‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তাকে কেন্দ্র করে চলা ‘যুদ্ধে’ মূর্তিমান ত্রাস হয়ে পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিগুলিতে আছড়ে পড়েছে ভারতের ‘ব্রহ্মস’ সুপারসনিক ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র। চিনের তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা এয়ার ডিফেন্স থাকা সত্ত্বেও একে আটকাতে ব্যর্থ হয় ইসলামাবাদের সেনা। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু কারণ। তাঁদের দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি নয়াদিল্লির এই ক্ষেপণাস্ত্রটির সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে বিশ্ব ফুটবলের দুই কিংবদন্তী, লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, ‘ব্রহ্মস’ লঞ্চ হওয়ার পর দুরন্ত গতিতে উড়ে গিয়ে নিশানার কাছে পৌঁছে এঁকেবেঁকে দৌড়তে শুরু করে। ঠিক যেমনটা পেনাল্টি বক্সের কাছে বল পেয়ে মেসি বা রোনাল্ডো করে থাকেন। বিপক্ষ দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের ড্রিবলিংয়ের জাদুতে বোকা বানিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন তাঁরা। সেই কারণে জ়োনাল মার্কিং করেও আটকানো যায় না তাঁদের। ঠিক এই একই যুক্তিতে যাবতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং রেডারকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয় ভারতের ‘ব্রহ্মস’।
বিশ্লেষকদের দাবি, লক্ষ্যে আঘাত হানার আগে শেষ ৩০-৪০ কিলোমিটার এঁকেবেঁকে দৌড়তে থাকে নয়াদিল্লি ও মস্কোর যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্র। এর জন্য ‘ব্রহ্মস’-এ ব্যবহার করা হয়েছে হাই জি ল্যাটারেল ম্যানুভার প্রযুক্তি। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি সুনির্দিষ্ট অ্যালগরিদম সিস্টেম। এই প্রযুক্তির জন্যেই লক্ষ্যের খুব কাছে পৌঁছে নানা রকম ভাবে বাঁক নিয়ে সেখানে সঠিক ভাবে আঘাত হানতে পারে পাকিস্তানের বুকে আতঙ্ক ধরানো ‘ব্রহ্মস’ ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ‘গ্লোবাল পজ়িশনিং সিস্টেম’ বা জিপিএস ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে তারা পুরোপুরি আমেরিকার উপর নির্ভরশীল। ‘ব্রহ্মস’-এর কিন্তু সেই বালাই নেই। এ দেশের বিজ্ঞানীদের তৈরি নিজস্ব দিক নির্ণয়কারী ব্যবস্থা ‘নেভিগেশন উইথ ইন্ডিয়ান কনস্টেলশ’ বা নাভি দ্বারা লক্ষ্য চিনে নেয় এই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। সে দিক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে ভারত।
আরও পড়ুন:
‘ব্রহ্মস’-এর উপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ এখনও বন্ধ হয়ে যায়নি। এর গতিবেগ বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন এ দেশের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। সুপারসনিক ‘ব্রহ্মস’কে হাইপারসনিক, অর্থাৎ শব্দের পাঁচ গুণের চেয়ে গতিশীল করার পরিকল্পনা রয়েছে নয়াদিল্লির। এতে খুব দ্রুত সাফল্য আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।