Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19 Vaccine

ন্যাতা-বালতি ধরা হাতে ডাক্তারদের আগেই টিকা পেলেন মুন্না-সঞ্জয়-চন্দনরা

শনিবার গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ২১২টি কেন্দ্রেও টিকাকরণ শুরু হয়েছে। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রযুক্তি নিয়ে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক তৈরি করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট।

বাঁ দিকে, প্রতিষেধক নিচ্ছেন মুন্না শেখ। ডান দিকে, প্রতিষেধক নেওয়ার পর পর্যবেক্ষণে রয়েছেন চন্দন বাসফোর। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিকে, প্রতিষেধক নিচ্ছেন মুন্না শেখ। ডান দিকে, প্রতিষেধক নেওয়ার পর পর্যবেক্ষণে রয়েছেন চন্দন বাসফোর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৩৯
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাফাইকর্মী মুন্না শেখ সবার আগে পেলেন নোভেল করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা। শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদেই নয়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালেও এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজটি পেলেন সাফাইকর্মী সঞ্জয় মাজি। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ পান সাফাইকর্মী চন্দন বাসফোর।

এমনিতে ধোওয়া-মোছা করতেই এক একটা দিন কাবার হয়ে যায়। তার মধ্যেও নজর চলে যায় সাদা কোট পরা মানুষগুলোর দিকে। তাঁদের দূর থেকে দেখেই কেমন যেন সম্ভ্রম জেগে ওঠে মনে। সেই মানুষগুলোর সঙ্গে এক সারিতে বসতে পারবেন, মনের কোণে এমন স্বপ্ন কখনওই বাসা বাঁধেনি ওঁদের। কিন্তু শনিবার সেই অসম্ভবটাই সম্ভব হয়ে দাঁড়াল। কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী নন, মুন্না, চন্দন, সঞ্জয়রাই পেলেন প্রথম টিকা।

শনিবার গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ২১২টি কেন্দ্রেও টিকাকরণ শুরু হয়েছে। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রযুক্তি নিয়ে কোভিশিল্ড প্রতিষেধক তৈরি করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। সরকারি নির্দেশ মেনে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রথম দফায় ১০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে সেই প্রতিষেধক দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের দীর্ঘদিনের কর্মবন্ধু মুন্নার হাত ধরেই শনিবার টিকাকরণের শুভ সূচনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এমন গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে পিছপা হননি মুন্নাও।

আরও পড়ুন: টিকাকরণের শুরুতে রাজ্যে ফেল কেন্দ্রের অ্যাপ, তথ্য হাতেকলমে​

প্রতিষেধক গ্রহণের পর আনন্দবাজার ডিজিটালকে মুন্না বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই আমাকে বেছে নেওয়া হয়। কবে প্রতিষেধক আসবে, এতদিন সেই অপেক্ষায় ছিলাম। আজ অপেক্ষা শেষ হল। সবার আগে প্রতিষেধক নিতে পেরে আমি খুশি।’’

মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীদেরই প্রতিষেধক দেওয়া কথা। কিন্তু করোনার সময়ে মুন্নাও তাঁদের সহযোদ্ধা ছিলেন। তাই প্রতিষেধকের প্রথম ডোজটি দেওয়া হয় ওঁকে।’’

আরও পড়ুন: জনতা কার্ফু এবং থালা-বাটি বাজানোর স্বপক্ষে এত দিন পর যুক্তি দিলেন মোদী​

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে সাফাইকর্মী সঞ্জয় প্রতিষেধক নেওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন চিকিৎসক, নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। সকলে হাততালি দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ পান সাফাইকর্মী চন্দন। বরং তালিকায় নাম থাকলেও, শেষ মুহূর্তে সেখানে প্রতিষেধক নিতে আসেননি বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। শেষমেশ তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়। যা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE