Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাই এ বার দিল্লি গড়বে, মাথাভাঙার জনসভা থেকে ডাক মমতার

এ দিন তিনি বলেন, ‘‘৪২ এ ৪২ টি আসন জিতে দিল্লির সরকার বাংলাই গড়বে। বাংলা দেখাবে, বাংলা যা পারে আর কেউ পারে না।”

দু’জনে: মাথাভাঙার জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নুসরত জাহান। বৃহস্পতিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

দু’জনে: মাথাভাঙার জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নুসরত জাহান। বৃহস্পতিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৯
Share: Save:

বাংলা এ বার দিল্লি গড়বে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙার সভা থেকে এমনই ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন তিনি বলেন, ‘‘৪২ এ ৪২ টি আসন জিতে দিল্লির সরকার বাংলাই গড়বে। বাংলা দেখাবে, বাংলা যা পারে আর কেউ পারে না।”

বিজেপিকে হারাতে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিয়ে ফেডারেল ফ্রন্ট তৈরির ডাক প্রথম দিয়েছিলেন মমতাই। তাঁর মূল লক্ষ্য, বিভিন্ন রাজ্যে প্রধান আঞ্চলিক দলগুলির শক্তিবৃদ্ধি। যাতে কেন্দ্রে বিরোধীদের মিলিত সরকার গড়ার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির ভূমিকা প্রাধান্য পায়। ফলে রাজ্য থেকে তৃণমূল যত বেশি সংখ্যক আসন জিততে পারবে, কেন্দ্রে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তাদের জোর তত বাড়বে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতার এ দিনের বক্তব্য তারই প্রকাশ।

তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা ইতিমধ্যেই বলছেন, মমতা দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। মমতা নিজে অবশ্য বলেছেন, তিনি পদের প্রত্যাশী নন। তাঁর বক্তব্য, নেতা কে হবেন, তা ঠিক হবে ভোটের পরে।

বুধবারের মতো এ দিনের সভাতেও আক্রমণাত্মক ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আগাগোড়া দু’টি শব্দ ব্যবহার করেছেন— ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী’ এবং ‘ভুয়া চৌকিদার’। তাঁর কটাক্ষ, “পাঁচ বছরে কিছু ভাবার সময় হল না। এখন ভোটের সময় বলছে, আমি ভাবছি। যেন হরিদাস। আর ভাবার সময় নেই। তোমাকে আর ভাবতে হবে না। অনেক ভেবেছো বাবা। তুমি মহম্মদ বিন তুঘলকের ঠাকুরদাদা, হিটলারের জ্যাঠামশাই। ফ্যাসিবাদী শক্তি।”

নোটবন্দি এবং এনআরসি প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অসমে ওরা হিন্দু এবং মুসলিম বঙ্গভাষীদের তাড়াচ্ছে। বাংলা সবাইকে আশ্রয় দেবে।’’ তাঁর অভিযোগ, নোটবন্দি করে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষদের বিপাকে ফেলেছেন। এনআরসিতে অসমের ৪০ লক্ষ মানুষ বিপাকে। পাহাড়ে আগুন জ্বালানোর পেছনেও মোদীর ইন্ধন রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

মোদীর বিরুদ্ধে হঠকারিতার অভিযোগ তুলে তাঁর মন্তব্য, ‘‘হঠাৎ মনে হল নোটবন্দি করে দিলেন। হঠাৎ মনে হল জিএসটি করে দিলেন। হঠাৎ মনে হল তিনি চৌকিদার হয়ে গেলেন। হঠাৎ মনে হল উনি চাওয়ালা হয়ে গেলেন। আবার একটা সিনেমাও বানিয়েছে। কেন লোকে দেখবেন ওঁকে?’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এর পরেই তিনি তুলে ধরেন গত ৫ বছরে বেকারত্বের প্রসঙ্গ। বিএসএনএল কর্মীদের বেতন না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তাঁর অভিযোগ, এই সরকারের আমলে ২ কোটি মানুষের কাজ গিয়েছে। অথচ ক্ষমতায় আসার সময় এরাই বলেছিল, কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দিয়ে দেবে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তাহলে কত বড় ধুরন্দর ভাবুন। ভোট নিয়েছেন ধাপ্পা দিয়ে। ভোটের পরে এখন আবার চাওয়ালা চৌকিদার সেজেছেন।”

এ বার কোচবিহারে তৃণমূলের প্রার্থী পরেশ অধিকারী। এদিন সভার শুরুতেই পরেশবাবুর সম্পর্কে বলতে গিয়ে মমতা জানান, তিনি দীর্ঘদিনের বামপন্থী আন্দোলনের নেতা। কিন্তু বামপন্থীদের বেশিরভাগই সাম্প্রদায়িক দলে চলে গিয়েছেন। সেটা বুঝতে পেরেই পরেশবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

অন্য দিকে, এ দিনই কোচবিহারে পৌঁছন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে চাপে রাখতে উত্তরবঙ্গে ঘাঁটি গেড়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE