ফের ফিরতে চলেছে সিডি কিংবা ডিভিডি! বিপুল স্টোরেজ নিয়ে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে হারিয়ে যাওয়া ওই দুই হার্ডঅয়্যারের। সৌজন্যে চিনা গবেষণা। মান্দারিনভাষী প্রযুক্তিবিদেরা এমন একটি ডিভিডি তৈরি করেছেন যার স্টোরেজ ক্ষমতা ১.৬ পেটাবাইট। অর্থাৎ, সাধারণ একটি ডিভিডির থেকে ১০ হাজার গুণ বেশি ডেটা সঞ্চয় করতে পারবে নতুন প্রজন্মের ওই হার্ডঅয়্যার। ফলে ডিভিডি আকারের এক একটি ডিস্কে ১০ লক্ষ সিনেমা ধরবে বলে দাবি করেছে বেজিং।
গত শতাব্দীর ’৯০-এর দশকের শেষ দিকে কম্পিউটারের ডেটা স্টোর করার জন্য বাজারে আসে সিডি। পরবর্তী কালে আরও তথ্য সঞ্চয় করতে ডিভিডি তৈরি করেন প্রযুক্তিবিদেরা। কিন্তু, পেনড্রাইভ ও ক্লাউডের মতো তথ্য স্টোর করার ড্রাইভ তৈরি হতেই ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা কমতে শুরু করে সিডি ও ডিভিডির। ফলে খুব দ্রুত বাজার থেকে গায়েব হয়ে যায় সেগুলি।
সিডি ও ডিভিডি ভ্যানিশ হয়ে যাওয়ায় এগুলি চালানোর হার্ডঅয়্যারগুলির যন্ত্রের প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়েছিল। এর জেরে অচিরেই কম্পিউটার ও ল্যাপটপ থেকে সিডি ও ডিভিডি প্লেয়ারগুলি খুলে ফেলতে শুরু করে এগুলির নির্মাণকারী সংস্থা। ঠিক এই সময়েই ডিভিডির পুনর্জন্ম দিয়েছেন চিনের প্রযুক্তিবিদেরা। হুবহু একই রকমের দেখতে তাঁরা যে হার্ডঅয়্যারটি তৈরি করেছেন তাতে অনায়াসেই রাখা যাবে ৫৮০ কোটি ওয়েবপেজ।
ডেটা স্টোরেজের সবচেয়ে ছোট সূচকের নাম গিগাবাইট। এর ১০২৪ ইউনিট সমান ১ টেরাবাইট। আবার ১০২৪ টেরাবাইটকে বলা হয় ১ পেটাবাইট। আর ১০২৪ পেটাবাইটকে ১ এক্সাবিট বলে উল্লেখ করে থাকেন প্রযুক্তিবিদেরা। এই হিসাবে ডিভিডি আকারের বেজিঙের তৈরি নতুন স্টোরেজ ডিভাইসকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলছেন বিশ্বের তাবড় কম্পিউটার বিশ্লেষকদের একাংশ।
সংশ্লিষ্ট হার্ডঅয়্যারটির কর্মপদ্ধতি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেছেন চিনা প্রযুক্তিবিদেরা। এটি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়, সাংহাই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাংহাই ইনস্টিটিউট অফ অপটিক্স অ্যান্ড ফাইন মেকানিক্সের। নতুন হার্ডঅয়্যারটির একটি প্রোটোটাইপ বা নমুনা তৈরি করেছেন ড্রাগনভূমির প্রযুক্তিবিদেরা। এর বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন কিন্তু মোটেই সহজ নয়।
আরও পড়ুন:
ডিভিডি আকারের দেখতে সংশ্লিষ্ট স্টোরেজ ডিভাইসটি ফের বাজারে ফিরলে কম্পিউটার ও ল্যাপটপের হার্ডঅয়্যারে আনতে হবে বড় বদল। পাশাপাশি, কোয়ান্টাম ডেটা স্টোরেজ এবং ডিএনএ ডেটা স্টোরেজের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে পশ্চিমি দুনিয়া। এতে চিনা হার্ডঅয়্যারটির থেকে অনেক বেশি তথ্য বা ডেটা সুরক্ষিত রাখার সুযোগ রয়েছে। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে শেষ পর্যন্ত নতুন রূপে ডিভিডি ফেরে কি না, তার জবাব দেবে সময়।