Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Speaker

বিলে রাজ্যপালের সম্মতি না মেলায় বিধানসভা স্থগিত করলেন স্পিকার, পাল্টা কড়া বিবৃতি রাজভবনের

যে কোনও বিল পাশ বিধানসভায় হওয়ার পরে রাজ্যপালকে দিয়ে তাতে সই করাতে হয় ঠিকই, কিন্তু যে সব বিলের সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত থাকে, সেই বিল বিধানসভায় পেশ করার আগেও রাজ্যপালকে দিয়ে সই করিয়ে নিতে হয়।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৩২
Share: Save:

ফের রাজভবনের সঙ্গে সংঘাত রাজ্য সরকারের। এ বার অবশ্য নবান্নের সঙ্গে নয়, সংঘাত বিধানসভার সঙ্গে। তার জেরে বিরল ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। রাজ্যপালের সম্মতি না মেলায় আটকে রয়েছে বিল, তাই স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে বিধানসভার অধিবেশন। জানালেন স্পিকার। পাল্টা বিবৃতিতে রাজভবন জানাল, রাজ্যপাল কিছুই আটকাননি, রাজ্য প্রশাসনের গাফিলতিতেই বিলগুলো আটকে রয়েছে। মঙ্গলবার স্পিকারের মন্তব্যের সমালোচনাও করা হয়েছে রাজভবনের বিবৃতিতে।

যে কোনও বিল পাশ বিধানসভায় হওয়ার পরে রাজ্যপালকে দিয়ে তাতে সই করাতে হয় ঠিকই, কিন্তু যে সব বিলের সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত থাকে, সেই বিল বিধানসভায় পেশ করার আগেও রাজ্যপালকে দিয়ে সই করিয়ে নিতে হয়। এমনই একাধিক বিল রাজভবনে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে সব বিলে রাজ্যপালের সম্মতি মেলেনি বলে সোমবার বিধানসভায় জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দু’দিনে অর্থাৎ মঙ্গলবার ও বুধবারে ওই বিলগুলোই পেশ হওয়ার কথা ছিল বলে তিনি জানান। কিন্তু বিল রাজভবন থেকে বিধানসভায় না ফেরায় দু’দিনের জন্য অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে বলে স্পিকার ঘোষণা করেন।

স্পিকারের এই ঘোষণা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে। রাজ্যপালের সম্মতি না মেলায় বিল পেশ করা যাচ্ছে না এবং তার জেরে অধিবেশন স্থগিত হয়ে যাচ্ছে— এমন ঘটনা স্মরণাতীত কালে ঘটেনি বলেই জানাতে থাকেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আরও পড়ুন: তরুণীকে ধর্ষণের পর গুলি করে, পুড়িয়ে খুন! এক সপ্তাহের মধ্যেই তেলঙ্গানার ছায়া বক্সারে

কোন কোন বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে, সে সব নিয়ে সরকারের কোনও মন্ত্রী এ দিন প্রথমে মুখ খুলতে চাননি। স্পিকার যেটুকু বলেছিলেন, তার বাইরে কোনও বিশদ তথ্য বিধানসভার সচিবালয়ও দিতে চায়নি। কিন্তু রাজ্যপালের দিকে আঙুল তুলে স্পিকার অধিবেশন স্থগিত করার কথা ঘোষণা করায় রাজভবনও আর থেমে থাকেনি। সন্ধ্যায় কড়া ভাষায় বিবৃতি প্রকাশ করে রাজভবন। রাজ্য প্রশাসন সহযোগিতা না করার ফলেই বিলে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে পারেননি বলে সে বিবৃতিতে জানানো হয়।

রাজভবনের বিবৃতিতেই জানা যায় কোন কোন বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। সে বিবৃতিতে প্রথমেই লেখা হয়েছে যে, গণপ্রহার রোধ বিল বিধানসভায় পাশ করানো হয়েছিল যে প্রক্রিয়ায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তার প্রেক্ষিতে বিধানসভার কাছে রাজ্যপাল যে তথ্য চেয়েছিলেন, সে তথ্য এখনও মেলেনি বলে রাজভবন জানিয়েছে।

এ ছাড়া ‘পশ্চিমবঙ্গ তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশন বিল’, ‘পশ্চিমবঙ্গ লিফ্ট, এসক্যালেটর, ট্র্যাভেলেটর বিল’, ‘পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল’, ‘হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় বিল’ ইত্যাদির কথা রাজভবনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিটি বিলের ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দফতরের শীর্ষকর্তাদের কাছ থেকে বিলগুলি সম্পর্কে কিছু বিশদ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে রাজভবন জানিয়েছে। সে ব্যাখ্যা এখনও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি দেয়নি, তাই রাজ্যপালও সম্মতি দিতে পারেননি। বিবৃতিতে এ কথাই লিখেছে রাজভবন।

আরও পড়ুন: ডালের মধ্যে মরা ইঁদুর! অসুস্থ ৯ পড়ুয়া, উত্তরপ্রদেশে প্রশ্নের মুখে মিড ডে মিল

স্পিকার এ দিন বিধানসভায় যা বলেছেন, তারও সমালোচনা করা হয়েছে রাজভবনের বিবৃতিতে। স্পিকার যা বলেছেন, তাকে ‘তথ্যগত ভাবে অসমর্থনীয়’ আখ্যা দিয়েছে রাজভবন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE