিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির কাছে বিরোধীরা​

মুখ্যমন্ত্রীর না যাওয়া প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও টুইট এ দিন রাত পর্যন্ত আর রাজ্যপাল করেননি। বরং সন্ধ্যার পর তিনি যে টুইট করেন, তাতে সঙ্ঘাতে আপাতত বিরতির ইঙ্গিত মিলেছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন যে, আগামী কাল অর্থাৎ বুধবার মুখ্যসচিব এবং ডিজি তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। বেলা ৩টে নাগাদ তাঁরা রাজভবনে যাবেন এবং তিনি বৈঠকটির অপেক্ষায় রয়েছেন— টুইটারে এ কথাই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE